রাহুল সিংহ
পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি ‘অপদার্থ, কিছুই করতে পারছে না’ বলে আক্ষেপ করলেন দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ! আইসিসিআর-এ শনিবার দলের একটি কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের সামনে তাঁর এই মন্তব্য নানা প্রশ্ন তুলেছে। অনেকের মতে, রাজ্য নেতৃত্বকে কটাক্ষ করতেই রাহুলবাবু ওই কথা বলেন। দলের অন্য অংশ অবশ্য মনে করে, কেন্দ্রীয় সম্পাদক আসলে কর্মীদের চাঙ্গা করতে চেয়েছেন। ব্যাখ্যা যা-ই হোক, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপির এক শীর্ষ নেতার দলকে ‘অপদার্থ’ বলা রাজনৈতিক তাৎপর্যপূর্ণ বটে!
পঞ্চায়েত ভোটের আগে সংগঠনের সলতে পাকাতে দু’দফায় চার দিনের রাজ্য সফরে আসার কথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের। প্রথম দফায় ৮ এপ্রিল শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে এবং ৯ এপ্রিল কলকাতায় তাঁর সাংগঠনিক বৈঠকের কর্মসূচি আছে। পরের দফায় ১৯-২০ এপ্রিলের মধ্যে এক দিন জনসভা এবং অন্য দিন সাংগঠনিক বৈঠক হবে বলে এ দিন দলের কোর কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে। রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ ওই বৈঠকে ছিলেন।
শাহের সফরসূচি নিয়ে আলোচনার আগেই এ দিন প্রধানমন্ত্রীর জনকল্যাণমূলক প্রকল্প নিয়ে আইসিসিআর-এ কর্মশালা ছিল বিজেপির। যার উদ্দেশ্য ছিল— পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে ওই প্রকল্পগুলির কথা তুলে ধরার জন্য কর্মীদের প্রস্তুত করা। সেখানেই বক্তৃতায় রাহুলবাবু বলেন, ‘‘ত্রিপুরা আমাদের পাশের বাঙালি অধ্যুষিত রাজ্য। সেখানে বিজেপি সরকার গড়ল। কিন্তু তাদের শপথে আমি গেলাম না। কারণ, যে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আদর্শে এই দলের জন্ম, তাঁর জন্মভূমি এই বাংলাতেই আমরা কিছু করতে পারছি না। এত বড় অপদার্থ আমরা! অথচ অন্য রাজ্যগুলি শ্যামাপ্রসাদের পায়ে অঞ্জলি দিচ্ছে। এ যে কী ব্যথা, বলে বোঝাতে পারব না!’’ এরই সূত্র ধরে রাহুলবাবু বলেন, ‘‘এখন একটা সুবর্ণ সুযোগ এসেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলি পঞ্চায়েতে প্রচার করুন। সুযোগটা কাজে লাগান।’’
আরও পড়ুন: ভিডিও বার্তায় অস্তিত্ব প্রমাণে মরিয়া গুরুঙ্গ
ওই সভাতেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পগুলিকেই ‘ছিনতাই’ করে অন্য নাম দিয়ে চালিয়ে কৃতিত্ব নিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার! দিলীপবাবু বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় ১০০টা প্রকল্প ঘোষণা করেছে। কিন্তু সেগুলির নাম বদলে নিজেদের নামে চালানোর চেষ্টা হচ্ছে রাজ্য সরকার। যেমন— বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, দু’টাকা কিলো চালের প্রকল্প। পঞ্চায়েত ভোটে প্রচারপত্র বিলি করে বলব, ওই প্রকল্পগুলো আসলে কেন্দ্রের!’’
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার সব প্রকল্পে আমাদের রাজ্যের বরাদ্দ কমিয়ে দিচ্ছে। তার উপরে আবার ওঁরা বড় বড় কথা বলছেন! বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও প্রকল্পে সারা দেশের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এতে এক-একটা রাজ্য কত পাবে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy