ইটের ঘায়ে জখম ছাত্রী।—নিজস্ব চিত্র।
টোকাটুকিকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হল পরীক্ষাকেন্দ্রে। পরীক্ষার্থীদের ছোড়া ইটের আঘাতে মাথা ফাটল এক ছাত্রীর। পরিস্থিতি সামাল দিতে পরীক্ষাকেন্দ্রে ছুটতে হয় রঘুনাথপুর ও নিতুড়িয়া থানার পুলিশকে। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া থানার জনার্দণ্ডি হাইস্কুলে। তবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালন কমিটির পুরুলিয়ার যুগ্ম কনভেনার কংসেশ্বর মাহাতো দাবি করেন, “পরীক্ষা পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হয়নি। উচ্চ মাধ্যমিকের পরে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষাও নির্বিঘ্নে শেষ হয়েছে।” অপরাজিতা মাজি নামে একাদশ শ্রেণির যে ছাত্রীর মাথা ফেটেছিল, হাসপাতালে তার পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাবস্থা করা হয়েছে বলে কংসেশ্বরবাবু জানিয়েছেন।
পুলিশ ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, জনার্দণ্ডি হাইস্কুলে পরীক্ষা দিচ্ছে পাশের ব্লক সাঁতুড়ির মুরাডি এসআরবিপি হাইস্কুল, মুরাডি গার্লস হাইস্কুল-সহ চারটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। এ দিন ছিল কলা বিভাগের দর্শন বিষয়ের পরীক্ষা। জনার্দণ্ডি স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, এসআরবিপি হাইস্কুলের ছাত্র বিশ্বপ্রিয় মণ্ডল পরীক্ষা শুরু থেকেই টুকছিল। বহু বার তাকে সাবধান করা হলেও সে শোনেনি। পরীক্ষা শেষের মুখে খাতা নিয়ে নেওয়া হলে ওই ছাত্র প্রধান শিক্ষকের উপরে চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। উপস্থিত সিভিক পুলিশের কর্মীরা তাকে আটকে দেয়। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে যায় একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকের কিছু পরীক্ষার্থী অন্যায় ভাবে তাদের সহপাঠীকে হেনস্থা করা হয়েছে, অভিযোগ তুলে পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে জড়ো হয়ে এলোপাথাড়ি ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। তাদের ছোড়া পাথরের আঘাতে জখম হয় স্থানীয় লছিয়া গ্রামের বাসিন্দা জনার্দণ্ডি হাইস্কুলেরই একাদশ শ্রেণির ছাত্রী অপরাজিতা। গণ্ডগোলের খবর পেয়ে সেখানে যান এসআরবিপি হাইস্কুলের শিক্ষকরা। এলাকায় আসেন তৃণমূল নেতারাও।
অভিযুক্ত ছাত্র মুরাডি গ্রামের বিশ্বপ্রিয় মণ্ডলের দাবি, “আমি নকল করিনি। অথচ প্রথম থেকেই জনার্দণ্ডি হাইস্কুলের শিক্ষকেরা বিরক্ত করছিলেন। প্রশ্নপত্রের উপরে ‘রাফ’ করায় আধঘণ্টা আমার প্রশ্নপত্র নিয়ে রেখে দেন শিক্ষক। কিন্তু পরীক্ষা শেষের আধঘণ্টা আগে হটাৎ করে প্রধান শিক্ষক এসে আমার খাতা নিয়ে চলে যান। কারণ জিজ্ঞাসা করলে বলা হয়, ‘নকল করার জন্য আর খাতা দেওয়া হবে না।’ বহু বার বলেছিলাম, আমি নকল করিনি। কিন্তু উনি না শুনে আমাকে মারধর করেন।” জনার্দণ্ডি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, এক ছাত্র এমন মিথ্যা অভিযোগ করছে। ওই ছাত্রকে নকল মানা করা হয়েছিল। নির্দেশ অমান্য করায় পরীক্ষা শেষের ২ মিনিট আগে তার খাতা নিয়ে নেওয়া হয়। পরে অন্য ছাত্ররা ওই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে স্কুলের ঝামেলা পাকায়।” এসআরবিপি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বিবেক চক্রবর্তী বলেন, “পুলিশের উপস্থিতিতে জনার্দণ্ডি হাইস্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাকি পরীক্ষার দিনগুলিতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে সমস্ত শিক্ষকেরাই পুলিশকে বলেছে।” পুলিশের আশ্বাস, পরবর্তী পরীক্ষাগুলিতে জনার্দণ্ডি হাইস্কুলে বেশি সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy