মুক্তিনারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের হাতে চেক দেওয়া হল। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
শুক্রবার সকাল ১০টা। সিউড়ির ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সেহেড়াপাড়ার বাসিন্দা, নবতিপর মুক্তিনারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে হাজির অ্যাসিস্ট্যান্ট পোস্টাল সুপার (বীরভূম ডিভিশন) উজ্জ্বল কুণ্ডু। ঠিক একই সময় রামপুরহাটের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পার্থনারায়ণ বিশ্বাসের বাড়িতে হাজির পোস্টাল সুপার (বীরভূম ডিভিশন) নাজমুল হক চৌধুরী। তাঁদের সঙ্গী আরও কয়েক জন আধিকারিক। দুই ক্ষেত্রেই উদ্দেশ্য, দুই অবসরপ্রাপ্ত টেলিকম কর্মীর হাতে পেনশন তুলে দেওয়া।
শুধু মুক্তিনারায়ণ বা পার্থনারায়ণই নন, করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যে আশি বছরের বেশি বীরভূম জেলার মোট ২৫ জন পেনশনভোগীর বাড়িতে পেনশনের টাকা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল ডাকবিভাগ। শুধু তাই নয়, করোনা সংক্রমণে যাঁদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি, সেই প্রবীণ পেনশনভোগীদের জন্য জেলার বিভিন্ন ডাকঘরে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
অত্যাবশ্যক পরিষেবা হলেও, লকডাউনের সময় কর্মীর অভাবে দেশ জুড়ে অধিকাংশ ডাকঘরই খোলা ছিল না। ফলে মার্চের পেনশন এপ্রিলের শুরুতে কী ভাবে ডাকঘরে গিয়ে তুলবেন, তা নিয়ে প্রবীণদের মধ্যে সংশয় দেখা গিয়েছিল। তাঁদের সুবিধা-অসুবিধা মাথায় রেখে এবং ভিড় এড়াতে ওই পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার একগুচ্ছ পরিকল্পনা করেছে ডাক বিভাগ, সে কথা ৩০ মার্চ জানিয়েছিলেন চিফ পোস্ট মাস্টার জেনারেল (ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কল) গৌতম ভট্টাচার্য । সেটাই এ দিন দেখা গেল জেলার বিভিন্ন ডাকঘরে।
ডাক বিভাগ সূত্রে খবর, জেলায় সিউড়ি ও রামপুরহাট, এই দু’টি হেড পোস্ট অফিস ও সাব পোস্ট অফিস মিলিয়ে মোট ডাকঘরের সংখ্যা ৬১টি। কিন্তু খুব কম সংখ্যক ডাকঘরই খোলা ছিল। পেনশন হয় যে-সব ডাকঘর থেকে, তেমন ৩৩টি ডাকঘর এ দিন খোলা ছিল পেনশেনভোগীদের জন্যই। আশি বছরের বেশি বয়স্ক পেনশনভোগীদের বাড়িতে পেনশন পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ভিড় এড়াতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে প্রবীণদের বসার জায়গা, একাধিক কাউন্টার, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। বড় ডাকঘর, যেখানে ভিড় হয় মাসের প্রথম দিকে, সেগুলিকে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থাও গত ক’দিনে নিয়েছিল ডাক বিভাগ। ডাক-কর্তারা বলছেন, আজ, শনিবার একই ভাবে পরিষেবা দেওয়া হবে। সেজন্য আগে থেকে বিভিন্ন ভাবে পেনশনভোগীদের খবর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ডাক বিভাগের এমন উদ্যেগে খুশি প্রবীণ নাগরিকেরা।
ডাক বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার বিভিন্ন ডাকঘরের উপর নির্ভরশীল পেনশনভোগীর সংখ্যা ৮৪৩। তাঁদের মধ্যে পাসবুক বা ডাকঘর সেভিংস অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পেনশন নেন ১৫৮ জন। আশি বছরের বেশি বয়সের পেনশনভোগী রয়েছেন ৩৯ জন। তাঁদের মধ্যে শুক্রবারই ৪৮২ জন পেনশন পেয়ে গিয়েছেন। এ দিন বাড়িতে গিয়ে পেনশন পৌঁছে দেওয়া হয়েছে২৫ জনকে। বাকিদের শনিবার দেওয়া হবে।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ১ ও ২ এপ্রিল বার্ষিক ব্যাঙ্ক ক্লোজ়িং ডে ছিল। শুক্রবার ও শনিবার তাই পেনশন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হল। রবি ও সোমবার ফের ডাকবিভাগ বন্ধ থাকছে। তবে ৭ তারিখ থেকে জেলার প্রায় সব ডাকঘর খুলে অন্যান্য সমস্ত পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা হবে। সব ধরনের আর্থিক লেনদেনও করা যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy