সিউড়ির হলে রবীন্দ্রজয়ন্তী।
রীতি মেনে, রবিবার বিশ্বভারতী পালন করল রবীন্দ্র-জন্মোৎসব। কবির ১৫৬ তম জন্মদিন উপলক্ষে অন্যান্য বারের মতো ভোরে বৈতালিক এবং উদয়ন গৃহে কবি কণ্ঠের অনুষ্ঠান মধ্য দিয়ে শুরু হয়। সকালে উপাসনা গৃহে ব্রহ্ম উপাসনা এবং মাধবীবিতানে রবীন্দ্র জন্মোৎসবের অনুষ্ঠান ছিল শান্তিনিকেতনে। বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবন, পাঠভবন, গ্রন্থনবিভাগের একাধিক গ্রন্থ প্রকাশ হয়েছে এ দিনের অনুষ্ঠানে। প্রকাশিত হয় আলোকচিত্রের একটি অ্যালবামও।
বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনের অধক্ষ্য তপতী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ বার কবির জন্মদিনে রবীন্দ্রভবন থেকে ‘রবীন্দ্রবীক্ষা’ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া গগনেন্দ্রনাথ, অবন ঠাকুর, নন্দলাল বসু, রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও প্রতীমাদেবীর দুটি করে ছবি নিয়ে একটি অ্যালবামও প্রকাশিত হয়েছে। পাঠভবন পরিবেশ নিয়ে তাঁদের একটি বইও এ দিনই প্রকাশ করেছে।’’ বিশ্বভারতীর গ্রন্থনবিভাগও এ বার শান্তিনিকেতনে তাঁদের বিশ্ববিদ্যা সংগ্রহ গ্রন্থমালার তিনটি সংকলন প্রকাশ করে এই দিনই।
এ দিন বোলপুরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে পালন হয়েছে রবীন্দ্র জন্মোৎসব। জামবুনি বাসস্ট্যান্ড এলাকার খুদে পড়ুয়াদের ‘টুইংকেল টুইংকেল’ নামে শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিনটিকে সাড়ম্বরে পালন করেছে। প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষিকা বুলা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুদে পড়ুয়াদের নাচ, গান ও আবৃত্তির অনুষ্ঠান ছিল সন্ধ্যায়।’’ এলাকার রবীন্দ্র অনুরাগী, অভিভাবক ও শিক্ষিকারা হাজির ছিলেন রাতের ওই অনুষ্ঠানে। জামবুনী এলাকায় কবি প্রণামের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিল এলাকার নাট্যদল ‘আমরা সবুজ।’
তবে, রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত বোলপুর এলাকায় নজরে পড়ল না মহকুমা প্রশাসন ও তথ্য সংস্কৃতি দফতরের রবীন্দ্র জন্মোৎসবের কোনও উদ্যোগ।
সাঁইথিয়ায় রবীন্দ্রজয়ন্তী
সচরাচর এলাকার পড়ুয়া, নাট্যদল ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের নিয়ে এমন দিনে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে মহকুমা তথ্য সংস্কৃতি দফতর। এবার কি বিধানসভা নির্বাচনের কোপ পড়ল রবীন্দ্র জন্মোৎসবে? এমনটাই এলাকার বাসিন্দাদের প্রশ্ন। এলাকার রবীন্দ্র অনুরাগীদের অভিযোগ, কবির জন্মদিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করাটাই বরাবরের রীতি। এমন ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। যদিও বোলপুরের মহকুমাশাসক শম্পা হাজরা মোবাইল ফোন ধরেননি এবং এসএমএসের উত্তরও দেননি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, নির্বাচন আচরণ বিধি থাকায় নতুন করে কোনও বিতর্কে জড়াতে চাইছে না জেলা প্রশাসন। তাই বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর হয়ত, রবীন্দ্র জন্মোৎসব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। মহকুমা তথ্য সংস্কৃতি আধিকারিক মহুয়া মল্লিক অবশ্য এই প্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে রাজি হননি।
জেলাজুড়েই এ দিন রবীন্দ্র-জন্মোৎসবে মেতেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সাঁইথিয়াতে কবির জন্মদিনে নৃত্যে মাতে শহরের মেয়েরা। প্রতিবারের মতো এ দিনও নানা রকমের অনুষ্ঠান ছিল ‘কল্পনা স্মৃতি নৃত্যায়ন’-য়ের। ‘এসো হে বৈশাখ’ গানের সঙ্গে নৃত্য করতে করতে শহর পরিক্রমার আয়োজন করে তারা। সংস্থার পক্ষে প্রিতম দাস বলেন, ‘‘সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা রেশমী চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই এবারে এমন ভিন্ন স্বাদের রবীন্দ্রনুষ্ঠান করা সম্ভব হল।’’
কবির জন্ম দিনে ছোট ছোট শিশুদের হাতে বই পেন তুলে দিল রামপুরহাট পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কংগ্রেস কমিটি। ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক সাহজাদা কিনু জানান, রবীন্দ্রনাথের জন্ম দিনে শিশুদের মধ্যে আনন্দ দান করার জন্য এলাকার দুঃস্থ গরীব শিশুদের মধ্যে বই পেন বিতরণ করা হয়। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সব্জি বাজার সংলগ্ন এলাকায় অনুষ্ঠান হয়। রবীন্দ্র কবিতা ও গান পরিবেশিত হয়। এ ছাড়া রামপুরহাট ‘চারুকলা’ অঙ্কন শিক্ষা কেন্দ্রের উদ্যোগে জিতেন্দ্রলাল পৌর মন্দিরে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করা হয়।
—নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy