অনুব্রত মণ্ডল
দীর্ঘ দিনের শারীরিক সমস্যা থাকলেও হাসপাতালে ভর্তি করানোর প্রয়োজন নেই অনুব্রত মণ্ডলকে। সোমবার এমনটাই জানিয়েছিলেন কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকও তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতিকে দেখার পর তাঁর ফিসচুলা, শ্বাসকষ্ট, ডায়াবিটিস এবং অর্শ রোগের কথা বলেছেন। বুধবার দশম বারের সিবিআই হাজিরা এড়িয়ে অনুব্রত জানান, তিনি ভীষণই ‘অসুস্থ’, আপাতত ‘বেড রেস্ট’-এ রয়েছেন। এ নিয়ে রাজনৈতিক টানাপড়েনের আবহে জানা গিয়েছে, চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ ভারতে যেতে পারেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। এ ব্যাপারে শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের এক দক্ষিণ ভারতীয় চিকিৎসকও তাঁর নজরে রয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
অর্শের অপারেশন নিয়ে বুধবার শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের কর্ণধার মলয় পীঠের সঙ্গে কথা বলেন অনুব্রত। এই সাক্ষাতের কথা সংবাদমাধ্যমের কাছে স্বীকার করে মলয় জানান, শীঘ্রই অর্শের অপারেশন করিয়ে নিতে চাইছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। অস্ত্রোপচারের বিষয় কথা বলতে গিয়ে তার ভাল দিক, খারাপ দিক সম্পর্কে তিনি জানতে চান। মলয়ের কথায়, ‘‘উনি অপারেশনের বিষয় জানতে চাইছিলেন। জিজ্ঞাসা করছিলেন, এই অপারেশন কোথায় করালে ভাল হবে, মেডিক্যাল কলেজে অর্শ অপারেশনের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন কি না ইত্যাদি। উনি দ্রুত অপারেশন করিয়ে নিতে চাইছেন।’’
জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠ এক সূত্রের দাবি, শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজে দক্ষিণ ভারত থেকে জে এস রাজকুমার নামে এক চিকিৎসক আসেন। তাঁর সম্পর্কেও খোঁজ নিয়েছেন অনুব্রত। মলয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ওই চিকিৎসকের বিষয়ে কথা বলেন তিনি। জানতে চান, রাজকুমার তাঁর চিকিৎসা করতে পারবেন কি না। ওই সূত্রের কথায়, ‘‘আসলে অর্শের জন্য ভীষণই ভুগছেন অনুব্রত। উনি চাইছেন দ্রুত অপারেশন করিয়ে নিতে। চিকিৎসার প্রয়োজনে যদি দক্ষিণ ভারতেও যেতে হয়, তাঁর আপত্তি নেই। অপারেশন করাতে চেন্নাই যেতে পারেন।’’ ওই সূত্রের আরও সংযোজন, ‘‘এসএসকেএম হাসপাতাল ভর্তি নেয়নি মানেই কেউ সুস্থ, এটা তো বলা যায় না। তিনি দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্যই হাসপাতালে ভর্তি হতে চেয়েছিলেন।’’
যদিও অনুব্রতের দক্ষিণ ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করানোর ব্যাপারে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি মলয়। তিনি শুধু বলেন, ‘‘অনুব্রতবাবুর সঙ্গে অপারেশন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। উনি আমার কাছে সে ব্যাপারেই জানতে চান। আমি বলেছি, হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে আপনাকে (অনুব্রতকে) সব জানাব।’’
সোমবার সিবিআই দফতরে হাজিরা না দিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর চিনার পার্কের ফ্ল্যাট হয়ে সোজা বীরভূমে চলে আসেন অনুব্রত। এর পর বুধবারও অনুব্রতকে তলব করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু এ বারও নিজাম প্যালেসে (কলকাতায় সিবিআইয়ের দফতর) হাজিরা না দিয়ে ১৪ দিন সময় চেয়েছেন তিনি। এই আবহে অনুব্রতের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতে যাওয়া বোলপুর হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী দাবি করেছেন, তাঁকে ‘বেড রেস্ট’ অর্থাৎ বিশ্রামের কথা ‘লিখতে বাধ্য’ করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘যে সব শারীরিক সমস্যা ওঁর ছিল, সেগুলি সব দেখেছি আমি। উনি বলেছিলেন, আমাকে (অনুব্রতকে) বেড রেস্ট লিখে দিন। আমারও ওঁকে দেখে মনে হয়েছিল, ওঁর একটু রেস্টের প্রয়োজন আছে।’’
বুধবারের সিবিআই হাজিরার আগে মঙ্গলবার রাতে চন্দ্রনাথের ওই দাবি ঘিরে বিস্তর বিতর্ক হয়। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি হাজিরা এড়াতেই চন্দ্রনাথকে দিয়ে বাড়িতে বিশ্রামের কথা ‘জোর’ করে লিখিয়ে নিয়েছিলেন বীরভূমের ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ নেতা? এ সব নিয়ে জল্পনার আবহে অনুব্রতের ‘প্রয়োজনে’ দক্ষিণ ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করানোর বিষয়টি প্রকাশ্যে এল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy