পথে: গ্রামে মদের দোকান চালু করতে না দেওয়ার দাবি নিয়ে শহরে নদিয়াড়ার মহিলারা। ছবি: সুজিত মাহাতো
মদের দোকান নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের আপত্তি লেগেই রয়েছে জেলার বিভিন্ন এলাকায়। শনিবার পুরুলিয়া শহরে এসে পুলিশ ও প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন নদিয়া়ড়া গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁরা জানান, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র, কবরস্থান, খেলাই চণ্ডীর মেলার মাঠ ইত্যাদির কাছেই গড়ে উঠেছে নতুন মদের দোকান। প্রশাসন ওই জায়গায় মদ বিক্রি করার ছাড়পত্র কোন যুক্তিতে দিল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কের পাশে মদের দোকান রাখা যাবে না— সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের জেরে পুরুলিয়া শহর থেকে ওই দোকনটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি পুরুলিয়া মফস্সল থানা এলাকার নদিয়াড়া গ্রামে নদিয়াড়া-চন্দনকেয়ারি রাস্তার পাশে নতুন করে চালু হয়। খোলার কয়েক দিনের মধ্যেই ওই দোকানে ভাংচুর চালান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তার পরে দোকান বন্ধ ছিল। দিন তিনেক আগে দোকানের বাইরে ‘লাইসেন্সপ্রাপ্ত মদের দোকান’ লেখা সাইনবোর্ড টাঙানো দেখে ফের একপ্রস্ত উত্তেজনা ছড়ায়। এ দিনের বিক্ষোভ তারই জের।
এ দিন দুপুরে নাদিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ পুরুলিয়া মফস্সল থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের দাবি, এলাকায় মদের দোকান চলতে দেওয়া যাবে না। পরে, এই ব্যাপারটি আবগারি দফতরের আওতায় জেনে থানা থেকে চলে যান জেলাশাসকের অফিসের উল্টো দিকে, আবগারি দফতরে। কিন্তু শনিবার দফতর বন্ধ। অফিসের সামনেই রাস্তায় অবরোধের একটা চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের তৎপরতায় তা শেষ পর্যন্ত হয়নি।
এর পরে বিক্ষোভকারীরা হাজির হন জেলাশাসকের অফিসের সামনে। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে ওই জায়গা থেকে দোকান তুলতে হবে। পুলিশ তাঁদের বুঝিয়ে বিক্ষোভ বন্ধ করে। গ্রাম থেকে শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন এক মহিলা। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। মদ খেয়ে খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। সংসারেও অশান্তি লেগে রয়েছে। আমরা এলাকায় ওই দোকান চালাতে দেব না।’’ ওই এলাকায় মদের দোকান খোলার অনুমোদন দেওয়া হল কী করে তা জানতে ফের আবগারি দফতরে আসবেন বলে জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
ওই দোকানের মালিকের বক্তব্য, ‘‘সরকারি অনুমতি নিয়েই শহর থেকে গ্রামে দোকান নিয়ে এসেছি। কিন্তু দোকান খোলা ইস্তক ঝামেলা লেগে রয়েছে। হামলার পরে আর দোকান খুলিনি। এ ভাবে ব্যবসা চালানো যায় না। আমি প্রশাসনের দ্বারস্থ হব।’’
জেলা আবগারি দফতরের আধিকারিক সিদ্ধার্থ সেন বলেন, ‘‘হাজার ফুটের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা ধর্মীয় স্থান থাকলে সেখানে মদের দোকান খোলা যায় না। এই সমস্ত দেখে তবেই ছাড়পত্র দেওয়া হয়। গ্রামবাসীরা আপত্তি জানালে খতিয়ে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy