লোকসভা নির্বাচনে বীরভূম কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ এবং সাধারণ পর্যবেক্ষক-সহ অন্যান্য আধিকারিকদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ আনল কংগ্রেস। রবিবার বীরভূম কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী সৈয়দ সিরাজ জিম্মি কেন্দ্রের মুখ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে ইমেল করে দু’টি অভিযোগ পাঠিয়েছেন। ওই দু’টি অভিযোগের মধ্যে একটিতে চারটি বিষয় উল্লেখ করে তিনি উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তদন্ত না হলে আদালতের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
যে চারটি বিষয়ের উল্লেখ করে জিম্মি ইমেল করেছেন সেগুলি হল ১) নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচনের দিন রাজ্যে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূলের নেতা এবং কর্মীদের গুণ্ডামি ও অসামাজিক কার্যকলাপ। ২) নির্বাচনের আগের দিন রাতে বীরভূম কেন্দ্রের সাঁইথিয়া বিধানসভা (২৮৯) কেন্দ্রের অধীন সিউড়ি ২ ব্লক এলাকায় তৃণমূলের বাইকবাহিনী গ্রামে গ্রামে গিয়ে ভোটারদের এবং কংগ্রেস কর্মীদের ভয় দেখিয়েছে। ৩) নির্বাচনের দিন অসংখ্য বুথ দখল করে সেখানে ভোটারদের ভোট দিতে বাধা প্রদান। ৪) নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের দিন স্পর্শকাতর বুথগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেখা যায়নি। সেই সঙ্গে নির্বাচনের কাজে নিযুক্ত আধিকারিকদের ভূমিকা এবং বীরভূম কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ এবং সাধারণ পর্যবেক্ষকদের কাজের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
রবিবারই বীরভূম জেলাশাষকের কাছে জিম্মি বীরভূম কেন্দ্রের অধীন সিউড়ি বিধানসভার ২৬ এবং সাঁইথিয়া বিধানসভার ১২টি বুথে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন এবং জেলাশাসক ছাড়াও কেন্দ্রের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক, রাজ্যের বিশেষ পর্যবেক্ষকের কাছে তিনি দাবির কপি পাঠিয়েছেন। জিম্মির অভিযোগ, “নির্বাচনের দিন তৃণমূলের কর্মীরা ওই সমস্ত বুথে ভোটারদের ভোট দিতে দেননি।” প্রসঙ্গত, ভোটের দিন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে যাওয়ার পথে সদাইপুর থানা এলাকার পিরিজপুর গ্রামের এক সিপিএম সমর্থকের মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল শাসকদলের বিরুদ্ধে।
শুধু বীরভূম কেন্দ্রে নয়, শাসক দলের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছেন বোলপুর কেন্দ্রের সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেস প্রার্থীরাও। এই কেন্দ্রের নানুর থেকে লাভপুর, কেতুগ্রাম থেকে মঙ্গলকোটসর্বত্রই শাসক দলের বিরুদ্ধে নীরব সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে। বিরোধী দলের পোলিং এজেন্ট বা কর্মী-সমর্থক এমনকী বিরোধী সমর্থক হিসাবে চিহ্নিত ভোটারদের বিভিন্ন এলাকায় বুথের কাছেই ঘেঁসতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। বোলপুরের অন্তত ৩০০ বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলেছেন বোলপুর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ রামচন্দ্র ডোম। ভোটগ্রহণের দিন বোলপুর কেন্দ্রের অন্তর্গত সাঁইথিয়া থানার কালুরায়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৫ নম্বর বুথে থাকা সিপিএমের পোলিং এজেন্ট এবং স্থানীয় এক সিপিএম সমর্থক মহিলা ভোটারকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি সিপিএমের। উল্টে তৃণমূলের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে সিপিএমের এক কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক তথা বামফ্রণ্টের জেলা আহ্বায়ক দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “জেলা বামফ্রণ্টের পক্ষ থেকে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের অধীন সিউড়ি এবং সাঁইথিয়া বিধানসভার ৩৩টিরও বেশি বুথে আমরা পুনরায় নির্বাচনের দাবি করেছি। এ ছাড়াও বোলপুর কেন্দ্রের বেশ কয়েকটি বুথেও পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “ওই সমস্ত বুথে আমাদের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। বুথ জ্যাম করে ভোটারদের বুথে ঢুকতে দেয়নি। এই সমস্ত অভিযোগ আমরা নির্বাচনের দিন করেছি। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সে জন্য শনিবার লিখিত ভাবে আমরা জেলাশাষকের কাছে ওই সমস্ত বুথগুলিতে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি।”
এ ব্যাপারে জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। চেষ্টা করেও ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক শৈলেন্দ্রনাথ গুপ্তের সঙ্গেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy