প্রতীকী ছবি।
বারাসত পেরিয়ে টাকি রোড ধরতেই হোঁচট খেয়েছিল গাড়ি। কদম্বগাছি পর্যন্ত পৌঁছতেই নাকাল দশা। বেলিয়াঘাটা ব্রিজের একটু আগে থেকে রাস্তা মসৃণ হল বটে। কিন্তু বেড়াচাঁপা পেরোতেই ফের সেই দশা! জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তায় চলাচল করাই দায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, কিছু জায়গার এমন দশা যে সামান্য বৃষ্টি হলে রাস্তা আর ধানখেতের চরিত্রে তফাত থাকে না!
শুধু এই রাস্তাই নয়, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন রাস্তারই এমন বেহাল দশা। গাড়ি নিয়ে কার্যত ঠোক্কর খেতে খেতে চলতে হয়। বর্ষা পেরনোর পরে রাস্তা মেরামতির জন্য জেলা প্রশাসন থেকে রিপোর্ট নবান্নে গিয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন এবং জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ২৭টি রাস্তার তালিকা প্রাথমিকভাবে পূর্ত দফতরে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য রাস্তার অবস্থা খতিয়ে দেখে আরও একটি তালিকা পাঠানো হবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাস্তাগুলিরও হাল যথেষ্ট খারাপ। পূর্ত ও সড়ক বিভাগের আলিপুর ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়ক বিভাগের কাছে বাসন্তী রাজ্য সড়ক মেরামতের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ঘটকপুকুর- বোদরা, বোদরা- চম্পাহাটি, সোনারপুর-মকরমপুর রাস্তার হাল খুব খারাপ। এর জন্যও প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এই রাস্তাগুলি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকার সঙ্গেও যোগসূত্র রাখে। তার ফলে রাস্তা খারাপ থাকলে জনজীবনে সমস্যা বাড়ছে।
দীর্ঘ টানাপড়েনের পর গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে নদিয়ায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের কৃষ্ণনগর থেকে জাগুলি পর্যন্ত ‘প্যাকেজ ১’-এর কাজ। প্রায় ৬৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তার বহু অংশ খুবই বেহাল। এখনও প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তার জন্য জমি অধিগ্রহণ বাকি। ৩০ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি। উত্তর নদিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা করিমপুর-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। সেটির জন্য রাজ্যের কাছে প্রায় ৮০ কোটি টাকার প্রকল্প পাঠানো হয়েছে বলা জেলা পরিষদের দাবি। জেলার দক্ষিণে রানাঘাট কোর্ট মোড় থেকে কল্যাণী পর্যন্ত রাজ্য সড়কও প্রায় পুরোটাই বেহাল। জমি জটিলতায় আটকে আছে কৃষ্ণনগর-মাজদিয়া রাজ্য সড়কের কাজ। তবে চাকদহ-বনগাঁ রাজ্য সড়ক সংস্কারের কাজ সম্প্রতি শুরু হয়েছে।
হাওড়া ও হুগলির উপর দিয়ে ৬ ও ২ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং এক্সপ্রেসওয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে যে নির্দেশ দিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে জেলার প্রতিটি রাস্তার রিপোর্ট নবান্নে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূর্ত সড়ক দফতরের হাওড়া ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার অনিল কুমার সিংহ। এই জেলার উপর দিয়ে গিয়েছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক তথা মুম্বই রোড। এই রাস্তার নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করে জাতীয় সড়ক সংস্থা। মুম্বই রোডের হাল তুলনায় ভাল। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হয়। তবে বাকি রাস্তার হাল কতটা ভাল তা নিয়ে প্রশাসনের অন্দরেই প্রশ্ন রয়েছে।
২ নম্বর জাতীয় সড়কেরও যত্নআত্তি করা হয়। কিন্তু হুগলিতে বাকি রাস্তাগুলি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, হুগলিতে গ্রামোন্নয়ন দফতরের আওতায় থাকা ১১৭টি রাস্তার তালিকা রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন দফতরের হাতে থাকা আরও কিছু খারাপ রাস্তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সেই তালিকাও পাঠানো হবে। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাস্তার গুরুত্ব নির্ধারনে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, ব্যাঙ্ক, ডাকঘর, অফিস ইত্যাদির অবস্থানের মানচিত্র তৈরির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট রাস্তার সঙ্গে তা সংযুক্ত করার কাজ চলছে। ওই ম্যাপ রাজ্যে পাঠানো হবে।’’ বেহাল রাস্তা নিয়ে জেলাস্তরে বৈঠকও হয়েছে।
তবে কাজ করে শুরু হবে সেটাই বাসিন্দাদের মূল প্রশ্ন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy