হাসপাতালের সামনে দেহ রেখে বিক্ষোভ বাঁকুড়া শহরে। —নিজস্ব চিত্র।
এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের পরিবারের মালিকানাধীন হাসপাতালে। মঙ্গলবার বাঁকুড়া শহরে অবস্থিত ওই বেসরকারি হাসপাতালের সামনে মৃতার দেহ রেখে বিক্ষোভ দেখালেন পরিজনেরা। তাতে শামিল হলেন বাঁকুড়ার পুরপ্রধান-সহ তৃণমূলের নেতা এবং কর্মীরাও। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগীমৃত্যুতে তাঁদের কোনও ‘হাত নেই।’
মৃতার পরিবার সূত্রে খবর, মৌসুমী দে নামে ২৬ বছরের ওই প্রসূতিতে কামারপাড়া এলাকার থেকে গত ২১ মার্চ ভর্তি করানো হয়েছিল ওই হাসপাতালে। অস্ত্রোপচারের পর তিনি একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু প্রসবের পর থেকেই ধীরে ধীরে ওই মৌসুমীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরিবারের দাবি, গত শুক্রবার রোগিণীকে চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। সেই মতো ওই দিনই রোগিণীকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার বিকেলে ওই প্রসূতির দেহ বাঁকুড়ার বেসরকারি হাসপাতালের সামনে নিয়ে যান মৃতার পরিবার-পরিজনেরা। মৃতার স্বামী তন্ময় দের অভিযোগ, বাঁকুড়ার ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভুলে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমি এবং আমার স্ত্রী দু’জনে মিলে সংসার চালাতাম। এখন এক সদ্যোজাত-সহ দুই সন্তানকে নিয়ে চরম বিপদে পড়ে গেলাম। আমি বাঁকুড়ার ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ-সহ উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’’
রোগী পরিবারের পাশে এসে দাঁড়ান বাঁকুড়ার পুরপ্রধান অলকা সেন মজুমদার। বিক্ষোভ এবং পথ অবরোধে অংশ নেন তিনি। তাঁরও অভিযোগ, ‘‘ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। ওই পরিবারের যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এই রকম ভুল চিকিৎসায় আর কাউকে প্রাণ খোয়াতে না-হয় সে জন্য আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবিতে পথ অবরোধ করেছি।’’
যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালের মুখ্যপ্রশাসক তুষার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনও রকম গাফিলতি হয়নি। রোগীর শরীরে অস্ত্রোপচারের পর তাঁর রক্ত যথাসময়ে জমাট বাঁধছিল না। এটা এক রকম বিরলতম জটিলতা। এই অবস্থায় নার্সিংহোমের যা যা করণীয় তা করা হয়েছিল। রোগীর পরিবার পরামর্শক্রমে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তরিতও করে। রোগীর পরিবারকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করা হয়েছিল। এখন দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। তার রিপোর্ট আসুক, তখন আমরা মেনে নেব। কিন্তু এ ভাবে ক্ষোভ-বিক্ষোভের ফলে চিকিৎসাধীন রোগীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। আর রোগীর চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও ভাবেই সুভাষ সরকার যুক্ত ছিলেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy