Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ব্যস্ত রাস্তায় দেহ যুবকের, শঙ্কা খুন

পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম শেখ শমিম ওরফে গুড্ডু (২২)। বাড়ি শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরপাড়ায়। এলাকাবাসী ও পরিবারের দাবি, খুন করা হয়েছে তাঁকে।

হত্যাকাণ্ড: শেখ শমিমের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের পরে পাইকপাড়ার রাস্তা জলে ধোওয়া হচ্ছে। শনিবার। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

হত্যাকাণ্ড: শেখ শমিমের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের পরে পাইকপাড়ার রাস্তা জলে ধোওয়া হচ্ছে। শনিবার। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৯ ০২:৩৮
Share: Save:

সাতসকালে শহরের জনবহুল এলাকায় এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য ছড়াল। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে সিউড়ি পুর-এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পাইকপাড়ায়।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম শেখ শমিম ওরফে গুড্ডু (২২)। বাড়ি শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরপাড়ায়। এলাকাবাসী ও পরিবারের দাবি, খুন করা হয়েছে তাঁকে। প্রাথমিক তদন্তে একই ধারণা পুলিশের। পেশায় রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে ওই যুবক ঠিক কী ভাবে মারা গেলেন, খুন হয়ে থাকলে তার কারণ কী, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ধোঁয়াশা রয়েছে নিহতের পরিজনদের দু’ধরনের দাবি ঘিরেও।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল ৬টা নাগাদ সিউড়ির ঘনবসতিপূর্ণ পাইকপাড়ায় একটি বাড়ির সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় শেখ শমিমের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। যুবকের চোখ থেকে রক্ত গড়াচ্ছিল, চোট ছিল মাথার পিছনের দিকেও। খবর ছড়িয়ে পড়তে ভিড় জমে। পৌঁছে যান এলাকার কাউন্সিলর কাজী ফরজুদ্দিন। খবর পায় পুলিশও। কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃতের পরিচয় জানতে পেরে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ফকিরপাড়ায় তাঁর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে যান শমিমের কাকা মহম্মদ হামিদ। তিনি দাবি করেন, ওই যুবকের মা-বাবা নেই। বাড়িতে যাতায়াত করলেও বেশিরভাগ সময়ে তিনি থাকতেন সিউড়ি লাগোয়া বাঁশজোড়ের শ্বশুরবাড়িতে। বৃহস্পতিবার তাঁর সঙ্গে শমিমের শেষ বার কথা হয়েছে।

দোষীদের গ্রেফতার করার দাবিতে সিউড়ির স্টেশনবাজারে পথ অবরোধ। শনিবার। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

অন্য দিকে নিহতের দিদি রেজিনা খাতুন দাবি করেন, তাঁর ভাই বিয়ে করেনি। রেজিনা জানান, তাঁরা তিন বোন, দুই ভাই। তিনি, তাঁর বড় বোন, বা ভাইয়েরা ফকিরপাড়ার বাড়িতে থাকেন না। সেখানে থাকেন ছোট বোন সাবিনার পরিবার। শমিম ফকিরপাড়ার বাড়িতে মাঝেমধ্যে যাতায়াত করতেন। বেসরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী রেজিনার দাবি, তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে সোনাতোড়পাড়ায় এক পরিবারের ছোটমেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু সেই মেয়ে কোথাও চলে যাওয়ায় বিয়ে শেষ পর্যন্ত হয়নি। রেজিনার দাবি, তাঁর ভাইয়ের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ওই মেয়েটির দিদির সঙ্গে। তাঁর অভিযোগ, এই খুনের সঙ্গে ওই সম্পর্কের যোগ রয়েছে। কারণ যেখানে শমিমের দেহ উদ্ধার হয়েছে, তার কাছেই ওই মেয়েটির বাড়ি। এ কথা লিখিত ভাবে সিউড়ি থানাকে জানিয়েছেন রেজিনা।

জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, ওই যুবকের মৃত্যু ঘিরে রহস্য রয়েছে। সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, যে ধরনের চোট যুবকের শরীরে ছিল, তাতে মৃত্যু হওয়া সম্ভব নয়। তাই খুন করা হলেও কী ভাবে করা হয়েছে বা মৃত্যু কী ভাবে হল, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট— যুবকের মৃত্যু যে ভাবেই হয়ে থাকুক, দেহ তুলে এনে পাইকপাড়ায় ফেলা হয়েছে। একই অনুমান পাইকপাড়ার বাসিন্দাদেরও। কাউন্সিলর এবং পাড়ার বাসিন্দাদের বক্তব্য, রাতেও এলাকায় খুন করা হলে কেউ না কেউ টের পেতেন। দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিকেলে সিউড়ি স্টেশনবাজার সংলগ্ন এলাকায় সিউড়ি-বোলপুর রাস্তা অবরোধ করেন ফকিরপাড়ার বাসিন্দারা। সিউড়ি থানার আইসি দেবাশিস পান্ডার আশ্বাসে পথ অবরোধ ওঠে।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Youth Suri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy