মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
খবরটা আগেই ছড়িয়েছিল। এই পথ দিয়েই ‘হীরক জয়ন্তী’ ছবির নায়ক আসবেন। তাই অনেক আগে থেকেই নলহাটি থানা ঢোকার আগের মোড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন একদল মহিলা। মঙ্গলবার দুপুরে বীরভূম কেন্দ্রের প্রার্থী তথা অভিনেতা জয় মুখোপাধ্যায়ের প্রচার ও রোড শো-কে ঘিরে এমন উচ্ছ্বাসই নজরে পড়ল নলহাটিতে।
এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জয়কে দেখবেন বলে অপেক্ষা করছিলেন বছর ষাটের ঝর্ণা দাস। বললেন, “হীরক জয়ন্তীর নায়ক ‘হিরু’ই তো আমাদের প্রার্থী। তাই তাঁকে একবার সামনে থেকে দেখব বলে দাঁড়িয়ে আছি।” নায়ককে কাছে পেয়েই বলে উঠলেন, “কই বাবা, এ দিকে একবার তাকাও দেখি!” বয়স্ক মহিলার কণ্ঠ পেয়ে মুখে হাঁসি নিয়ে হাত নাড়তে নাড়তে ‘হিরু’ও বলে উঠলেন, “আই লাভ ইউ।” হেঁসেই ফেললেন ঝর্নাদেবী। নায়ককে জবাব দিলেন, “দু’দিন আগেই আবার টিভিতে ছবিটা দেখেছি!” তাঁর পাশ থেকেই মাঝবয়সী বধূ রেখা দাস আবার বলে উঠলেন, “এ বার কিন্তু আমরা মোদীর সরকার দেখতে চাই। তাই ভোটটা কিন্তু আপনাকেই দেব।” তার আগেই বিজেপি প্রার্থী একই কথা জানিয়েছিলেন অরবিন্দ চক্রবর্তী, দেবনাথ পাণ্ডার মতো যুবরাও। নলহাটি গার্লস হাইস্কুলের আগে মোড়ের মাথায় দাঁড়িয়ে জনা আটেক যুবকের ওই দল জয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বার্তা দিল, “দেশের আর্থিক হাল ফেরাতে নরেন্দ্র মোদীকেই প্রধানমন্ত্রী দেখতে চাই। এবার তাই আমরা বিজেপিকেই ভোট দেব।”
বীরভূম কেন্দ্রে কার্যত এ ভাবেই নরেন্দ্র মোদীকে মাথায় রেখেই অটলবিহীর বাজপেয়ীর ভক্ত জয় বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট বৈতরণী পার করার চেষ্টা করছেন। এ দিন নলহাটিতে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে হুড খোলা জিপে চেপে প্রচার চালালেন। জিপের আগে আগে হ্যান্ড মাইক হাতে বিজেপি কর্মীরা। মুখে বিতর্কিত শ্লোগান, “হর হর মোদী, ঘর ঘর মোদী।” প্রচার মিছিল দেখে উৎসাহী নলহাটি সিনেমা তলা মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা শ্রীধর চট্টোপাধ্যায়, শিশির সেখরা আবার বলছেন, “আমরা চাই রাজ্যে তৃণমূল সরকার থাকুক। কিন্তু কেন্দ্রে আমরা অটলবিহারীর মতো এ বার মোদীর সরকারই দেখতে চাই।”
এ দিনই নলহাটেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিলেন বিজেপি প্রার্থী। তারাপীঠের ফুলিডাঙা মাজারে ফকিরদের টাকা দিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন। এ বার তাই পুজো দেওয়ার পরে পুরোহিতকে দক্ষিণা বাবদ কোনও টাকা দিলেন না। পুজো দেওয়ার পরে মন্দির চত্বরে দাঁড়িয়েই বললেন, “রবীন্দ্রনাথ, তারাপীঠ, দাতাবাবার এই শান্ত বীরভূম এখন অশান্ত। অনেক রক্ত ঝরেছে। আমি চাই শান্ত বীরভূমে কারও যেন একফোঁটাও রক্ত না ঝরে।” এ ক্ষেত্রে তাঁর দাওয়ায় সেই ‘আই লাভ ইউ’। বিজেপি প্রার্থীর কথায়, “আমি বীরভূমের মানুষ এবং রাজনৈতিক কর্মীদের উদ্দেশে একটাই কথা বলি। আপনাদের যদি কেউ ধমকায় বা চমকায়, আপনি তাঁকে ‘আই লাভ ইউ’ বলুন। দেখবেন সে আপনার খুব কাছের হয়ে গিয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy