শোকার্ত: কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বিধানের মা। নিজস্ব চিত্র
সামান্য মুড়ি নিয়ে বিবাদ। তার জেরেই এক যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল প্রতিবেশী পরিবারের পাঁচ জনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে নলহাটি থানার আট গ্রামে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম বিধান লেট (২৫)। পেশায় চাষি এই যুবকের মাত্র এক মাস আগেই বিয়ে হয়েছে। ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি এখনও পুলিশের দাবি, বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্তেরা।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুরে বিধান গ্রামের নামুপাড়ায় একটি মুড়ি মিলে চাল দিয়ে মুড়ি কিনতে গিয়েছিলেন। সেখানে মুড়ি আগে পরে দেওয়া নেওয়া এবং অন্যের মুড়ির বস্তা ওলটপালট হওয়া নিয়ে গ্রামের এক বধূর সঙ্গে বিধানের বচসা বাধে। তখনকার মতো বিষয়টি মিটিয়ে দেন বয়স্কেরা।
পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে বিধানের পরিবার জানিয়েছে, রবিবারই সন্ধ্যার দিকে তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয় অপর্ণা লেট নামে ওই মহিলা, তাঁর স্বামী মিলন, দেওর হেমন্ত, শ্বশুর বীরবল এবং এক নিকটাত্মীয় মধু লেট। বিধান সে সময় বাড়ির চিলেকোঠায় শুয়েছিলেন।
মঙ্গলবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, নিহতের মা নির্মলা লেট কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। মাঝেমাঝে জ্ঞানও হারাচ্ছেন। তাঁকে সামলাচ্ছেন পড়শি মহিলারা। নির্মলাদেবীর অভিযোগ, “বীরবল, অপর্ণা বাইরে দাঁড়িয়েছিল। বাকি তিন জন বাড়ির মধ্যে ঢুকে প্রথমে ছেলেকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। পরে বুকে লাথি মারে। আমি বাঁচাতে গেলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। চিলেকোঠায় উঠে ছেলেকে মারতে মারতে রাস্তায় নামিয়ে নিয়ে আনে।’’ তাঁর দাবি, বিধানকে রাস্তায় ফেলে গোপনাঙ্গে লাগাতার লাথি মারা হয়। বিধান অচেতন হয়ে পড়লে অভিযুক্তেরা পালিয়ে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু প্রতিবেশী বলেন, ‘‘চেঁচামেচির আওয়াজ পয়ে বেরিয়ে দেখি বিধানকে বেধড়ক মারা হচ্ছে। বিধান বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছিল। আমরা ছুটে যেতই ওরা পালিয়ে যায়।’’
সেখান থেকে ছেলেকে উদ্ধার করে নির্মলাদেবী নলহাটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। কিন্তু, চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে আসেন বলে অভিযোগ। এর পরে বিধানের দিদি মিনতি লেট ভাইকে নিয়ে ফের ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই যুবককে সোমবার সকালে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। গভীর রাতে সেখানেই বিধানের মৃত্যু হয়। মিনতির দাবি, “গোপনাঙ্গে লাথি মারার ফলে ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। আমি যখন ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে যাই, তখনই ওর প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, বিধানের দেহ রামপুরহাট মেডিক্যালে ময়নাতদন্ত হবে। তার রিপোর্ট পেলেই বোঝা যাবে, ঠিক কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy