এলাকায় শুধু তৃণমূলেরই পতাকা। কোতুলপুরের গোপীনাথপুর পঞ্চায়েত এলাকায়। ছবি: অভিজিৎ অধিকারী
শাসক বদলায়, বদলায় না পরিস্থিতি। ভোট না হওয়ার অলিখিত ‘প্রথা’ এ বারও বদলাল না বাঁকুড়ার বিষ্ণুুপুর মহকুমার পাত্রসায়র, জয়পুর, কোতুলপুর ও ইন্দাস ব্লকে।
বিরোধী প্রার্থী না থাকায় ইতিমধ্যে ওই চারটি ব্লকের পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির বেশির ভাগ আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। বিজয় উল্লাসও শুরু হয়েছে। তবে ভোট দিতে না পারার আক্ষেপ চাপা থাকছে না ভোটারদের। গ্রামে গ্রামে কান পাতলে এ নিয়ে ক্ষোভ শোনা যাচ্ছে। প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও আড়ালে ক্ষোভের কথা মানছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বও।
পাত্রসায়রের বেলুট-রসুলপুর পঞ্চায়েতের গ্রামবেড়ার এক যুবক বলেছিলেন, “গ্রামে ঢোকার মূল রাস্তা চলাফেরার যোগ্য নয়। পঞ্চায়েতে বারবার জানিয়েও সমস্যা মেটেনি। ভোটই আমাদের প্রতিবাদ জানানোর জায়গা ছিল।” একই সুরে পাত্রসায়রের বালসি ১ পঞ্চায়েতের বামিরা গ্রামের এক তরুণী বলেন, “একশো দিনের কাজের টাকা না পাওয়া, আবাস যোজনা থেকে বঞ্চিত করা, পঞ্চায়েতে দুর্নীতির প্রতিবাদ ভোটেই জানাতাম। তা হল না।” ইন্দাসের আকুই ১ পঞ্চায়েতের বাসিন্দা এক প্রৌঢ়, জয়পুরের ময়নাপুর পঞ্চায়েতের এক চাষির আবার প্রশ্ন, “রাজ্য সরকার তো মানুষের জন্য অনেক কিছু করেছে বলে দাবি করে। কৃষক থেকে গৃহবধূ, ছাত্রী থেকে যুবতী—সকলে নানা সুবিধা পাচ্ছে। তার পরেও ভোটেভয় কীসের?”
মে মাসে নবজোয়ার কর্মসূচিতে বাঁকুড়ায় এসে দলের সাধারণ সম্পাক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মীদের কাছে শুনেছিলেন, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষের ভোট দিতে না পারার কারণেই লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে দল বাঁকুড়ায় হেরেছিল। এ বারেও ছবিটা বদলাল কই, প্রশ্ন বিভিন্ন মহলের। এর প্রভাব কি পড়বে আগামী ভোটে?
কোতুলপুরের গোপীনাথপুর পঞ্চায়েতের এক বাসিন্দার স্পষ্ট জবাব, “গ্রামে পানীয় জল নেই। রাস্তাঘাট খারাপ। বারবার পঞ্চায়েতে ক্ষোভ জানালেও কাজ হয়নি। পঞ্চায়েতে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলাম না। তবে লোকসভা, বিধানসভার ভোটে তো কেউ আটকাতে পারবে না।”
পঞ্চায়েতে ভোট দিতে না পারায় মানুষের ক্ষোভের আঁচ লোকসভায় তৃণমূল টের পাবে বলে দাবি বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-রও। তিনি বলেন, “গণতন্ত্রে এ ভাবে মানুষকে দমিয়ে রাখা যায় না। পঞ্চায়েতের জবাবলোকসভায় দেবে মানুষ।” সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতিও বলেন, “জোর করে ক্ষমতা দখলের এই রাজনীতি বাংলার মানুষ মেনে নেবেন না।” তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, “বিরোধীদের সংগঠন নেই বলেই তারা প্রার্থী দিতে পারেননি। কোথাও কাউকে আটকানো হয়নি। আর মানুষের কোথায় কী সমস্যা রয়েছে, তা ঘরে ঘরে গিয়ে আমাদের জনপ্রতিনিধিরা শুনে আসবেন।”(চলবে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy