সমাবেশে মফিজুলের বাবা সুকুর আলি খান। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
ভাঙড়ে মাওবাদী হাজিরার তত্ত্ব নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুললেন নিহত মফিজুল খানের বাবা সুকুর আলি খান। প্রতিবাদী জনতার আন্দোলনের পাশে দাঁড়াতে বিদ্বজ্জনেদের সামনে রেখে তৈরি হয়েছে ‘ভাঙ়়ড় সংহতি মঞ্চ’। আলিপুরে বুধবার ওই মঞ্চের প্রথম সমাবেশে উপস্থিত হয়ে সুকুর প্রশ্ন তুলেছেন, ভাঙড়ে তাঁদের প্রতিবাদ সমর্থন করতে যাঁরা গিয়েছেন, তাঁদের অনেকে নন্দীগ্রামেও ছিলেন। তখন তা হলে কী হয়েছিল?
গোপালনগর মোড় থেকে আলিপুরে জেলাশাসকের দফতরের আগে পর্যন্ত রাস্তা ভিড়ে ঠাসা ছিল এ দিন। গুলিতে ছেলের মৃত্যুর ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার পরে সেখানে এসেছিলেন সুকুর। তিনি সরাসরিই বলেন, ‘‘দিদি বলছেন, আমরা মাওবাদী। ঠিক আছে, আমরা না হয় মাওবাদীই। নন্দীগ্রামে যারা আন্দোলন করতে গিয়েছিল, তারাই আমাদের ওখানে গিয়েছে। আমরা মাওবাদী হলে নন্দীগ্রামের জন্য দিদিও তা হলে মাওবাদী!’’ তিনি ‘দিদির দল’ই করতেন বলে দাবি করেছেন সুকুর। তাঁর বক্তব্য, পাওয়ার গ্রিডের জন্য জমি কেনা এবং সাম্প্রতিক ঘটনায় শাসক দলের স্থানীয় নেতাদের ভূমিকায় তাঁরা বীতশ্রদ্ধ।
ভাঙড়ের ঘটনার পরে রাজ্য সরকার নিহত দু’জনের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছে। মফিজুলের পরিবার সেই ক্ষতিপূরণ এখনও নেয়নি। সুকুর এ দিন বলেন, ‘‘ছেলে হারিয়েছি। কিন্তু আমি বিক্রি হইনি। আপনাদেরও বলছি, প্রতিবাদের সময়ে এ রকম দু’লক্ষ টাকা দিতে এলে মুখের উপরে ছুড়ে মারবেন! প্রতিবাদের জন্য ক্ষতি স্বীকার করতে হবে। বিক্রি হব না, এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ!’’ উপস্থিত জনতার সব চেয়ে বেশি সমর্থন পেয়েছেন নিহত ওই যুবকের বাবাই। মঞ্চ থেকেই মফিজুলের পরিবারের জন্য আর্থিক সাহায্যের ডাক দেওয়ার পরে ঘটনাস্থল থেকেই উঠেছে ২৩ হাজার ৭৩৩ টাকা। যা তুলে দেওয়া হয়েছে সুকুরের হাতে। তরুণ মজুমদার, অশোকনাথ বসু, চন্দন সেন, বাদশা মৈত্র, বিকাশ ভট্টাচার্যদের পাশাপাশি এ দিনের সভায় সহমর্মিতা জানাতে গিয়েছিলেন কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান এবং সিপিএমের সুজন চক্রবর্তীও।
কলকাতার ভারত সভা হলে এ দিনই ‘ভাঙড় আন্দোলনের সংহতি কমিটি’র নামে নাগরিক সভায় প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে, পাওয়ার গ্রিডের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ২০১৩ সালের অধিগ্রহণ আইন মেনে জমি নেওয়া হয়নি কেন— এই প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা রুজু করা হবে। রাজ্যের কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা আজ, বৃহস্পতিবার ভাঙড়ে যাবেন ঘটনার সরেজমিন খোঁজ নিতে। ‘সংহতি কমিটি’র তরফে কুশল দেবনাথ বলেন, ‘‘ভাঙড়ে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু শান্তিপূর্ণ এই আন্দোলনের উপরে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস নামিয়ে আনা হচ্ছে।’’ সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ জানিয়েছেন, ভাঙড়ে ‘সরকারি সন্ত্রাসের’ প্রতিবাদে এবং আন্দোলনকারীদের সমর্থনে ২৯ জানুয়ারি রাজ্য জুড়ে তাঁরা ‘সংহতি দিবস’ পালন করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy