ছবি :সংগৃহীত
বহরমপুর রেল স্টেশনে বসতে চলেছে চলমান সিঁড়ি।
বহরমপুরের সাংসদ তথা প্রাক্তন রেল দফতরের প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর অনুরোধে ওই চলমান সিঁড়ি বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ব রেলওয়ে দফতর। সেই মতো বহরমপুর স্টেশনের ২ ও ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ওই চলমান সিঁড়ি বসবে বলে রেল দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
সম্প্রতি ওই চলমান সিঁড়ির বসানোর ব্যাপারটি সরজমিনে খতিয়ে দেখতে পূর্ব রেলের এডিআরএম-সহ পদস্থ কর্তারা বহরমপুরে এসেছিলেন। সেখানেই বহরমপুর স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক-ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বৈঠক করে নভেম্বরের মধ্যে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে চলমান সিঁড়ি বসানোর নির্দেশ এডিআরএম দেন বলে জানা গিয়েছে।
বহরমপুরের নাগরিকদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল ওই চলমান সিঁড়ি বসানোর। সাধারণ রেলযাত্রী থেকে নিত্যযাত্রী সংগঠনের সদস্যরাও বিভিন্ন সময়ে ওই দাবি জানিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ওই সিদ্ধান্ত হওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলেছে তাঁদের। বহরমপুর প্রোগ্রেসিভ রেলওয়ে যাত্রী সেবা সমিতির সভাপতি সোনালী গুপ্ত বলছেন “আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সব পক্ষকেই সাধুবাদ জানাচ্ছি।’’ কেন চলমান সিঁড়ি গড়ে তোলার প্রয়োজন হচ্ছে? রেল দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব রেলের শিয়ালদহ শাখার লালগোলা-শিয়ালদহ রুটে ডবল লাইন হওয়ার ফলে আগের তুলনায় রেলের যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। সেই সঙ্গে যাত্রী স্বার্থে বেড়েছে ট্রেনের সংখ্যাও। কিন্তু কয়েক বছর ধরে শিয়ালদহমুখী সব ট্রেন বহরমপুরের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম দিয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক হওয়ায় বিপাকে পড়েন যাত্রীরা, বিশেষ করে বয়স্ক এবং হাঁটু বা কোমরের সমস্যা রয়েছে এমন যাত্রীরা। কারণ বহরমপুর স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম দিয়ে ফ্লাইওভার ব্রিজের প্রায় কিছু সিঁড়ি ভেঙে উঠে ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাতায়াত করতে অসুবিধের মুখে পড়েন বয়স্ক পুরুষ-মহিলা থেকে মহিলারাও। এত দিন বহরমপুর স্টেশন সংলগ্ন চুঁয়াপুর রেলগেটের পাশের রাস্তা দিয়ে টোটোতে করে এসে ২ নম্বর প্লাটফর্মে পৌঁছতেন শিয়ালদহমুখী যাত্রীরা। বহরমপুর স্টেশনে ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের কাজ শুরু হতেই বন্ধ হয়ে যায় সেই রাস্তাটুকুও। ইতিমধ্যে পুরনো ফ্লাইওভার ব্রিজের উপর থেকে চাপ কমাতে দ্বিতীয় একটি ফ্লাইওভারের কাজ শুরু করেছে রেল দফতর।
রেল দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলছেন, ‘‘সম্প্রতি শিয়ালদহ পূর্বরেলের ডিআরএম প্রভাস দানসানার সঙ্গে বৈঠকে বহরমপুর স্টেশনে চলমান সিঁড়ি অথবা লিফট বসানোর জন্য বহরমপুর সাংসদের অনুরোধের কথা জানান রেলওয়ে হেরিটেজ কমিটির সদস্য অতসী চট্টোপাধ্যায়। সেই অনুরোধ মেনে নিয়ে দিন দশেক আগে চলমান সিঁড়ির জন্য প্রয়োজনীয় মাপজোকের কাজ শেষ হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব ২ ও ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে চলমান সিঁড়ি বসানোর কাজ শুরু হবে।’’
রেলের হেরিটেজ কমিটির সদস্য অতশী চট্টোপাধ্যায় বলেন “বহরমপুর স্টেশন একটি আদর্শ স্টেশন হিসেবে ঘোষণা হয়েছে। ফলে বিভিন্ন আধুনিক সুবিধে স্টেশনে থাকবার কথা। কিন্তু বহরমপুর স্টেশন সংস্কারের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করেছিল ইউপিএ সরকারের রেল মন্ত্রক, সেখানে চলমান সিঁড়ির কথা বলা ছিল না। এখন বহরমপুরের সাংসদ চলমান সিঁড়ির প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরে তিনি তাঁর সাংসদ এলাকার উন্নয়ন তহবিল থেকে দু-দফায় পাঁচ কোটি টাকা দিয়েছেন। প্রয়োজনে আরও অর্থ দেওয়ার কথাও তিনি রেল দফতরকে জানিয়েছেন।’’ বহরমপুর ক্লথ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন “চলমান সিঁড়ির সঙ্গে হুইলচেয়ারে বসে প্ল্যাটফর্মে পৌঁছনোর বিষয়টিও ভেবে দেখা দরকার।’’ রেল দফতরের এক কর্তা জানান, রেলেওয়ে হেরিটেজ কমিটির তরফে র্যাম্প গড়ে তোলার অনুরোধ এসেছে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy