Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

কালীপুজোর ছন্দ নষ্ট করতে পারে বৃষ্টি

দুর্গাপুজোর আনন্দ অনেকটাই মাটি করেছে বৃষ্টি। ঘূর্ণাবর্তের জেরে চার দিনই বৃষ্টি হয়েছে। এ বার কালীপুজোতেও খলনায়ক হতে চলেছে বৃষ্টি। বঙ্গোপসাগরে নির্মীয়মাণ নিম্নচাপের গতিপ্রকৃতি দেখে এমনই আশঙ্কা করছেন আবহবিদেরা।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৩৬
Share: Save:

দুর্গাপুজোর পরে এ বার কালীপুজোও!

দুর্গাপুজোর আনন্দ অনেকটাই মাটি করেছে বৃষ্টি। ঘূর্ণাবর্তের জেরে চার দিনই বৃষ্টি হয়েছে। এ বার কালীপুজোতেও খলনায়ক হতে চলেছে বৃষ্টি। বঙ্গোপসাগরে নির্মীয়মাণ নিম্নচাপের গতিপ্রকৃতি দেখে এমনই আশঙ্কা করছেন আবহবিদেরা।

উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, বঙ্গোপসাগরে দানা বাঁধতে থাকা নিম্নচাপটির আশপাশের বায়ুপ্রবাহের গতিপ্রকৃতি এমনই, যে তা বুধবার থেকে ওড়িশা, অন্ধ্র এবং এ রাজ্যের উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি নামাতে পারে। ওড়িশা এবং অন্ধ্রে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস ইতিমধ্যেই রয়েছে। তৈরি হতে থাকা ওই নিম্নচাপটি এখন যে অবস্থায় রয়েছে, তাতে তার অন্ধ্রপ্রদেশ-ওড়িশা উপকূল দিয়ে স্থলভূমিতে ঢোকার কথা। সেই ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে দুর্যোগের কোনও আশঙ্কা থাকবে না। কিন্তু নিম্নচাপ যত ওড়িশার দিকে সরবে, ততই এ রাজ্যের বৃষ্টি বাড়তে থাকবে।

আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, প্রত্যেক বারই বছরের এই সময়টায় বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরির অনুকূল পরিস্থিতি থাকে। ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘূর্ণাবর্ত, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতেই থাকে। কোনও কোনও ঘূর্ণিঝড় আবার সুপার সাইক্লোনের চেহারা নেয়। সাধারণত কোনও নিম্নচাপ সমুদ্রের উপরে থাকার সময় তার শক্তি বাড়তেই থাকে। অনুকূল পরিস্থিতি পেলে নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপ, সুগভীর নিম্নচাপের ধাপ পেরিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।

গত সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরের উপরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপের অবস্থাতেই স্থলভূমিতে ঢুকে পড়ায় তার জেরে দুর্যোগ চলেছে মাত্র দু’দিন। কারণ, স্থলভূমিতে ঢুকেই তা শক্তি হারাতে শুরু করেছে। গভীর নিম্নচাপটি এক দিন ছিল কলকাতার উপরে। সে দিন কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকা ভেসেছে। পরের দিন তা চলে গিয়েছে ঝাড়খণ্ডে। যার জেরে ভুগেছে পশ্চিমের জেলাগুলি।

তবে নির্মীয়মাণ নিম্নচাপটি শেষ পর্যন্ত কোন অবস্থায় গিয়ে থামবে, তা নিয়ে আবহবিদদের মধ্যে জল্পনা রয়েছে। তাই সদ্যোজাতের গতিবিধির উপরে নজর রাখছেন দিল্লির মৌসম ভবনের বিজ্ঞানীরা।

ফের বৃষ্টির পূর্বাভাসে চিন্তিত রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরও। রাজ্যের এক স্বাস্থ্য-কর্তার মন্তব্য, এ বার জুলাই মাস থেকে টানা বৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। টানা বৃষ্টি হলে তবু বাঁচোয়া। কারণ, মশার আঁতুড় সব ধুয়ে যায়। কিন্তু এক বার বৃষ্টি হয়ে তার পর কমে গেলেই বিপদ বাড়ে। বিভিন্ন এলাকায় যে জল জমে থাকে সেখানে ডিম পাড়ে মশা। আর ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ে। পুজোর চার দিন টানা বৃষ্টির পরে তাই হঠাৎই কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল ডেঙ্গি এবং অন্য নানা ধরনের ভাইরাল জ্বর। ঠিক একই ভাবে গত সপ্তাহের বৃষ্টির পরে নানা জায়গায় জমে গিয়েছে পরিষ্কার জল। আর সেখানে মশা ডিম পাড়ছে।

কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের এক অফিসারের মন্তব্য, ‘‘আগে ডেঙ্গির জীবাণুবাহী এডিস মশা শুধু চার দেওয়ালের মধ্যে পরিষ্কার জলে ডিম পাড়ত। কিন্তু সেই মশার স্বভাব এখন পাল্টেছে। ম্যালেরিয়াবাহী অ্যানোফিলিস মশার মতো এডিস এখন ডিম পাড়ছে ঘরের বাইরে জমা পরিষ্কার জলে।’’ আর এই বিষয়টিই চিন্তা বাড়িয়ে দিচ্ছে পুর-কর্তাদের।

ঘনঘন নিম্নচাপ, ঘূর্ণাবর্তের জেরে বর্ষার বিদায় নেওয়ার সময় শুধুই বদলে যাচ্ছে। নির্ঘণ্ট মেনে চললে বর্ষার এত দিনে বিদায় নেওয়ার কথা। কিন্তু ঘূর্ণাবর্তের জেরে ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে তার বিদায়বেলা। শেষ পর্যন্ত বর্ষা বিদায় নিতে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পেরিয়ে যাবে কি না, সেই গবেষণা চলছে হাওয়া অফিসে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy