(বাঁ দিকে) স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।
রাত পোহালেই বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী চার জন বিধায়কের শপথগ্রহণ। সোমবার বিধানসভায় নিজের ঘরে বসে এমনটাই ঘোষণা করেছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই দিন রাতেই রাজভবন আবারও নাম না করে দুই বিধায়কের শপথগ্রহণকে অসংবিধানিক অ্যাখ্যা দিয়ে ৫০০ টাকা করে জরিমানার কথা উল্লেখ করেছে। তাই মঙ্গলবার চার বিধায়কের শপথগ্রহণের আগে আরও বিতর্কের পারদ চড়তে শুরু করেছে।
রাজভবনের এক্স হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে, ‘‘রাজভবনের তরফে ডেপুটি সেক্রেটারি স্পিকারের অফিসকে শপথগ্রহণ সংক্রান্ত সাংবিধানিক বিধান এবং শপথগ্রহণের সাংবিধানিক যোগ্যতার কথা জানিয়েছেন। যাঁরা সংবিধান মেনে শপথগ্রহণ করেননি, তাঁরা অধিবেশনে যোগদান করলে জরিমানা বাধ্যতামূলক হবে।’’ সঙ্গে আইনের কোন ধারায় রাজভবন এমন কথা স্পিকারকে জানিয়েছেন, তাও এক্স হ্যান্ডলে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। ১৯৩ ধারায় আইনসভার কোনও সদস্য সাংবিধানিক রীতি মেনে শপথ না নিয়ে অধিবেশনে অংশগ্রহণ করলে, যে ক’দিন তিনি অধিবেশনে যোগদান করবেন বা ভোটাভুটিতে অংশ নেবেন, সেই ক’দিনের জন্য সংশ্লিষ্ট সদস্যকে দিনপিছু ৫০০ টাকা করে জরিমানা দিতে হবে।
ঘটনাচক্রে সোমবারই বরাহনগরের বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভগবানগোলার বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকারকে চিঠি পাঠিয়েছে রাজভবন। দুই বিধায়ককে চিঠি পাঠিয়ে রাজভবন জানিয়েছে, তাঁদের শপথ অসংবিধানিক ভাবে হয়েছে। সায়ন্তিকা এবং রেয়াত বিধানসভার ভোটাভুটিতে অংশ নিলে কী শাস্তি হতে পারে তা-ও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। রাজ্যপাল বোস মোট ৩৭টি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, স্পিকারের এক্তিয়ার নেই রাজ্যপালকে এড়িয়ে শপথবাক্য পাঠ করানোর। কে তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন, চিঠিতে তা সায়ন্তিকা-রেয়াতের কাছে জানতে চেয়েছেন বোস। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী যদি ডেপুটি স্পিকার শপথবাক্য পাঠ না করান, তবে তা অসাংবিধানিক।
এ ক্ষেত্রে দুই বিধায়কের ৫০০ টাকা করে জরিমানা হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে চিঠিতে। স্পিকারকে বিষয়টি জানাবেন বলে জানিয়েছেন সায়ন্তিকা-রেয়াত। ৪ জুন উপনির্বাচনে বরাহনগর থেকে জয়ী সায়ন্তিকা এবং ভগবানগোলা কেন্দ্রে জয়ী রেয়াত। কিন্তু রাজভবন-বিধানসভার দড়ি টানাটানিতে তাঁদের শপথগ্রহণ প্রায় এক মাস পিছিয়ে যায়। গত ৫ জুলাই বিধানসভার এক দিনের অধিবেশন ডেকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান। যদিও রাজ্যপাল বোস শপথবাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু অধিবেশনে তিনি শপথগ্রহণ করাতে অসম্মত হলে, শপথগ্রহণ করান স্পিকার। সম্প্রতি চার বিধায়কের শপথগ্রহণের জন্য বিধানসভার সচিবালয় রাজভবনকে চিঠি দিলে, পাল্টা রাজভবন চিঠি দিয়ে জানতে চায়, দুই বিধায়কের শপথগ্রহণ নিয়ে তাঁর সাংবিধানিক নির্দেশ পালন করা হয়েছিল কি না।
সোমবার রাজভবন থেকে কোনও জবাব আসেনি জানিয়ে মঙ্গলবার চার বিধায়কের শপথগ্রহণের কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন স্পিকার। আর সোমবার রাতেই রাজভবনে বিবৃতি প্রকাশ করায়, চার বিধায়কের শপথগ্রহণে কোনও জটিলতা দেখা দেয় কি না, সে দিকেই তাকিয়ে বাংলার রাজনীতির কারবারিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy