বিক্ষোভের জেরে হিমঘরের বাইরে আলুর গাড়ি দাঁড়িয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
আলু রাখার বন্ড বিলিতে বেনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে হিমঘরের বাইরে বিক্ষোভ দেখালেন বেশ কয়েকজন আলু চাষি। তাঁদের অভিযোগ, বন্ড না পাওয়ায় তাঁরা আলু মজুত করতে পারছেন না। শুক্রবার নলহাটির ইন্দ্রডাঙা সিএডিপিএফএসসিএস লিমিটেড সমবায় হিমঘরের সামনে এই বিক্ষোভ হয়। চাষিদের বিক্ষোভের জেরে এ দিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর প্রায় দেড়টা পর্যম্ত আলু রাখার ব্যাহত হয় ওই হিমঘরে। শেষ পর্যন্ত হিমঘর কর্তৃপক্ষ চাষিদের অতিরিক্ত বন্ডের সুযোগ দেওয়ার মৌখিক আশ্বাস দেন। তাতে বিক্ষোভ থামে।
হিমঘর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, পানিটা, নলহাটি, পোভরা, চামটিবাগান-সহ ২৩টি গ্রামের চাষি ওই হিমঘরের উপর নির্ভরশীল। হিমঘরটির সদস্য সংখ্যা বর্তমানে ৫১০০। মোট ১ লক্ষ ৯৪ হাজার বস্তা (প্যাকেট) ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এই হিমঘরে ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ ৮০ হাজার ৮২০ প্যাকেট বণ্ড ইতিমধ্যেই বিলি হয়ে গিয়েছে। ঠিক ছিল ভাগচাষিরা মাথাপিছু ১০ প্যাকেট, ক্ষুদ্র চাষি ২০ প্যাকেট ও এলাকার বড় চাষি ৫০-১০০ প্যাকেট পর্যন্ত আলু রাখার সুযোগ পাবেন। কিন্তু এলাকায় অনেক আলু চাষিই সেই বন্ড পাননি বলে অভিযোগ। সেখানেই সমস্যা।
স্থানীয় চাষি মোতালিফ শেখ, কচি শেখ, তহিদ শেখদের দাবি, “আমরা প্রতি বছর এই হিমঘরেই আলু মজুত করি। কিন্তু এ বার আমাদের অজান্তেই কবে বন্ড বিলি করে দিয়েছে হিমঘর কর্তৃপক্ষ। এমনকী বিলি হওয়া বন্ড এমন অনেকের কাছে গিয়েছে যাঁরা আদৌ আলু চাষি নন। কষ্ট করে আলু চাষু করেও এখন মজুত করতে না পারার ক্ষোভে তাঁরা বাধ্য হয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
হিমঘর কর্তৃপক্ষ অবশ্য চাষিদের আনা অভিযোগ মানতে নারাজ। ওই হিমঘরের পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান লিখিলচন্দ্র রায় বলেন, “বেশ কয়েক বছর আগেই ৬৮ হাজার প্যাকেট ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এই হিমঘরকে ১ লক্ষ ৯৪ হাজার করার পর কোনওবারই সম্পূর্ণ ভরেনি। এ বার এলাকায় বিপুল পরিমাণে আলু চাষ হওয়ায় প্রথমবার এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”
তাঁর দাবি, এলাকার চাষিরা যাতে হিমঘরে আলু রাখতে পারেন সে জন্য গত ১০-২৫ ফেব্রুয়ারি বন্ড বিলির আগে মাইকে এবং লিফলেট ছড়িয়ে প্রচার করা হয়েছিল। লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকে বন্ড নিয়ে গিয়েছেন। তাই বণ্ডবিলি নিয়ে বেনিয়মের অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে চাষিদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সরকারের জন্য নির্ধারিত ৫ শতাংশ (অর্থাত্ ১০ হাজার) কোটা থেকে ফের যাতে বণ্ড বিলি করা যায়, সে জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তিনি জানান, প্রশাসনের আনুমতি পেলে ওই বন্ড বিলি করা বলে চাষিদের জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy