Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

কৃষ্ণেন্দুকে সরানোর শর্ত নীহারের, নাটক মালদহে

ইংরেজবাজারের হাওয়ায় এখন ভাসছে দু’টি প্রশ্ন। নীহাররঞ্জন ঘোষ এখন কোন দলে? আর, ইংরেজবাজারের পুরপ্রধানের পদ কি এখনও কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর দখলে?

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:০৯
Share: Save:

ইংরেজবাজারের হাওয়ায় এখন ভাসছে দু’টি প্রশ্ন। নীহাররঞ্জন ঘোষ এখন কোন দলে? আর, ইংরেজবাজারের পুরপ্রধানের পদ কি এখনও কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর দখলে?

এই দু’টি প্রশ্ন নিয়েই বুধবার দিনভর নাটকের নানা অঙ্ক দেখা গেল মালদহে। এই দিন ছিল মালদহ জেলা পরিষদে আটটি স্থায়ী সমিতির সাত সদস্যের বিরুদ্ধে কংগ্রেস-সিপিএম জোটের আনা অপসারণের তলবি সভা। বাম ও কংগ্রেসের সমর্থনে ভোটে জিতে আসা ইংরেজবাজারের নির্দল বিধায়ক নীহারবাবুকে নিয়ে তাই কয়েকদিন ধরেই দড়ি টানাটানি চলছিল। একদিকে তৃণমূল। অন্য দিকে, কংগ্রেস-সিপিএম।

তৃণমূল সকালেই জানিয়ে দেয়, নীহারবাবু তাঁদের দলে যোগ দিয়েছে। কিন্তু নীহারবাবুর একটি শর্ত রয়েছে। তৃণমূল জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনই জানিয়ে দেন, নীহারবাবুর শর্ত হল, ইংরেজবাজারের পুরপ্রধানের পদ থেকে কৃষ্ণেন্দুবাবুকে সরাতে হবে। তারপরে মোয়াজ্জেমই ঘোষণা করেন, ‘‘নীহারবাবুর সেই শর্ত রাজ্য নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে।’’

কিন্তু কৃষ্ণেন্দুবাবুর সোজা কথা, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী কে? আমাকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই পদে বসিয়েছেন। কে কী বলছেন, জানি না। আমি এই পদেই রয়েছি।’’

তাই নীহারবাবুর ‘শর্ত’ যে মানা হয়নি, তা মালুম হয়েছে তলবি সভাতেই। সেখানে গরহাজির ছিলেন নীহারবাবু। যা দেখে, জেলার কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, যদি নীহারবাবুর শর্ত মানাই হত, তা হলে তিনি তলবি সভায় নিশ্চয়ই আসতেন।

তলবি সভায় জিততে দরকার ছিল ৩৪ জনের সমর্থন। যা শেষ পর্যন্ত কোনও পক্ষই পায়নি। নীহারবাবু হাতছাড়া হয়ে গিয়েছেন ভেবে কংগ্রেস এক সময় মরিয়া হয়ে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে গিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া এক নেতাকে ফিরিয়েও আনে। চাঁচল ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সেই বাদল সাহার হাতে কংগ্রেসের পতাকা তুলে দেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি মৌসম বেনজির নুর। কিন্তু তাতেও তাঁরা ৩৪ জনের সমর্থন নিশ্চিত করতে পারছেন না দেখে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস-সিপিএম তলবি সভায় যাননি। বেলা ১১টা থেকে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করে তলবি সভার প্রিসাইডিং অফিসার তথা জেলা পরিষদের অতিরিক্ত কার্য নির্বাহী আধিকারিক মলয় মুখোপাধ্যায় সভাকে বাতিল বলে ঘোষণা করেন।

সিপিএম কংগ্রেস একজোট হয়েই তলবি সভা ডেকেছিল। জেলা পরিষদে মোট সদস্য সংখ্যা ৩৭। কিন্তু সাধারণ সভায় ভোটাধিকার রয়েছে জেলার ১২ বিধায়ক, ২ সাংসদ, ১৫ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরও। সেই হিসেবে ভোট দিতে পারেন মোট ৬৬ জন। এর মধ্যে বিজেপির বিধায়ক স্বাধীন সরকার ও নীহারবাবুকে ধরে বাম-কংগ্রেসের হাতে ছিল ৩২টি ভোট। তৃণমূলের হাতে ছিল ৩৩ জন। কিন্তু এ দিন সকালে বাদলবাবু তৃণমূল থেকে কংগ্রেসে ফিরে যাওয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্য পাল্টে যায়।
সেক্ষেত্রে নীহারবাবু কোন দিকে থাকবেন, তার উপরেই তলবি সভার ভাগ্য ঝুলছিল। কেননা, নীহারবাবু বাম-কংগ্রেসকে সমর্থন করলে তারা ৩৪ হয়ে যায়।

কিন্তু নীহারবাবুর রাজনৈতিক অবস্থান এখন ঠিক কী, সে প্রশ্নের উত্তর রাত অব্দি মেলেনি। যেমন মেলেনি, কৃষ্ণেন্দুবাবু এখনও ইংরেজবাজারের পুরপ্রধান কি না। কৃষ্ণেন্দুবাবুর দাবি, ‘‘আমাকে দলের কেউ কিছু আমাকে বলেননি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

English bajar Krishnendu Narayan Choudhury chairman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy