ফাইল চিত্র।
এক মাস পরেই জানুয়ারি থেকে বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার ১,০৭৭টি প্রাইমারি স্কুলে শুরু হতে চলেছে পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা। কিন্তু স্কুলগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়ন না করেই কেন তাড়াহুড়ো করে নতুন ক্লাস অন্তর্ভুক্ত করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলির সঙ্গে কোথাও কোথাও সরব হয়েছেন তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠনের কিছু নেতাও।
যদিও পরিকাঠামোর ঘাটতির অভিযোগ নামতে চায়নি জেলা শিক্ষা দফতর। তাদের দাবি, জেলার সমস্ত প্রাথমিক স্কুল সম্পর্কে বিশদে তথ্য সংগ্রহ করেছিল রাজ্য শিক্ষা দফতর। তার পরেই যে স্কুলগুলিতে পরিকাঠামোর সমস্যা নেই, সেখানেই পঞ্চম শ্রেণি শুরুর বিষয়ে জেলাকে নির্দেশ পাঠিয়েছে রাজ্য।
প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্য থেকে বাঁকুড়া জেলায় মোট ৭৩১টি প্রাইমারি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির পঠনপাঠন চালু হওয়ার কথা। আর পুরুলিয়া জেলায় শুরু হবে ৩৪৬টি প্রাইমারি স্কুলে। উচ্চমাধ্যমিক স্কুলগুলির চাপ কিছুটা কমাতেই প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য শিক্ষা দফতর। কিন্তু এই ঘোষণার পরেই বির্তক তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে শ্রেণিকক্ষ ও পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাব থাকা সত্ত্বেও কেন প্রাথমিকে পঞ্চম শ্রেণি শুরু করা হচ্ছে, এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিল শিক্ষক সংগঠনগুলি।
বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রিঙ্কু বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, “যে স্কুলগুলিকে পঞ্চম শ্রেণি শ্রেণির পঠনপাঠনের জন্য রাজ্য সরকার চিহ্নিত করেছে, তার প্রায় সবগুলিতেই উপযুক্ত পরিকাঠামো রয়েছে। রাজ্যের নির্দেশ মোতাবেক আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে সবগুলিতেই পঞ্চম শ্রেণি চালু করার উদ্যোগ নিচ্ছি আমরা।”
যদিও আসন্ন শিক্ষাবর্ষে সেই তালিকায় থাকা কতগুলি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি চালু করা যাবে তা নিয়ে অবশ্য নিশ্চিত নন বাঁকুড়া জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের অনেকেই। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘যে স্কুলগুলিতে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন চালানোর নির্দেশ রাজ্য থেকে দেওয়া হয়েছে, সেগুলির পরিকাঠামো নিয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।” তিনি জানান, পঞ্চম শ্রেণি চালু করার জন্য স্কুলগুলিতে পর্যাপ্ত শিক্ষক আছেন কি না, ক্লাসঘরের সংখ্যা, ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা শৌচাগার আছে কি না— তার রিপোর্ট এক সপ্তাহের মধ্যে জেলার অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের দিতে বলা হয়েছে।
পুরুলিয়াতেও পরিকাঠামো ঘাটতি নিয়ে মুখ খুলেছেন শিক্ষকদের একাংশ। পঞ্চম শুরুর আগে কেন শিক্ষক ও ক্লাসঘরে ঘাটতি দূর করা হল না—সে প্রশ্ন তুলে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (প্রাথমিক) কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন ‘পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’।
সংগঠনের পুরুলিয়া জেলার সভাপতি বিমল মাহাতো বলেন, ‘‘পঞ্চম শ্রেণি শুরু করার জন্য যে সমস্ত প্রাথমিক স্কুলের তালিকা রাজ্য থেকে পাঠানো হয়েছে সেগুলির মধ্যে বহু স্কুলেরই পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এমন বেশ কিছু স্কুলের নাম ওই তালিকায় আছে, যেখানে দু’টি মাত্র শ্রেণিকক্ষ। কোনও মতে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। সেখানে পঞ্চম শ্রেণি শুরু হবে কী ভাবে?’’ বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের পুরুলিয়ার সম্পাদক রাজকিশোর মাহাতোর অভিযোগ, ‘‘ঠিক ভাবে স্কুল চিহ্নিত করার কাজই করতে পারেনি রাজ্য শিক্ষা দফতর। অর্ধেক স্কুলেই শিক্ষক ও ক্লাসঘরের ঘাটতি রয়েছে।
তবে পুরুলিয়া জেলা শিক্ষা দফতরের পাল্টা দাবি, দেড় বছর আগে স্কুলগুলির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করার পরেই সমস্যা হবে না এমন স্কুল চিহ্নিত করে, সেখানে পঞ্চম শ্রেণি শুরুর নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতর। স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুলগুলির পরিকাঠামো ও শিক্ষকের সমস্যা আছে শোনার পরেই অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের কাছ থেকে বিশদে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy