বিশ্বভারতীতে আন্দোলন চলবেই, সাফ জানালেন পড়ুয়ারা। —ফাইল চিত্র।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ইস্তফার দাবিতে এখনও অনড় আন্দোলনকারী তিন পড়ুয়া। তাঁদের দাবি, আদালতের নির্দেশে ক্লাসে ফিরলেও তাঁদের শিক্ষাবর্ষ নষ্ট হয়েছে। এমনকি, ছাঁটাই করা শিক্ষকদেরও ফিরিয়ে নেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থির পরিবেশ তৈরি করেছেন উপাচার্য। ফলে বিদ্যুতের পদত্যাগ পর্যন্ত নিজেদের অবস্থানে বদল হবে না। যদিও আদালতের পর্যবেক্ষণ, পড়ুয়াদের আন্দোলনে বহিরাগতদের ইন্ধন রয়েছে। তবে পড়ুয়াদের মতে, ‘বহিরাগত’ শব্দটি বিশ্বভারতীর-সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খায় না।
পড়ুয়াদের ক্লাসে ফেরানোর নির্দেশে সত্ত্বেও তা কার্যকর করা হয়নি বলে দাবি করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালত আবমাননার মামলা করেছিলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী ছাত্র সোমনাথ সৌ। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে তার শুনানিতে বিচারপতি রাজশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ, ‘‘বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আন্দোলনে ইন্ধন জোগাচ্ছেন বহিরাগতরা। ছাত্রদের বুঝতে হবে যে, এই রাজনীতির কারবারিরা নিজেদের স্বার্থে তাঁদের ব্যবহার করে ছুড়ে ফেলে দেবেন। তাই এ সব করার আগে যে কাজের জন্য তাঁরা বিশ্বভারতীতে রয়েছেন অর্থাৎ পঠনপাঠন, তার উপর জোর দেওয়া উচিত।’’
তবে আদালতের এই পর্যবেক্ষণকে সম্মান জানালেও উপাচার্যের বিরুদ্ধে পড়ুয়াদের নমনীয় হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আন্দোলনকারী ছাত্র ফাল্গুনী পান বলেন, “আমাদের তিনটি দাবির মধ্যে একটি দাবি মানা হয়েছে অর্থাৎ তিন পড়ুয়াকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তবে বাকি দু’টি দাবি, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রত্যাহার করা হয়নি এবং উপাচার্যও পদত্যাগ করেননি। ফলে উপাচার্যের পদত্যাগ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।” সেই সঙ্গে ফাল্গুনীর আরও দাবি, ‘‘বিশ্বভারতীর নামের মধ্যে ‘বিশ্ব’ এবং ‘ভারতী’ এই শব্দ দু’টি রয়েছে। ফলে বিশ্বভারতীর ক্ষেত্রে 'বহিরাগত' শব্দটি খাটে না।’’ এক আন্দোলনকারী রূপা চক্রবর্তীর মতে, ‘‘আমরা ন্যায়ের জন্য লড়ছিলাম। বিশ্বভারতীর প্রতি সংবেদনশীল সকলেই আমাদের সঙ্গ দিয়েছেন।’’
তিন পড়ুয়াকে ক্লাসে ফেরানো নিয়ে বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ খারিজ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট সময়ে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে ফের ক্লাসে ফিরতে পারবেন তাঁরা। এ ছাড়া যে সব অধ্যাপকদের সাসপেন্ড করা হয়েছে বা ছাঁটাই করা হয়েছে, তাঁদের বিষয়টিও পুনরায় বিবেচনা করবে বলে আদালতকে জানিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তা সত্ত্বেও বুধবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে নমনীয় মনোভাব দেখানোর কথা বলেছেন বিচারপতি মান্থা। তিনি বলেন, ‘‘এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, একটা বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যকে ক্রমাগত নীচের দিকে টেনে নামানোর চেষ্টা হচ্ছে। এতে কোনও পক্ষই দায় অস্বীকার করতে পারে না। উপাচার্য এবং প্রশাসনিক কর্তাদের আরও নমনীয় হয়ে অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy