Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কমিটিতে ঠাঁই না পেয়ে উৎসব বয়কট সভাপতির

ছাত্র যুব উৎসবের কমিটি গড়া নিয়ে বিডিও-র বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলে সরকারি এই উৎসব বয়কট করল তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি। উৎসবের আমন্ত্রণপত্রে বিধায়ককের নাম উল্লেখ করা নিয়েও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে বিডিও-র বিরুদ্ধে। বাঁকুড়ার পাত্রসায়র ব্লকের ঘটনা। আর এতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেরই ছায়া দেখছেন দলেরই কর্মীরা। শনিবার শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠান বিতর্ককে নিয়েই রবিবার শেষ হল। তবে এই অবশ্য অভিযোগ মানতে চাননি বিডিও।

দেবব্রত দাস
পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:১৮
Share: Save:

ছাত্র যুব উৎসবের কমিটি গড়া নিয়ে বিডিও-র বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলে সরকারি এই উৎসব বয়কট করল তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি। উৎসবের আমন্ত্রণপত্রে বিধায়ককের নাম উল্লেখ করা নিয়েও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে বিডিও-র বিরুদ্ধে। বাঁকুড়ার পাত্রসায়র ব্লকের ঘটনা। আর এতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেরই ছায়া দেখছেন দলেরই কর্মীরা। শনিবার শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠান বিতর্ককে নিয়েই রবিবার শেষ হল। তবে এই অবশ্য অভিযোগ মানতে চাননি বিডিও।

প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্য যুব কল্যাণ দফতর আয়োজিত এই উৎসব ব্লকস্তরে বিডিও-র সভাপতিত্বে ন’জনের কমিটি পরিচালনা করার কথা। তাতে বিডিও, ব্লক যুব আধিকারিক, বিডিও-র মনোনীত (সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে যুক্ত) তিনজন এবং চারজন রাজ্য যুব কল্যাণ মন্ত্রীর মনোনীত ব্যক্তির থাকার কথা। জেলার কিছু ব্লকে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, কোথাও স্থানীয় বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি কিংবা কর্মাধ্যক্ষ এমনকী ব্লক যুব তৃণমূল নেতাদেরও ওই কমিটিতে রাখা হয়েছে। এক বিডিও বলেন, “জনপ্রতিনিধিদের কমিটিতে রাখার নিয়ম না থাকলেও নানা কারণে তাঁদের রাখা হচ্ছে।” কিন্তু পাত্রসায়রে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বা কোনও কর্মাধ্যক্ষ ওই কমিটিতে ঠাঁই পাননি। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “আমাদের কিছু না জানিয়েই বিডিও ছাত্র যুব উৎসবের পরিচালন কমিটি গড়েছেন। ব্লকের দুই বিধায়কের মধ্যে একজনকে ডাকা হলেও অন্য বিধায়ককে ডাকার সৌজন্যও তিনি দেখাননি। সর্বোপরি আমাকে বা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষদের সঙ্গেও কোনও আলোচনা ছাড়াই বিডিও সব কাজ করছেন। অথচ অনুষ্ঠান হচ্ছে ব্লক অফিস ও পঞ্চায়েত সমিতির অফিস চত্বরেই।” এর পরেই তাঁর সংযোজন, “বিডিও-র নোংরা রাজনীতির প্রতিবাদেই আমরা এই উৎসব বয়কট করেছি।” তাঁদের সঙ্গেই ওই উৎসব বয়কট করার কথা জানিয়েছেন, তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর ছ’টি পঞ্চায়েতও। তৃণমূলের ওই অংশের দাবি, মন্ত্রীর মনোনীত ব্যক্তি হিসেবে যে তিনজন যুব তৃণমূল নেতা-কর্মীকে ওই কমিটিতে ঢোকানো হয়েছে, তাঁরা এলাকায় ব্লকের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরোধী।

এই ব্লকের মধ্যে ইন্দাসের বিধায়ক গুরুপদ মেটে এবং সোনামুখীর বিধায়ক দীপালি সাহার বিধানসভা এলাকা পড়ে। অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্রে অতিথি হিসেবে দীপালিদেবীর নাম থাকলেও গুরুপদবাবুর নাম না থাকায় তিনি অসন্তুষ্ট। তিনি বলেন, “আমন্ত্রণ পত্রে দলেরই এক বিধায়কের নাম রয়েছে, অথচ আমার নাম নেই কেন? বিডিও-র কাছ থেকে এই অসৌজন্য আশা করিনি।”

বিডিও অপূর্বকুমার বিশ্বাস বলেন, “কমিটিতে সরকারি আধিকারিক ছাড়া যে ক’জন স্থানীয়রা রয়েছেন, তাঁদের নাম যুব কল্যাণ দফতর থেকে পাঠানো হয়েছিল। আমার কিছু করার নেই। কার্ডে ইন্দাসের বিধায়কের নাম না থাকা নিয়েও আমি জানি না। উৎসব বয়কটের ব্যাপারেও সভাপতি আমাকে আগাম কিছু জানাননি।” তৃণমূলের একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, দলের ব্লকের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরোধীরা জেলার এক প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তাঁর ইচ্ছাতেই কমিটিতে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর কেউ ঠাঁই পাননি।

তবে জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেছেন, “বিষয়টি বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসককে দেখতে বলেছি।”

অন্য বিষয়গুলি:

debobrata das patrasayer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE