অশালীন কথা ও কুপ্রস্তাবের প্রতিবাদ করায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এক কিশোরীকে লাঠি দিয়ে বেদম মারধরের অভিযোগ উঠল প্রতিবেশী কিশোরের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত নিজেও এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়ার কোতুলপুরের গৌর কলোনির রাস্তায়। অভিযুক্তের পরিবারও ওই কিশোরী ও তার মায়ের বিরুদ্ধে পাল্টা মারধরের অভিযোগ এনেছে। যদিও বুধবার পর্যন্ত দু’পক্ষই থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ করেনি।
রাস্তায় ওই ঘটনার পরে মাথায় গুরুতর চোট পাওয়া অচেতন ওই কিশোরীকে প্রথমে স্থানীয় গোগরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। সেখানে কিশোরীর জ্ঞান ফিরলেও শারীরিক অবস্থার বিশেষ উন্নতি না হওয়ায় এবং মাথায় পরীক্ষা নিরীক্ষার (সিটি স্ক্যান) জন্য বুধবার দুপুরে তাকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই কিশোর-কিশোরী একই স্কুলের বালক ও বালিকা বিভাগের ছাত্রছাত্রী। ছেলেটি আবার স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার খুড়তুতো ভাই। কিশোরীর বাবার অভিযোগ, শাসকদলের নেতার ভাই হওয়ায় ওই কিশোরের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিতে চাইছে না কোতলপুর থানা। যদিও কোতলপুরের ওসি গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস, ওঁরা অভিযোগ জানালেই তা দায়ের করা হবে। পাশাপাশি অভিযোগ জানাতে এসে কোনও পুলিশকর্মী ফিরিয়ে দিয়ে থাকলে সে ঘটনারও তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার এ দিন রাতে বলেন, “ঘটনাটি সর্ম্পকে জানি না। অভিযোগ করতে এলে পুলিশ কেন ফেরাবে? আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
কিশোরীটির অভিযোগ, “স্কুলে আসা-যাওয়ার সময়-সহ বিভিন্ন সময় রাস্তায় আমাকে দেখলে প্রায়ই নানা অশালীন কথাবার্তা বলে বিরক্ত করে ওই ছেলেটা। সোমবার বিকেলে গ্রামের খেলার মাঠের কাছে এ রকমই নোংরা কথা বলায় প্রতিবাদ করে পাল্টা কথা শুনিয়ে দিয়েছিলাম। তখন ও মারমুখী হয়ে আমাকে মাটিতে পুঁতে দেওয়ার হুমকি দেয়। খেপে গিয়ে আমি ওকে চড় কষিয়ে দিই। গোলমালের খবর শুনে আমার মা চলে এলে ছেলেটা পালায়।” ওই পরিবারের আরও দাবি, সোমবারের ঘটনার জেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই কিশোরী যখন স্থানীয় খুনডাঙ্গা গ্রাম থেকে পড়ে ফিরছিল, তখন ওই কিশোরের বাড়ির কাছাকাছি রাস্তায় কিশোরীকে লাঠি নিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করা হয়। কিশোরীর অভিযোগ, ওই ছেলেটির পাশাপাশি তার কাকাও তাকে পিটিয়েছে। চুল ধরে টেনেছেন ছেলেটির মা। কিশোরীর মা এ দিন হাসপাতালে বলেন, “পড়শিদের কাছে খবর পেয়ে গিয়ে দেখি, মেয়ে রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। নাক দিয়ে কিছুটা রক্তও বেরিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ওকো স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাই।”
অভিযুক্ত স্কুলছাত্রের অবশ্য পাল্টা দাবি, “আমাকে অন্যায় ভাবে ওই মেয়েটা আর তার মা মেরেছে। সেই রাগে আমি, আমার মা ও কাকা ওকে মেরেছি।”
স্কুলছাত্রটির তৃণমূল নেতা দাদারও দাবি, “ভাইকে আগের দিন মারধর করেছিল মেয়েটা। ভাই আমাকে বিষয়টা জানিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার কথা বলছিল। আমি দু’পক্ষকে নিয়ে মিটমাট করার আশ্বাস দিয়ে ভাইকে পাল্টা মারধর করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন মেয়েটির পরিবার আইনের আশ্রয় নিতেই পারে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy