তালায় ঝুলছে চাবি। তবে দোকান বন্ধ সিউড়িতে।—ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
তিন জন কোভিড-১৯ রোগীর সন্ধান মেলায় বীরভূম ‘গ্রিন’ জ়োন থেকে ‘অরেঞ্জ’ হয়েছে। করোনা সংক্রামিত ‘রেড’ ও ‘অরেঞ্জ’ জ়োনে কী কী ছাড় রয়েছে, কোন কোন দোকান খোলা যাবে— সোমবার সে ব্যাপারে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা দেয়। তাতে বলা হয়েছে, ‘কন্টেনমেন্ট’ এলাকাগুলি পুরোদস্তুর লকডাউনের আওতায় থাকবে। কিন্তু, ওই এলাকার বাইরে বিধি নিষেধ মেনে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়াও ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা যাবে অন্যান্য অনেক ‘স্বতন্ত্র’ বা ‘স্ট্যান্ড অ্যালোন’ দোকান।
মঙ্গলবার থেকেই এই নির্দেশ কার্যকর করার কথা ছিল। কিন্তু, বীরভূমের পুর ও গ্রামাঞ্চলে ‘স্ট্যান্ড অ্যালোন’ দোকানপাট কোনগুলি হবে, সেটা নিয়ে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত পেতেই পেরিয়ে গেল গোটা দিন। মাঝে বিভ্রান্তির জেরে জেলার অধিকাংশ ব্যবসায়ীই এ দিন দোকানপাট খোলার সাহস দেখাননি। যে বা যাঁরা বই, মনোহারি, হার্ডওয়্যার, চা-পানের দোকান খোলার চেষ্টা করেছিলেন, পুলিশের বাধা পেয়ে দোকান বন্ধ করে দিয়েছেন। এটা নিয়ে অসন্তোষ ছড়িয়েছে জেলার বণিক মহলে। যদিও জেলার পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলছেন, ‘‘সরকারি নির্দেশে যা বলা হয়েছে , তার বাইরে কেউ দোকান খুলে থাকলে সেটা বন্ধ করতে বলা হয়েছে। ‘স্ট্যান্ড অ্যালোন’ দোকান খুললে সেটা বন্ধ করা হয়নি।’’
দোকানপাট খোলা নিয়ে এ দিন জেলা প্রশাসন ভবনে এই নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। ছিলেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু, জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ, জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ, তিন মহকুমাশাসক, বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, পরিবহণ আধিকারিক প্রমুখ।
সূত্রের খবর, বৈঠকে ঠিক হয়েছে, অত্যাবশ্যক পণ্যের বাইরে ‘স্ট্যান্ড অ্যালোন’ দোকান খুলবে আজ, বুধবার থেকে। কিন্তু দোকানটি স্বতন্ত্র কিনা, সেটা ব্যবসায়ী নিজে ঠিক করবেন না। পুর ও পঞ্চায়েত এলাকায় তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব পৃথক ভাবে পালন করবে একটি কমিটি। পুর-এলাকার কমিটিতে থাকছেন মহকুমাশাসক, স্থানীয় থানার আইসি, পুরপ্রতিনিধি। পঞ্চায়েত বা গ্রামীণ এলাকায় কমিটির মধ্যে থাকবেন বিডিও, স্থানীয় থানার ওসি এবং পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধি। ব্যবসায়ীর আবেদন মঞ্জুর হলে তবেই খোলা যাবে দোকান।
দোকান খোলার পাশাপাশি শিল্পাঞ্চল খুলে রাখার শর্ত কী হবে, খনি এলাকায় ছাড় দেওয়া, রাস্তা বা নির্মাণকাজ চালু করা, পণ্য পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত যানবাহনগুলির কোন ছাড়পত্র প্রয়োজন, প্রাইভেট গাড়ি চলাচল-সহ রেড ও অরেঞ্জ জ়োনে বাস বন্ধ রাখা-সহ সরকারি নির্দেশিকায় যা যা রয়েছে, সে সব নিয়েই পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ কথা জানান অভিজিৎবাবু।
জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, সোজা কথায় গ্রামাঞ্চলে, শহরের কোনও পাড়ায় বা গলির মধ্যে আলাদা ভাবে যে-সব দোকান রয়েছে, স্রেফ সেগুলি খোলার ব্যাপারেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। খুলবে হার্ডওয়ার, চা ও পানের দোকান। তবে একই ভবনে ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকা দোকান খোলার সম্মতি মিলবে না। পাশাপাশি দু’টি দোকানের একটি যদি অত্যাবশ্যক পণ্যের হয় পাশেরটি খুলবে কিনা, সেটাও কমিটি খতিয়ে দেখবে।
তবে সিউড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কিষান পাল বলেন, ‘‘হয় দোকান খুলবে, নয় খুলবে না। এটা প্রহসন ছাড়া কী! শহরে এ ভাবে ‘স্বতন্ত্র’ দোকান খোঁজা যায় নাকি? মার্কেট কমপ্লেক্সের মধ্যে না থাকলেও ৯৫ শতাংশ দোকান একে অপরের গায়ে লেগে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy