ধর্নায় বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সঙ্গে আছেন শিক্ষকেরা। বুধবার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে। নিজস্ব চিত্র।
পুলিশি ‘নির্যাতনের’ প্রতিবাদে বুধবার বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে বিশ্বভারতীর আধিকারিক, অধ্যাপক, কর্মীদের নিয়ে কয়েক ঘণ্টার ধর্নায় বসলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। পাশাপাশি, এ দিনের বর্ষামঙ্গলের অনুষ্ঠানও বাতিল করল বিশ্বভারতী। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানান, পুলিশের ‘অতিসক্রিয়তার’ কারণে অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হল। এ নিয়ে ক্ষোভ ছড়ায় পড়ুয়াদের মধ্যে।
প্রসঙ্গত, তাঁদের সঙ্গে ‘যৌন হেনস্থা’ করা হয়েছে এই অভিযোগে কয়েক জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে নাম না করে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন বিশ্বভারতীর একটি ভবনের দু’জন ছাত্রী। পাশাপাশি, এক শিক্ষকের নাম করে বেনামে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে ইমেলও করা হয়েছিল। যদিও তা ‘তুচ্ছ’ বলে দাবি করেছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক কৌশিক ভট্টাচার্য সোমবার অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টিকে যাঁরা ‘সমর্থন’ করছেন যেমন উপাচার্য, জনসংযোগ আধিকারিক, সঙ্গীত ভবনের অধ্যক্ষ-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানান ওই অধ্যাপক। এই অভিযোগের তদন্তেই এ দিন শান্তিনিকেতন থানা থেকে পুলিশ আধিকারিকেরা বিশ্বভারতীতে যান।
এ দিন উপাচার্য বলেন, ‘‘তিন জন শিক্ষক, দু’জন ছাত্র যাঁরা অবিরাম বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে দুর্নাম করে যাচ্ছেন। তাঁরা সে অর্থে বিশ্বভারতীর ছাত্র নন, মাস্টারমশাইও নন। বিশ্বভারতীর যে দর্শন তা তাঁরা কিছুই বুঝতে পারেননি।’’
উপাচার্যের অভিযোগ, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে কোনও জেনারেল ডাইরি করা হলে সঙ্গে সঙ্গে সেটি এফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। অথচ আমরা যদি কোনও জেনারেল ডাইরি করি, সেটা এফআইআর হিসেবে গণ্য হয় না। একটা ফেসবুক পোস্টের কোনও সত্যতা আছে কি না কেউ জানে না। অথচ পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢুকে যাচ্ছে।’’ উপাচার্যের আশঙ্কা, ‘‘বিশ্বভারতীকে ধ্বংস করার জন্য অনেক শক্তি কাজ করছে। তার মধ্যে পুলিশের একটা শক্তি আছে। পুলিশের এই ভূমিকার পিছনে একটি বিধ্বংসী মনোভাবের পরিচয় আমরা পাচ্ছি।’’
রাজ্যের নেত্রী এসেও তাঁকে অনেক ভাবে অপমান করে গিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন উপাচার্য। উপাচার্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গও টেনে আনেন। তিনি বলেন, ‘‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার পুলিশের কোনও ক্ষমতা নেই। কিন্তু বিশ্বভারতীতে একটি ভিত্তিহীন ফেসবুক পোস্টে মাস্টারমশায় থেকে শুরু করে সমগ্র বিশ্বভারতী অপমানিত হল সেখানে কারও ভ্রুক্ষেপ নেই।’’
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তিনি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করেন। সেটা সবাই জানে। তার জন্য উনি দলনেত্রী সম্বন্ধে এই ধরনের মন্তব্য করছেন।’’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বোলপুর ) সুরজিৎকুমার দে বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে। তাই পুলিশ তদন্তে গিয়েছে। কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলেছে। এটি পুলিশের তদন্তের মধ্যেই পড়ে।’’
অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘উনি শিক্ষকদের উপর সিসিএস আইন বেআইনি ভাবে চাপিয়ে দিয়েছেন। অথচ নিজে ধর্না অবস্থানে বসে নিজেই সেই আইন ভঙ্গ করেছেন। আমরা রাষ্ট্রপতিকে জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy