ফের আক্রান্ত হল পুলিশ। তবে এ বার বীরভূম নয়, বাঁকুড়ায়। রবিবার রাতে ‘নো-এন্ট্রি’তে গাড়ি ঢোকাতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ালেন শহরের দুই ব্যবসায়ী। মদ্যপ অবস্থায় পুলিশ কর্মীদের উপরে চড়াও হওয়ার অভিযোগে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত উমেশ খান্ডওয়াল ও সংকেত উপাধ্যায়কে সোমবার বাঁকুড়া আদালতে হাজির তোলা হলে ৪ দিন জেলহাজত হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কালীপুজো উপলক্ষে লক্ষ্যাতোড়া শ্মশান থেকে লালবাজার যাওয়ার রাস্তায় ওই দিন সন্ধ্যা থেকেই গাড়ি চলাচল বন্ধ রেখেছিল পুলিশ। ট্রাফিক সামলানোর দায়িত্বে খোদ সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়ার ডিএসপি (শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) বাপ্পাদিত্য ঘোষ। রাত প্রায় ১০টা নাগাদ একটি গাড়িতে করে স্টেশনমোড়ের বাসিন্দা পেশায় ওষুধ ব্যবসায়ী উমেশ খান্ডওয়াল ও লালবাজারের বাসিন্দা ছাপাখানার মালিক সংকেত উপাধ্যায় নো-এন্ট্রি দিয় ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশের কথায় কান না দিয়ে জোর করে ওই পথ দিয়ে গাড়ি নিয়ে যেতে চাইলে নিতাই বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক হোমগার্ডের পায়ে ধাক্কা মারে। এরপরই উপস্থিত এএসআই মহম্মদ মফিদুল ইসলাম বাধা দিলে দুই ব্যবসায়ী গাড়ি থেকে নেমে তাঁর উপরে চড়াও হয়। ভারি কোনও জিনিস দিয়ে মফিদুলের ডান হাতে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। ঝামেলা হচ্ছে দেখে এগিয়ে আসেন ডিএসপি। তখন দুই ব্যবসায়ী ডিএসপি’র জামার কলার ধরে তাঁর উপরেও চড়াও হন বলে অভিযোগ। তখন উপস্থিত পুলিশ কর্মীরা এসে দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের বাঁকুড়া মেডিক্যালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হলে দুজনেই মদ্যপ অবস্থায় রয়েছে বলে রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। আটক গাড়ি থেকে একটি মদের বোতল (যাতে কিছুটা মদ ছিল) ও কিছু প্লাস্টিকের গ্লাস পাওয়া গিয়েছে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “নো-এন্ট্রিতে জোর করে গাড়ি ঢোকাতে চাইছিলেন দুই ব্যবসায়ী। তাঁদের বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু করেন তাঁরা। দুজনেই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। তাঁদের গ্রেফতার করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।” সোমবার ধৃতদের আদালতে আনা হলে তাঁরা অবশ্য এ ব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি। তবে এই ঘটনায় বাঁকুড়া পুলিশের ফের একবার কড়া মনোভাবের প্রমান পাওয়া গেল। কয়েক মাস আগে শহরের লালবাজার এলাকায় সন্তোষী পুজোর ভাসানে মাইক বন্ধ করতে গিয়ে ভাসানে উপস্থিত লোকজনের ক্ষোভের মুখে পড়েন বাঁকুড়া সদর থানার আইসি বিশ্বজিত্ সাহা। তাঁকে ঘেরাও করে রীতিমতো হুমকি দেওয়া হয়। মাইক বন্ধ করলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাঁকে বদলি করে দেওয়া হবে বলেও শাসানি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তবে হুমকি বা শাসানিতে দমে না গিয়ে ফোন করে আরও পুলিশ ফোর্স ডাকেন আইসি। ফোর্স আসতে দেখে বিক্ষিপ্ত ভাবে দৌড় মারেন উপস্থিত জনতা। তাদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে মাইক বাজেয়াপ্তও করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে শহরে শব্দ দূষণে লাগাম পড়েছে বলে মত বাঁকুড়াবাসীর। কালীপুজোয় তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। রবিবার রাতেও ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করার পরে বেশ কিছু মহল থেকে ঘটনাটিকে হালকা করার জন্য চাপ আসছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু বাঁকুড়া পুলিশ কড়া মনোভাবেই অনড় থেকেছে। জেলা পুলিশ সুপারের সাফ কথা, “আইনের বিরুদ্ধে কেউ গেলে আমরা কড়া ব্যবস্থা নেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy