—ফাইল চিত্র।
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ ঘনীভূত হয়েছে। তার প্রভাবেই জেলায় জেলায় শুরু হয়ে গিয়েছে বৃষ্টির দাপট। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে শুক্রবার রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। শনিবার সকালে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে বেশ কয়েকটি এলাকায়। সকাল থেকে কলকাতার আকাশের মুখও ভার। কোথাও ঝিরঝিরে বৃষ্টি, কোথাও ঝমঝমিয়ে চলছে বর্ষণ। বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন এলাকায় জলও জমে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গেও বৃষ্টি চলছে। আগামী চার দিন উত্তরের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস।
হুগলির কোদালিয়া ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বেনাভারুই গ্রাম এবং মগরা-ত্রিবেণী এলাকায় শনিবার আচমকা ঘূর্ণিঝড় হয়। গঙ্গার উপরে পাক খেতে দেখা যায় ধুলোর রাশিকে। ত্রিবেণী শ্মশান ঘাটের চাল উড়ে গিয়েছে ঝড়ের ধাক্কায়। আরও বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চাষের ক্ষেতেও বিস্তর ক্ষতি হয়েছে। চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।
বৃষ্টির প্রাবল্যের পূর্বাভাস দিয়ে দক্ষিণবঙ্গের চারটি এবং উত্তরবঙ্গের দু’টি জেলায় আলিপুর আবহাওয়া দফতর কমলা সতর্কতা জারি করেছে। শনিবার পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়ায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি (৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার) হতে পারে। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
দার্জিলিঙের পাহাড় এবং সমতলে শনিবার ভোররাত থেকেই বৃষ্টি চলছে। কোথাও হালকা ঝিরঝিরে বৃষ্টি, কোথাও বিক্ষিপ্ত ভাবে মাঝারি বৃষ্টিতে ভিজছে পাহাড়। আগামী কয়েক দিনে বৃষ্টির দাপট বৃদ্ধি পেতে পারে। টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন কোচবিহার শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা। সেখানে শনিবার ভোর রাত থেকে মুষলধারে বৃষ্টি চলছে বলে খবর। উত্তরবঙ্গে গত কয়েক দিন বৃষ্টি হয়নি। বরং গরমে হাঁসফাঁস করছিলেন মানুষ। মালদহ, উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো জেলাগুলিতে বৃষ্টিতে ফিরেছে কাঙ্ক্ষিত স্বস্তি।
বৃষ্টি ডেকে এনেছে বিপদও। বীরভূমে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে ময়ূরাক্ষী এবং অজয় নদের জল। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ফেরিঘাট ভেঙে পড়েছে, ব্যাহত হয়েছে পরিষেবা। বাঁকুড়ায় শুক্রবার বিকেল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। শনিবার ঘটে গিয়েছে মর্মান্তিক ঘটনা। বিষ্ণুপুর থানার বোড়ামারা গ্রামে মাটির দেওয়াল ভেঙে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বৃষ্টিতে নরম হয়ে যাওয়ার কারণেই মাটির দেওয়াল ধসে পড়ে। হুগলির উত্তরপাড়ায় ঝড়বৃষ্টির প্রভাবে একটি বিপজ্জনক বাড়ির একাংশ ভেঙে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
বৃষ্টিতে জেলায় জেলায় চাষের ক্ষতি হয়েছে। হুগলির পাশাপাশি, পূর্ব মেদিনীপুরে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে সব্জি, ফুল এবং ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃষ্টিতে কাহিল দুই ২৪ পরগনাও। টানা বৃষ্টিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর, গড়িয়া, বারুইপুর, জয়নগর, ডায়মন্ড হারবার, বজবজ, মহেশতলার রাস্তা জলমগ্ন। মানুষ পারতপক্ষে বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন না। রাস্তাঘাট তাই অন্যান্য দিনের তুলনায় ফাঁকা। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া নিয়ে সতর্ক সুন্দরবন প্রশাসনও। ইতিমধ্যে সেখানে একাধিক নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত সুস্পষ্ট নিম্নচাপের আকার নিয়েছে। সেটি ক্রমশ ওড়িশা এবং বাংলার উপকূলের দিকে অগ্রসর হবে। এর ফলে সাগরের উপরে ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে। সমুদ্র উত্তাল থাকায় মৎস্যজীবীদের আগামী কয়েক দিন সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy