অসন্তোষ: পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের। লাভপুরের আমনাহার গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের বুথ সভাপতির বাড়িতে বোমা ছোড়ার ঘটনায় আসল অভিযুক্তদের বদলে এক সেনাকর্মী সহ ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে— এই অভিযোগ ঘিরে ফের উত্তেজনা ছড়াল লাভপুরের আমনাহার গ্রামে। অভিযোগ, পরিস্থিতি সামলাতে গেলে লাঠিসোটা নিয়ে তাড়া করা হল পুলিশকে। ভিড় থেকে ছোড়া ইটে ভাঙে পুলিশের গাড়ির কাঁচ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে ওই গ্রামের বাসিন্দা তথা তৃণমূলের বুথ কমিটির সভাপতি জিতেন্দ্রনাথ দাসের বাড়িতে বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় সস্ত্রীক জিতেনবাবু আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন আহত নেতার বাবা লক্ষ্মীকান্ত দাস। তাঁদের মধ্যে সেনাকর্মী কালীচরণ হাঁসদারও নাম ছিল।
গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, রবিবার রাত দেড়টা নাগাদ কালচরণবাবুর বাড়ির পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকে পুলিশ। ‘কথা আছে’ বলে ওই সেনাকর্মীকে বাইরে ডেকে নিয়ে আসে। তার পরে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে চলে যান। খবর ছড়াতেই সোমবার সকালে গ্রামবাসীদের একাংশ অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবিতে স্থানীয় তৃণমূল নেতা- কর্মীদের বাড়িতে যান। কিন্তু কাউকে বাড়িতে না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
দুপুর দুটো নাগাদ ওই গ্রামে পুলিশ পৌঁছয়। অভিযোগ, পুলিশকর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে গ্রামবাসীরা। এক সময় লাঠিসোটা নিয়ে তাড়া করেন। খবর পেয়ে পুলিশের আরও একটি গাড়ি গ্রামে যায়। কিন্তু উত্তেজনা কমেনি। অভিযোগ, উত্তেজিত জনতার ছোড়া ঢিলে পুলিশের একটি গাড়ির কাঁচ ভাঙে। দুপুর সাড়ে ৩টে পর্যন্ত পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ চলে। স্থানীয় সূত্রে খবর, বিক্ষোভে আটকে পড়া পুলিশকর্মীরা গ্রামবাসীদের জানান, গ্রেফতারের ক্ষেত্রে তাঁদের কোনও ভূমিকা নেই। অভিযোগ থাকলে থানার শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলার আর্জি জানান। এর পরেই তাঁরা ঘেরাওমুক্ত হন। কালীচরণবাবুর স্ত্রী শ্রাবণী হাঁসদা বলেন, ‘‘আমার স্বামী ৯ বছর ধরে সেনাবাহিনীতে কাজ করছেন। এখন তিনি হরিয়ানায় কর্মরত। ২৬ দিন আগে একমাসের ছুটিতে বাড়ি ফিরেছেন। মঙ্গলবার কাজে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। গত রাতে পুলিশ ওঁকে নিয়ে যায়। আমার স্বামী কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। কিন্তু বিজেপির অনেকে ওঁর বন্ধু। সেই আক্রোশেই ওঁকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হল।’’
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তরুণ চক্রবর্তীর অভিযোগ, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁদের দলের বুথ সভাপতির বাড়িতে বোমা ছুড়েছিল। পুলিশ তদন্ত করে অভিযুক্তদের ধরছে। এতে তাঁদের কোনও ভূমিকা নেই। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিজেপিই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এ নিয়ে জলঘোলা করছে।’’
বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘তৃণমূল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত ভাবে বোমা ছোড়ার নাটক সাজিয়ে কিছু নিরপরাধ ব্যক্তির নামে অভিযোগ করেছে। তাই গ্রামবাসীরা স্বতঃফুর্ত ভাবে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।’’
পুলিশ জানায়, সুনিদ্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই কালীচরণ হাঁসদা সহ অন্যদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy