পুরসভার সামনে। নিজস্ব চিত্র
ছোট ছোট দল তৈরি করে ক্ষুদ্র ঋণ দিয়েছে কিছু বেসরকারি সংস্থা। স্বনির্ভর হয়ে উঠতে সেই টাকায় নানা রকমের কাজ করেন বিষ্ণুপুর শহরের অনেক মহিলা। করোনা-সঙ্কটে কাজ বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে ফোনে ঋণের কিস্তি মেটানোর জন্য তাগাদা দেওয়ার অভিযোগ উঠল। তবে সংস্থাগুলির দাবি, তারা এমন কিছু করেনি। কিস্তি নিতে কেউ পাড়ায় হাজির হলে, সঙ্গে সঙ্গে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার পুরসভা ও মহকুমা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা করেছেন শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাদাকুলি পাড়ার কিছু মহিলা। কেউ তসর থেকে সুতো কাটেন, কেউ ঘুরে-ঘুরে মাছ বিক্রি করেন, কারও রয়েছে চপের দোকান। ঋণ শোধ করার জন্য তাঁরা যাতে পর্যাপ্ত সময় পান, সেই দাবি তুলেছেন তাঁরা। মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল বলেন, “গোষ্ঠীর মহিলাদের অভিযোগ পেয়েছি। সংস্থাগুলির সঙ্গে কথাও হয়েছে। ঋণ নেওয়া কাউকে ফোনে কিস্তি আদায়ের জন্য চাপ দেওয়া হলে সরাসরি প্রশাসনের কাছে আসতে বলা হয়েছে।’’
৩০ থেকে ৫০ জনের দল গঠন করে টাকা দেয় ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থাগুলি। শর্ত থাকে, কেউ ঋণ খেলাপ করলে দলের বাকিরা শোধ করতে বাধ্য থাকবেন। কোনও সংস্থা প্রতি সপ্তাহে, কোনও সংস্থা পনেরো দিন অন্তর বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিস্তি আদায় করে। কাদাকুলিপাড়ার ময়না মাঝি, আলপনা মাঝি, মিঠু মণ্ডল, বুল্টি মাঝি, ঝর্না মাঝিদের অভিযোগ, তাঁদের কাছে প্রায়ই ফোন আসছে। জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, কবে কিস্তির টাকা আনতে বাড়িতে লোক পাঠানো হবে? কোনও ফোনে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে কিস্তির টাকা জমা করতে বলা হচ্ছে। তাঁরা বলেন, ‘‘এত দিন সময়মতো কিস্তি দিয়েছি। এখন সব কাজ বন্ধ। কিছুটা সময় চাইছি।’’
একটি ক্ষুদ্র-ঋণ সংস্থার তরফে তুষার মহন্তের বক্তব্য, ‘‘গোষ্ঠীর মহিলাদের জানানো হয়েছে, তাঁরা টাকা তুলতে বা জমা দিতে পারবেন। তবে চাপ দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা।’’ তাঁর দাবি, কিস্তির টাকা নিতে কেউ বাড়ি চলে গেলে ,তখনই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্য একটি সংস্থার তরফে ধ্রুবনাথ সামন্ত বলেন, “লকডাউনে অফিস বন্ধ। আমরা কেউ বিষ্ণুপুরে নেই। অনলাইনেও কিস্তি নিচ্ছি না।’’
যে মহিলারা এ ভাবে ঋণ নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই পুরসভা-স্বীকৃত স্বনির্ভর গোষ্ঠীরও সদস্য। পুরসভা সূত্রের খবর, ব্যাঙ্ক থেকে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পেতে পারেন তাঁরা। কিন্তু প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়া ওই মহিলাদের অভিযোগ, নানা ‘জটিলতায়’ তেমন কিছু পাননি। প্রায় ১৬ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে হয়েছে এই সমস্ত সংস্থার থেকে।
কেন ব্যাঙ্কের ঋণ পাননি? বিষ্ণুপুর পুরসভার সিটি মিশন ম্যানেজার তারক দাসের দাবি, শহরের ৩৮০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘খাতাপত্র ঠিক রাখা, প্রতি মাসে বৈঠক করার মতো নানা নিয়মকানুন এখনও কিছু গোষ্ঠী রপ্ত করতে পারেনি। তাই ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ে যান তাঁরা। সেটা কাটিয়ে ওঠার জন্য নিয়মিত
চেষ্টা চলছে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy