পূজা সাহা।
শ্বশুরবাড়িতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হল এক তরুণীর। মহম্মদবাজার থানার কাপিষ্ঠা গ্রামের ওই ঘটনায় মৃত বধূর বাবা খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন পুলিশের কাছে। তার ভিত্তিতে পুলিশ শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করে মৃতার স্বামী বাপ্পা সাহা, ভাসুর তাপস, জা শিউলি এবং শ্বশুর সাধন সাহাকে।
পুলিশ জানায়, মৃত তরুণীর নাম পূজা সাহা (২০)। তাঁর বাড়ি ময়ূরেশ্বর থানার ব্রাহ্মণবহড়া গ্রামে। কাপিষ্ঠার বাসিন্দা, পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী বাপ্পার সঙ্গে বছর তিনেক আগে পূজার বিয়ে হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বেলা ১১ টা নাগাদ ওই বাড়িতে চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে দেখতে পান, বাড়ির ছোট বৌ পূজার নিথর দেহ পড়ে আছে ঘরের মেঝেয়। পূজার শাশুড়ি পূর্ণিমা সাহার দাবি, শুক্রবার সকালে পূজা ও শিউলি বাড়ির কাজ করছিলেন। সেই সময় তিনি বাসস্ট্যান্ডে নিজেদের মিষ্টির দোকানে চলে যান। ১১টা নাগাদ বাড়ি ফিরে ছোট বউমাকে দেখতে না পেয়ে বড় শিউলির কাছে জানতে চান, পূজা কোথায়। পূর্ণিমার দাবি, ‘‘পূজার ঘরে গিয়ে দেখতে পাই ভিতর থেকে বন্ধ। অনেক ডাকার পরেও দরজা না খোলায় বাড়ির অন্য সদস্যদের ডাকি। দরজা ভেঙে দেখি, পূজা গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে।’’
পূর্ণিমা জানান, দড়ি থেকে পূজার দেহ নামিয়ে মেঝেয় রেখে প্রতিবেশীদের খবর দেওয়া হয়। পূজার বাবা সন্তোষ কুমার ভুঁইমালির অভিযোগ, তাঁর মেয়ে যে মারা গিয়েছে, তা শুক্রবার অনেক দুপুর পর্যন্তও তাঁদের জানানো হয়নি শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে। পাশের গ্রামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে খবর পেয়ে তাঁরা কাপিষ্ঠায় গিয়ে দেখেন, মেয়ের দেহ তখনও বাড়ির মেঝেয় পড়ে রয়েছে। তার পরে খবর দেওয়া হয় মহম্মদবাজার থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ধ্যায় মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, সাহা পরিবারের বড় বৌ শিউলি সম্পর্কে পূজার মাসতুতো বোনও। তাঁদের শাশুড়ি শনিবার দাবি করেন, ‘‘দুই বোনের মধ্যে ঝগড়া হওয়ায় পূজা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কারণ, শুক্রবার ঘটনার সময় ওই দুই বোন ছাড়া আর কেউ বাড়িতে ছিল না। সকলেই নিজেদের কাজে বাইরে ছিল।’’ যদিও এই তত্ত্ব মানতে নারাজ সন্তোষবাবু। তাঁর অভিযোগ, পূজাকে মেরে ফেলেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনই। তিনি এ দিন দাবি করেন, ‘‘পূজাকে প্রায়ই মারধর করত ওর স্বামী, ভাসুর, জা-সহ সবাই। সেই কথা আমাকে ফোন করে জানাতো পূজা। ওকে শ্বশুরবাড়িতে মানিয়ে গুছিয়ে নিতে বলেছিলাম। কিন্তু, এই পরিণতি হবে, ভাবিনি!’’
শুক্রবার রাতে সন্তোষবাবু তাঁর মেয়েকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন মহম্মদবাজার থানায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করে। শনিবার সকালে পূজার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় সিউড়ি সদর হাসপাতালে। এ দিন ধৃতদের সিউড়ি হাসপাতালে হাজির করানো হলে তাঁদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy