শোকার্ত: পূর্ণেন্দু ও স্বপ্নাদেবীর ছেলে ও পুত্রবধূ। নিজস্ব চিত্র
নির্বিবাদী মিষ্টভাষী দম্পতি পূর্ণেন্দু ও স্বপ্না চট্টোপাধ্যায়কে খুনের ঘটনায় অবাক ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের মানুষ। পুলিশি জটিলতার আশঙ্কায় গ্রামের লোক নাম বলতে না চাইলেও এক কথায় জানিয়েছেন, ওই দম্পতির সঙ্গে প্রতিবেশীদের সম্পর্ক খুবই ভাল ছিল। কারও সঙ্গে কখনও খারাপ ব্যবহার তাঁরা করেননি।
নিহত দম্পতির এক মাত্র ছেলে কল্লোল চট্টোপাধ্যায় কর্মসূত্রে আসানসোলের এসবি গড়াই রোডে থাকেন। সেখানে তাঁর ট্র্যাভেল এজেন্সি রয়েছে। বাবা-মায়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়েই এ দিন আসানসোল থেকে এসে পড়েন সস্ত্রীক কল্লোলবাবু। তাঁর স্ত্রী রীণাদেবী বলছিলেন, ‘‘গত রবিবারও এখানে এসেছিলাম। মা গয়না পরতে খুব ভালবাসতেন। আমি বেশ কিছু গয়না পরিয়ে দিয়ে গিয়েছিলাম। বৃহস্পতিবার রাতেও ফোনে কথা হয়েছে। আজ আমার জন্মদিন। উনি আগাম শুভেচ্ছা জানালেন। আজ শুনি এমন কাণ্ড।’’
এ দিন কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না কল্লোলবাবু। কোনও রকমে বলেন, ‘‘রবিবার বাবা-মাকে পুজোর কাপড়জামা দিতে এসেছিলাম। বুধবার ফোনে ওদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কিছু ভেবে উঠতে পারছি না।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কিছু নেওয়ার থাকলে নিয়ে চলে গেলেই পারত। মানুষ দুটোকে সরিয়ে দিল কেন?’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বপ্নাদেবীরা তিন ভাই বোন। বড় জামশেদপুরে থাকেন। ছোট ভাই কলকাতায়। স্থানীয় বাসিন্দা শ্রীকান্ত হাজরা জানান, স্বপ্নাদেবীর বাবা-মা যখন শয্যাশায়ী ছিলেন, তখন থেকে তাঁদের দেখভালের জন্য ওঁরা এখানে রয়েছেন। ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামেরই বাসিন্দা তথা ঠিবা পঞ্চায়েতের সদস্য মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দিদি-জামাইবাবু খুবই নির্বিরোধী মানুষ ছিলেন। কোনও দিন গলা তুলে কথা বলেননি। বরং সকলকে ডেকে কথা বলতেন। নিজেরা পুজো না করলেও যখনই গ্রামের কোনও পুজোর জন্য চাঁদা চাওয়া হয়েছে, হাসিমুখে দিতেন।’’ তিনি জানান, করোনা হওয়ার আগে স্বামী-স্ত্রী রোজ প্রাতর্ভ্রমণে বেরোতেন কুঁয়ে নদীর ধারে। সকলের সঙ্গে আলাপচারিতা সারতেন। ‘‘এমন মানুষকে যে কেউ মেরে ফেলতে পারে এ ভাবে, স্বপ্নেও ভাবিনি’’—গলা ধরে আসে মলয়বাবুর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy