স্মৃতিবিজড়িত: শান্তিদেব ঘোষের বাড়ির সামনে সেই কাঠবাদাম গাছ। শান্তিনিকেতনে। নিজস্ব চিত্র
বিশ্বভারতীর সঙ্গীতভবনের গেট দিয়ে ঢুকলেই ডান দিকে শান্তিদেব ঘোষের বাড়ি। সঙ্গীতভবন যাওয়ার যে রাস্তা তার ধারে, শান্তিদেব ঘোষের বাড়ির সামনেই দাঁড়িয়ে কাঠবাদাম গাছ। সকলে বলে, তার বয়স একশোর আশপাশে।
বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, ক্যাম্পাস এলাকা থেকে সাধারণের যাতায়াতের পথ আলাদা করার জন্য সঙ্গীতভবনের রাস্তা অক্ষত রেখে তার পাশ দিয়ে নতুন একটি সড়ক তৈরি হতে চলেছে।
নতুন রাস্তা তৈরি করতে ওই কাঠবাদাম গাছ কাটা পড়তে পারে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর ছড়িয়েছিল। তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন প্রবীণ আশ্রমিক এবং বিশ্বভারতীর প্রাক্তনীদের একাংশ।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তবে নতুন রাস্তা হওয়ার জন্য এই কাঠবাদাম গাছ কোনও ভাবেই কাটা পড়বে না বলে আশ্বস্ত করল বিশ্বভারতীর সম্পত্তি বিভাগ। এমনকী কয়েক জায়গায় গাছ বাঁচানোর জন্য রাস্তা ঘুরিয়ে পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
বিশ্বভারতীর যুগ্ম কর্মসচিব তথা কেন্দ্রীয় সরকার নিযুক্ত সম্পত্তি আধিকারিক অশোককুমার মাহাতো এ বিষয়ে বলেন, ‘‘আমরাও গাছ কাটার চরমতম বিরোধী। ওই রাস্তা হওয়ার জন্য যত কম সম্ভব গাছ কাটা যায়, সে জন্য দীর্ঘ পরিকল্পনা করা হয়েছে। নিতান্তই যেখানে কোনও উপায় নেই, সেখানেই গাছ কাটা হবে। তবে তার মধ্যে কাঠবাদাম গাছটি নেই। বরং গাছ থেকে বেশ কিছুটা দূরে নতুন রাস্তা তৈরি করা হবে।’’ অশোকবাবু আরও জানান, একটি নাগকেশর গাছ বাঁচানোর জন্য এক জায়গায় রাস্তার প্রস্তাবিত নকশা বদলে দেওয়া হয়েছে। বটগাছ বাঁচাতে জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছে।
বিশ্বভারতীর উদ্যান বিভাগের অধিক্ষক সঞ্জীব মণ্ডলের কথায়, ‘‘আমরা শুক্রবারই ওই এলাকা পরিদর্শন করেছি। কাঠবাদাম গাছটি কাটার কোনও প্রশ্নই উঠছে না।’’ তিনি জানান, প্রতিমা ছাত্রীনিবাসের পিছনে থাকা একটি আমগাছ বাঁচানোর জন্য সেখানকার রাস্তা দু’লেনের করে দেওয়া হয়েছে। রাস্তার মাঝখানে থাকবে আমগাছটি। দেড় কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে চার জায়গায় মোড় ঘোরানো হয়েছে, শুধুমাত্র গাছ বাঁচানোর জন্যই। তবে চার-পাঁচটি গাছ কাটা পড়তে পারে বলে তাঁর মত। তাঁর মন্তব্য, ‘‘সেগুলি না কাটার কোনও উপায় নেই। তবে এখনও সেই তালিকা তৈরি করা হয়নি। প্রাথমিক ভাবে সেই গাছগুলি চিহ্নিত করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। এর পরে বন দফতরের অনুমোদন মিললে তবেই সেগুলি কাটা হতে পারে।’’ বন দফতরের অনুমোদন না মিললে অন্য ভাবে রাস্তা বের করার কথা ভাববে বিশ্বভারতী।
সম্পত্তি বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তিনিকেতন রোড থেকে মেলার মাঠে ঢোকার রাস্তার বিপরীতে একটি লজের পাশ থেকে নতুন রাস্তার কাজ শুরু হবে। ভুবনডাঙা বাঁধের পাশ দিয়ে গিয়ে হাতিপুকুর হয়ে সুরেন্দ্রনাথ করের বাড়ির গা ঘেঁষে তা যাবে সঙ্গীতভবন ঢোকার রাস্তা পর্যন্ত। প্রায় ১.৫ কিলোমিটার লম্বা এবং ৫.৫ মিটার চওড়া হবে রাস্তাটি। এই রাস্তা হয়ে গেলে ক্যাম্পাস এলাকার সঙ্গে সাধারণের চলাচলের রাস্তা আলাদা হয়ে যাবে। বেশ কিছু জায়গায় জমিই রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। তারও আর প্রয়োজন হবে না।
শ্রীনিকেতন যাওয়ার ক্ষেত্রেও ওই নবনির্মিত রাস্তা সুবিধাজনক হবে বলেই মনে করছেন আধিকারিকেরা। রাস্তার পাশাপাশি তাতে আলো, নিকাশি এবং বেড়া দেওয়ার কাজও একই প্রকল্পে রয়েছে। এর ফলে মূল রাস্তা ছাড়াও আরও ১.৫ মিটার জায়গা রাস্তার পাশে রাখতে হবে। তবে রাস্তা তৈরি হয়ে গেলে পড়ুয়া থেকে
আশ্রমিক, পর্যটকদেরও সুবিধা হবে বলেই ধারণা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। ২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের রূপায়ণে গাছ নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা। (চলবে)ৈ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy