Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
ফাঁড়িতে হামলায় ধৃত ৮

পুলিশের মামলাতে অভিযুক্ত তৃণমূলই

লোকপুর ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় শাসক দলেরই ২৯ জন নেতা-কর্মী-সমর্থকের নামে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। ডিএসপি (সদর) পার্থ ঘোষের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী শনিবার রাতেই তাঁদের মধ্যে আট জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের মধ্যে অবশ্য বড় কোনও নাম নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খয়রাশোল শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৪ ০০:৪০
Share: Save:

লোকপুর ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় শাসক দলেরই ২৯ জন নেতা-কর্মী-সমর্থকের নামে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। ডিএসপি (সদর) পার্থ ঘোষের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী শনিবার রাতেই তাঁদের মধ্যে আট জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের মধ্যে অবশ্য বড় কোনও নাম নেই। রবিবার দুবরাজপুর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ধৃতদের আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত লোকপুর পঞ্চায়েতের কড়িধ্যা গ্রামের একটি পুকুরে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে বিবাদের জের গড়ায় খয়রাশোল থানার অধীন লোকপুর ফাঁড়িতে। তার জেরে শনিবার দুপুরে কেবল ওই ফাঁড়ি তছনছই হয়নি, দুই পুলিশকর্মীকে মারধর করার অভিযোগও ওঠে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি সূত্রের দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের কারণেই ফাঁড়িতে হামলা হয়। তৃণমূলের একটি অংশ অবশ্য ঘটনার সঙ্গে দলের কেউ জড়িত নন বলে দাবি করেছিল। যদিও সেই দাবি উড়িয়ে দলেরই বিরুদ্ধ অংশ দাবি করে, ফাঁড়ি হামলায় দলেরই অপর গোষ্ঠী জড়িত। ঘটনার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের লোকজন জড়িত কি না সে ব্যাপারে খোদ জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়াও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে, অভিযুক্তদের তালিকা অবশ্য অন্য কথা বলছে। পুলিশ সূত্রের খবর, এফআইআর-এ কাঁকরতলার উজ্জ্বল হক কাদেরী, লোকপুরের দীপক শীল এবং সুমন সামন্তের মতো এলাকার তৃণমূলের প্রথমসারির কয়েক জন নেতার নাম রয়েছে। যদিও তাঁদের কাউকেই পুলিশ এখনও অবধি গ্রেফতার করেনি।

খয়রাশোলে তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি, নিহত অশোক ঘোষের গোষ্ঠীর সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ অশোক মুখোপাধ্যায় গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব নতুন নয়। ওই খুনের ঘটনায় অশোক মুখোপাধ্যায়ই মূল অভিযুক্ত। বহু দিন ফেরার থাকার পরে সম্প্রতি আগাম জামিন নিয়ে তিনি এলাকায় ফিরেছেন। শনিবার সকাল থেকেই তাঁর অনুগামীরা দলের শহিদ দিবসকে সামনে রেখে প্রায় তিনশো বাইক নিয়ে এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, লোকপুর ফাঁড়িতে হামলা চালানো হয় ওই বাইক বাহিনী থেকেই। পুলিশ জানায়, মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন ধরে অশোক ঘোষ গোষ্ঠীর নেতা, লোকপুর পঞ্চায়েত সদস্য মুনমুন গড়াইয়ের স্বামী শঙ্করের সঙ্গে বচসা চলছিল তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর মিহির বাউড়ির। ঘটনার দিন মিহিরবাবুর স্ত্রী অভিযোগ জানাতে ফাঁড়িতে যান। তাঁর অভিযোগ ছিল, পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। সেই খবর পেয়েই কাছাকাছি থাকা অশোক মুখোপাধ্যায় গোষ্ঠীর বাইক বাহিনী ফাঁড়িতে হামলা চালায় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের এবং পুলিশের একাংশের অভিযোগ।

এ দিনও অবশ্য তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কয়েক জন ঘটনার সঙ্গে দলের কেউ জড়িত নন বলেই দাবি করছেন। তাঁদের বক্তব্য, স্থানীয় বিবাদকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মানুষের জনরোষেই ওই কাণ্ড ঘটেছে। ঘটনা হল, পুলিশের এফআইআর-এ যে সব নাম রয়েছে, এলাকায় তাঁরা তৃণমূলের নেতা-কর্মী-সমর্থক বলেই পরিচিত। যাঁকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সেই ফাঁড়ি ইনচার্জও সংবাদমাধ্যমের কাছে শাসক দলের লোক জনদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেছেন। আবার নিহত অশোক ঘোষের ভাই, এলাকার তৃণমূল নেতা দীপক ঘোষেরও দাবি, “দলেরই একটি গোষ্ঠীর লোক জন ওই ঘটনায় জড়িত। পুলিশ তাঁদের অবিলম্বে গ্রেফতার করুক।” উজ্জ্বল হক কাদেরী এবং দীপক শীলের ফোন বন্ধ ছিল।

এ দিনই মিহির বাউড়ির স্ত্রী বুলুদেবী দাবি করেছেন, আজ তিনি দুবরাজপুর আদালতে পুলিশ অভিযোগ নেয়নি, এই মর্মে মামলা করবেন।

অন্য বিষয়গুলি:

police outpost attack lokpur khayarashol tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE