পশ্চিমবঙ্গে ট্রেনটিকে ঘিরে বিতর্ক আগেই অস্বস্তিতে ফেলেছে রেলকর্তাদের। ফাইল চিত্র।
বন্দে ভারত এক্সপ্রেস যেমন ছুটছে, তেমনই ছুটবে। তবে ওই ট্রেন নিয়ে বিতর্ক এড়াতে এ রাজ্যের রেল আধিকারিকদের কার্যত মুখে কুলুপ আঁটার নির্দেশ দিয়েছে রেল ভবন। কেন্দ্র যে-ট্রেনটিকে সরকারের গতিশীলতার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরতে মরিয়া, তাকে নিয়ে নেতিবাচক প্রচার কার্যত এড়াতে চাইছে রেল।
হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত পুরো পথে পরিকাঠামোর উপযুক্ত বন্দোবস্ত করার আগেই বঙ্গে তড়িঘড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালু করার উদ্দেশ্য নিয়ে নানা সন্দিগ্ধ প্রশ্ন উঠছিল। শুরু হয়েছিল বিতর্ক। সেই প্রশ্ন ও বিতর্ক বাড়ে ওই ট্রেনে ঢিল ছোড়ার কয়েকটি ঘটনার পরে। কিন্তু বন্দে ভারত নিয়ে অনর্থক প্রচার চাইছে না রেল মন্ত্রক। সারা দেশে সরকারের সাফল্যের মুখ হিসেবে যে-ট্রেনকে তুলে ধরা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে তাকে ঘিরে বিতর্ক আগেই অস্বস্তিতে ফেলেছে রেলকর্তাদের। তাই ওই নতুন ট্রেনের যাত্রী-পরিষেবা নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ থেকে শুরু করে পাথর ছোড়ার ঘটনা— সবই কার্যত এড়িয়ে যাচ্ছেন রেলকর্তারা।
গত ডিসেম্বরে রাজ্যে চালু হওয়া বন্দে ভারত উন্নত প্রযুক্তির ট্রেন হলেও পরিষেবা ও সময়ানুবর্তিতার ক্ষেত্রে নতুন কোনও ‘চমক’ দিতে পারেনি। উল্টে খাবার এবং সার্বিক পরিষেবা নিয়ে সমাজমাধ্যমে কার্যত নেতিবাচক প্রচারের ঝড় রেলকর্তাদের হতাশ করেছে। সেই সঙ্গে পাথর ছোড়ার ঘটনায় যে রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়িরও বিরূপ প্রভাব পড়েছে, তা মেনে নিচ্ছেন রেলকর্তারা। এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘ট্রেনে পাথর ছোড়ার প্রবণতা একটা সামাজিক ব্যাধি। অপরাধ হিসেবে এর মোকাবিলা করার পাশাপাশি স্থানীয় স্তরে এই বিষয়ে সচেতনতাই ওই প্রবণতা রুখতে পারে।’’ ওই ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনায় রাজনৈতিক তরজাও রয়েছে বঙ্গে। এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনা অনেক জায়গাতেই ঘটে। সেই সব ক্ষেত্রে অপরাধীদের চিহ্নিত করতে পুলিশ-আরপিএফ সমন্বয় ছাড়াও বিশেষ প্রচারে কাজ হয়। কিন্তু পাথর ছোড়ার ঘটনা বার বার সংবাদমাধ্যমে আলোচিত হলে গুরুত্ব পাওয়ার নেশা ওই প্রবণতায় ইন্ধন জোগাতে পারে।’’
রেল সূত্রের খবর, বন্দে ভারত ছাড়াও অন্যান্য ট্রেনে পাথর ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। ২০২২ সালে দেশে চলন্ত ট্রেনে পাথর ছোড়ার ১৫০৩টি ঘটনা ঘটেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৪৮৮ জনকে। ২০১৮ সালে প্রথম বন্দে ভারত চালু হওয়ার পরে প্রয়াগরাজ শাখায় পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটেছিল। দিল্লি-আগরা শাখায় ওই ট্রেনের মহড়া চলাকালীন মথুরায় একই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। পরে দিল্লির শকুরবস্তি এলাকাতেও পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল। আপাতত পরিষেবা দিয়ে যাত্রীদের সন্তুষ্ট করার কাজেই মন দিচ্ছেন রেল-কর্তৃপক্ষ। এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘এমন একটা ট্রেন নিয়ে অহেতুক বিতর্ক কাম্য নয়। তার পরিষেবা উন্নত করা গুরুত্বপূর্ণ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy