রানিবাঁধের পথে। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যে আর বিজয় মিছিল করা যাবে না বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবারই নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপরেও শুক্রবার বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ও রাইপুরে বিজেপি মিছিল করল। নিয়মমাফিক পুলিশও থাকল মিছিলে।
বিজয় মিছিল হল কী ভাবে? জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘রানিবাঁধ ও রাইপুরে বিজেপির বিজয় মিছিল হয়েছে কি না খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’ তিনি জানান, বিজয় মিছিলের অনুমতি আর দেওয়া হবে না বলে নির্দেশ এসেছে। আগে কেউ অনুমতি নিয়ে রেখেছে কি না, তা খোঁজ করা হচ্ছে।
নির্বাচন পরবর্তী হিংসা বন্ধে বৃহস্পতিবার নিমতায় নিহত তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিজয় মিছিল করা এ বার বন্ধ। পুলিশকে বলে দিয়েছি। এখন শান্তি মিছিল হোক। আর আমাদের ‘সংযোগযাত্রা’ হবে।’’ তারপরেও এ দিন রানিবাঁধের কর্মতীর্থ থেকে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা মোটা বাঁশের লাঠিতে পদ্ম আঁকা পতাকা বেঁধে নিয়ে কয়েক হাজারকে মানুষ বিজেপির মিছিলে পা মেলাতে দেখা গিয়েছে। বিজেপির রাইপুর মণ্ডল সভাপতি দেবাশিস মাহাতো জানান, রাইপুরের হাসপাতাল মোড় থেকে সারা বাজারে মিছিল করেন তাঁরা। প্রায় ১০ হাজার মিষ্টি বিলি হয়েছে রাইপুর বাজারে।
পুলিশ এই মিছিলের অনুমতি দিল কী করে? রানিবাঁধ থানার দাবি, কোনও বিজয় মিছিল এ দিন হয়নি। তবে বিজেপির রানিবাঁধ মণ্ডল সভাপতি অভিজিৎ মণ্ডল দাবি করেন, ‘‘আগে থেকেই পুলিশের কাছে মিছিলের অনুমতি নিয়ে রাখা ছিল। তবে, বৃহস্পতিবার রাত প্রায় দেড়টা নাগাদ রানিবাঁধ থানার আইসি ফোন করে জানান, মিছিল বন্ধ করতে হবে। কিন্তু গাড়ি ভাড়া করা থেকে লোকজন সবই প্রস্তুত ছিল। সে কথা পুলিশকে জানাই। মিছিলও করি শান্তিপূর্ণ ভাবে। গোলমাল করা আমাদের দলের সংস্কৃতি নয়।’’
এ দিন মিছিলে আসা অনেকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে সরব হন। অনেকেই অভিযোগ করেন, ‘‘এত দিন তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের চোখ রাঙানি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয়ে চুপ করে ছিলাম। গায়ের জোরে পঞ্চায়েত ভোট সে ভাবে করতে দেয়নি। কিন্তু লোকসভা ভোটে আমরা অত্যাচারের জবাব দিয়েছি।’’
পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা করতে যাওয়ার পথে হামলায় মৃত্যু হয়েছিল রানিবাঁধের বিজেপি কর্মী অজিত মুর্মুর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণে দিল্লিতে যাওয়ার ডাক পেয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী উর্মিলা মুর্মু। শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি যেতে পারেননি। তবে এ দিন তিনি রানিবাঁধের মিছিলে এসেছিলেন ছেলে অমৃতরাম এবং দেওর অসিতের সঙ্গে। ভিড় দেখে উর্মিলা বলেন, ‘‘বিজেপির মিছিলে এত লোক হবে ভাবতে পারিনি। সেদিনের মিছিলে যদি এত লোক থাকত, তাহলে হয়তো দুষ্কৃতীরা ওই মিছিলে হামলা করার সাহস পেত না। আমার স্বামীকেও নির্মম ভাবে মরতে হত না।’’
মিছিলে এ দিন পা মেলান তফসিলি উপজাতি মোর্চার রাজ্য সভাপতি ক্ষুদিরাম টুডু, বিজেপির বাঁকুড়া লোকসভার আহ্বায়ক অজয় ঘটক, খাতড়া মহকুমা এলাকার নেতা শ্যামল সরকার, জেলা কমিটির সদস্য অভিজিৎ দাস প্রমুখ।
রানিবাঁধের ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সুনীল মণ্ডল অবশ্য দাবি করেন, ‘‘অত্যাচারের অভিযোগ ঠিক নয়। বিজেপি মানুষকে ভুল বুঝিয়েছে। আমাদেরও সাংগঠনিক কিছু দুর্বলতা হয়তো ছিল। তবে সিপিএম, কংগ্রেসের ভোটে জিতে বিজেপি নেতারা যতই লাফালাফি করুক, মানুষের মন কিন্তু ঘুরতে শুরু করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy