Advertisement
E-Paper

এনএমসির লোগোতে স্থান পেলেন দেববৈদ্য ধন্বন্তরি! কেন দেবতার ছবি, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন

হিন্দু ধর্মে দেবগণের চিকিৎসক বলা হয় ধন্বন্তরিকে। আবার তাঁকে বিষ্ণুর অবতার বলেও মনে করা হয়।পুরাণে ধন্বন্তরিকে আয়ুর্বেদের দেবতা বলা হয়। এনএমসির লোগোতে স্থান পেলেন সেই দেববৈদ্য ধন্বন্তরি!

NMC.

এনএমসি-র লোগো নিয়ে বিতর্ক। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:৪৬
Share
Save

দেববৈদ্য ধন্বন্তরি এ বার জায়গা পেলেন দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায়!

মডার্ন মেডিসিন বা অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা-শিক্ষার সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি)-এর লোগোতে ওই হিন্দু দেবতার ছবি কেন, তা নিয়েই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। গত বছর চিকিৎসা পেশার শুরুতে 'হিপোক্রেটিক ওথ'-র বদলে চরক-শপথ চালুর কথা বলে এমন ভাবেই বিতর্কে জড়িয়েছিল এনএমসি। প্রশ্ন উঠেছিল, গ্রিসের প্রবাদপ্রতিম চিকিৎসক হিপোক্রেটিসের স্মরণে শপথের বদল করে এ দেশে আয়ুর্বেদ চিকিৎসার আদিপুরুষ মহর্ষি চরকের নামে শপথ নেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন নিল এনএমসি।

হিন্দু ধর্মে দেবগণের চিকিৎসক বলা হয় ধন্বন্তরিকে। আবার তাঁকে বিষ্ণুর অবতার বলেও মনে করা হয়। পুরাণে ধন্বন্তরিকে আয়ুর্বেদের দেবতা বলা হয়। দিন কয়েক আগে এনএমসি-র জারি করা একটি নোটিসে ওই লোগোর বিষয়টি বৃহস্পতিবার প্রথম নজরে আসে। সংস্থার ওয়েবসাইটেও দেখা যায় পরিবর্তনটি। ভারতের মতো ধর্ম নিরপেক্ষ দেশে বিজ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত সংস্থায় আচমকা হিন্দু দেবতা কেন, তা নিয়েই প্রশ্ন বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনের। তাদের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসা শাস্ত্রকে গৈরিকীকরণের চেষ্টা চালিয়েছে কেন্দ্র।

চিকিৎসক সংগঠন মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের রাজ্য সম্পাদক বিপ্লব চন্দ্রের দাবি, ‘‘মেডিক্যাল শিক্ষা ধর্মীয় প্রভাবমুক্ত বিজ্ঞানসম্মত হওয়া উচিত। কিন্তু এনএমসির এই পদক্ষেপ ভারতের ধর্ম নিরপেক্ষ চিন্তাধারার উপর আঘাত করেছে।’’

এনএমসি-র অ্যাডভাইজ়রি কাউন্সিলের কোন মিটিংয়ে এই লোগো সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, তা জানতে চেয়ে সংস্থার চেয়ারম্যান বিএন গঙ্গাধরকে চিঠি পাঠিয়েছেন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-এর প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি তথা বর্তমান রাজ্য সম্পাদক, চিকিৎসক-সাংসদ শান্তনু সেন। লোগোর নীচে আবার ইন্ডিয়ার বদলে ভারত লেখা রয়েছে। এই দু’টি পরিবর্তনের বিষয়ে সোচ্চার হয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘লোগোতে হিন্দু দেবতা, দেশের নামের পরিবর্তন পূর্ণ গৈরিকীকরণের প্রচেষ্টা এবং বিজ্ঞান ও মানবতার চূড়ান্ত পরিপন্থী।’’

ধন্বন্তরির ছবি আসলে চিকিৎসা বিজ্ঞানকে কয়েক হাজার বছর পিছিয়ে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ বলে অভিযোগ করছেন সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাসও। সুডেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার তরফেও এই লোগো প্রত্যাহারের ডাক দেওয়া হয়েছে। তবে বিজেপি নেতা চিকিৎসক ইন্দ্রনীল খান বলেন, ‘‘পশ্চিমি চিকিৎসাশাস্ত্রের বইতে সুশ্রুতের ছবি রয়েছে। তাতে তো চিকিৎসা শিক্ষার পরিবর্তন হচ্ছে না। তাই সনাতন সংস্কৃতির ঐতিহ্য ধন্বন্তরির ছবিতে আপত্তি কোথায়? আর এনএমসি স্বতন্ত্র সংস্থা, তার সিদ্ধান্ত কী হবে তা কোনও রাজনৈতিক দল ঠিক করতে পারে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal National Medical Commission

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}