মেলার মাঠ ঘেরার কাজ শুরু হল সোমবার, (ইনসেটে) জমায়েতের ডাক দিয়ে প্রচার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
পৌষমেলার মাঠে আবারও শুরু হল ঘেরার কাজ। হাইকোর্ট নির্বাচিত চার সদস্যের কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার থেকে নতুন করে ওই কাজ শুরু করল বিশ্বভারতী। এ দিন সকাল ৯টায় বিরাট সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করে মাঠ ঘেরার কাজ শুরু করেন কর্তৃপক্ষ। বিকেল পর্যন্ত নির্বিবাদেই হয়েছে কাজ। ১৫ অগস্ট বিশ্বভারতী প্রথম মেলার মাঠ ঘেরার কাজ শুরু করে। ১৭ অগস্ট বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি, স্থানীয় বাসিন্দা ও আশেপাশের গ্রামের বহু মানুষ এসে পাঁচিল তৈরির সরঞ্জাম ভাঙচুর করে মেলার প্রবেশদ্বার ভেঙে দেয় পে-লোডার দিয়ে। কলকাতা হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করে চার সদস্যের কমিটি তৈরি করে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, বীরভূম জেলা প্রশাসন, আশ্রমিক, পড়ুয়া, স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী সমিতি সহ সকলের সঙ্গে আলোচনা করে শেষ
পর্যন্ত মাঠ ঘেরার পক্ষেই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে কমিটি। রবিবার বিশ্বভারতী ও বীরভূম জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পরেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত সামনে আসতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে বিভিন্ন পক্ষ থেকে। বিশিষ্ট আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, “পাঁচিল নয়, বেড়া দেওয়া হচ্ছে। আর, বিচারকরা যখন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তখন তা সব দিক বিবেচনা করেই নিয়েছেন। এতে আমার আপত্তি নেই।” জানা গিয়েছে, পাঁচিল বেড়া দুইই
তৈরি হতে চলেছে। মাটি থেকে আড়াই ফুট পাঁচিল, তার উপরে ৬-৭ ফুট লোহার রেলিং দেওয়া হবে। যদিও এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর তরফে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। বর্ষীয়ান আইনজীবী তথা মেলার মাঠ বাঁচাও কমিটির সদস্য শৈলেন মিশ্র বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই মেলার মাঠ ঘেরার বিপক্ষে। প্রয়োজনে আইনি পথেই এর বিরোধিতা করা হবে।”
মুখ খুলেছেন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্তও। ফেন্সিং করার ব্যাপারে বিশ্বভারতীর অতি সক্রিয়তা এবং অন্য জরুরি বিষয়ে নিষ্ক্রিয়তার বিষয়টি তুলে সরব হয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘গ্রিন ট্রাইব্যুনাল ও হাইকোর্ট আইনের চোখে সমমর্যাদাসম্পন্ন। পরিবেশ আদালতের কোনও রায় নিয়ে হাইকোর্ট কোনও ফয়সালা দিতে পারে না। একমাত্র সুপ্রিম কোর্টই এই বিষয়ে রায় প্রদান করতে পারে। বিচারকেরা এটা ভুল করেছেন। হাইকোর্টের এই বিষয়ে এক্তিয়ারই নেই।’’ ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে আমিনুল হুদা বলেন, “বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কমিটির রায়কে প্রভাবিত করেছেন বলেই আমাদের বিশ্বাস। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাচ্ছি। সেখান থেকে কোনও সাড়া না পেলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলনের রাস্তা বেছে নেওয়া হবে।”
বিশ্বভারতীর পড়ুয়া তথা এসএফআই সদস্য সোমনাথ সৌ বলেন, “কর্তৃপক্ষ পঠনপাঠন বন্ধ থাকাকালীন একের পর এক এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, যা বিশ্বভারতীর স্বার্থবিরোধী।” পড়ুয়ারা ক্যাম্পাসে ফিরে এলেই জনমত গঠন করে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে এসএফআই। বিশ্বভারতী অবশ্য এ দিন সন্ধ্যায় প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ন্যাশানাল গ্রিন ট্রাইবুন্যালের নির্দেশ মেনেই ঘেরার কাজ শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy