সিউড়ির ভট্টাচার্যপাড়ায় কৌতূহলীদের ভিড়। নিজস্ব চিত্র
গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো অবস্থায় এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে সিউড়ির ভট্টাচার্যপাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম বিশ্বজিৎ কাহার (২১)। রবিবার সকালে একটি ক্যানালের ধারে গাছের ডালে ওই যুবকের দেহ ফাঁস দিয়ে ঝুলছে দেখে স্থানীয়েরাই পুলিশে খবর দেন। এই মৃত্যুকে ঘিরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে খুন না আত্মহত্যা তা নিয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় রাজমিস্ত্রি ওই যুবকের সঙ্গে এলাকারই কুলেরা গ্রামের এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল বলে মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ওই মহিলা ও তাঁর সহযোগীরা মিলে খুন করে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে গাছের ডালে ঝুলিয়ে দিয়েছেন ওই যুবককে। ওড়না ছাড়াও মৃতদেহের কাছে একটি সাইকেল, মেয়েদের ব্যাগ ও কয়েক পাটি চটি পাওয়া গিয়েছে। ওড়না, সাইকেল ও চটি অভিযুক্ত মহিলার বলে গ্রামবাসীদের দাবি। এই খবর চাউর হতেই মৃতের পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা ওই মহিলার উপরে চড়াও হয়। তাঁকে ঘর থেকে বের করে শৌচাগারে আটকে রাখেন। মারধরও করা হয় তাঁকে। পুলিশ তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। বিবাহ বিচ্ছিন্না ওই মহিলা দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই থাকতেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর পরিবারের লোকেরা বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত করুক। সত্যি ঘটনা সামনে আসুক আমরা চাই। তাতে যদি আমাদের মেয়ের দোষ থাকে তাহলে আইন অনুযায়ী যা হওয়ার হবে।’’
সিউড়ি থানায় রবিবার মৃতের পরিবার ওই মহিলার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করলেও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান এটি আত্মহত্যার ঘটনা। বিশ্বজিতের ফোনের কললিস্ট দেখে এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পরে পুলিশ জানতে পারে ওই মহিলা বিশ্বজিৎকে শনিবার সকালে ফোন করেছিলেন। কিন্তু বিশ্বজিতের মা ফোন ধরে মহিলাকে বকাবকি করেন। এই কথা জানার পরে বিশ্বজিৎ তাঁর মা’কে পাল্টা বকাবকি করেন ও আত্মহত্যার হুমকি দেন। তার জেরেই এই ঘটনা কী না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশের দাবি। এদিকে বিশ্বজিতের মা সবিতা কাহার বলেন, ‘‘শনিবার দুপুরে বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করে বেরিয়ে যায় বিশ্বজিৎ। তার আগে মেয়েটির ফোন এসেছিল। সকালেও ওই মেয়েটি আমার ছেলেকে ফোন করেছিল। তখন আমি ফোনটা ধরেছিলাম। আমার ছেলের সঙ্গে ওর মেলামেশা আমার অপছন্দ বলে বকাবকি করেছিলাম। বিশ্বজিৎ বেরিয়ে যাওয়ার খানিক পরে আমাকে ফোন করে বলে, ‘তুমি কাকে কি বলেছ, আমি মরবো।’ ওই মেয়েটিই ওকে খুন করেছে বলে আমাদের ধারণা।’’ তদন্তকারীদের অনুমান, অসম বয়স ও বিবাহ বিচ্ছিন্নার সঙ্গে ছেলের প্রণয়ের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি সবিতাদেবী। তা নিয়ে মা ও ছেলের মধ্যে মন কষাকষি ছিল। কিন্তু শনিবার ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করার পরে বকাবকি করার কথা জানতে পেরেই মা’কে ফোন করে হুমকি দিয়ে থাকতে পারেন বিশ্বজিৎ। কিন্তু ঘটনাস্থলে ওই মহিলার সাইকেল, ব্যাগ, চটির সঙ্গে দু’জোড়া ছেলেদের চটি পাওয়া যাওয়ায় ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। গ্রামবাসীদের প্রশ্ন, যদি আত্মহত্যাই করবে তবে ক্যানাল পাড়ে এত চটি এল কোথা থেকে! আর ওই মহিলার ওড়নাই বা বিশ্বজিতের কাছে এল কি করে? জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে আত্মহত্যা না খুন তা স্পষ্ট হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy