কলাভবনের ভিন্ রাজ্যের ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের ঘটনায় ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’ গড়ল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয়য়ের উপাচার্য মিহিরকুমার চৌধুরীর নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হল। শনিবার মিহিরবাবু ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলতে শান্তিনিকেতনে আসবেন। তার আগে বৃহস্পতিবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত আধিকারিকদের সঙ্গে একটি রূদ্ধদ্বার বৈঠক সারলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য।
এ দিন নির্যাতিতা ছাত্রীর আদালতে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বুধবার রাতে হঠাৎ-ই অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্রথমে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে, পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানে সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যালের সহ-অধ্যক্ষ তথা সুপার উৎপলকুমার দাঁ বলেন, “ওই ছাত্রী চিকিৎসকদের জানিয়েছেন, তাঁকে মারধর করা হয়েছে। মাথায় যন্ত্রণা হচ্ছে। সব বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গড়া হয়েছে।” তিনি জানান, শুক্রবার সব পরীক্ষার রিপোর্ট পেলে ওই ছাত্রীর পরবর্তী চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রে খবর, মন্ত্রক থেকেই ইউজিসিকে বলা হয়, যৌন নিগ্রহের বিষয়ে বারবার অভিযোগ আসছে বিশ্বভারতী থেকে। সম্প্রতি কলাভবনের ছাত্রীর ক্ষেত্রে নির্যাতনের ঘটনাটি গোপন করার চেষ্টার যে অভিযোগ, তা অত্যন্ত গুরুতর। এত ঐতিহ্যপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানে কেন এমন ঘটছে, জানা দরকার। এর পরেই ইউজিসি বিশ্বভারতীকে চিঠি পাঠায়। এফ ৪৮-১২/২০১৪ নং ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে, কলাভবনের প্রথম বর্ষের ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় সঠিক কী ঘটেছিল, তা জানতে ইউজিসি-র পক্ষে মিহিরবাবু শনিবার শান্তিনিকেতন আসছেন। তিনি নির্যাতিতা ও তাঁর অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলবেন। বিশাখা কমিটির সকল সদস্য, তিন অভিযুক্ত ছাত্র, সংশ্লিষ্ট ভবনের বেশ কিছু সিনিয়ার ছাত্রছাত্রী, ওই ছাত্রীর সহপাঠী ও তাঁর মায়ের সঙ্গেও কথা বলবেন। যৌন হেনস্থা এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের জেরে অসুস্থ হয়ে অগস্ট মাসের ৯ এবং ২৫ তারিখ বিশ্বভারতীর পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ওই নির্যাতিতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ কর্তাদের পাশাপাশি মিহিরবাবু কথা বলবেন ওই চিকিৎসক এবং হাসপাতালের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের খবর, ২ সেপ্টেম্বর চিঠি পাওয়ার পরে শুক্রবার জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। বিশ্বভারতীর পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালের স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে শুরু করে সকল ভবনের অধ্যক্ষ, অধিকর্তা, আধিকারিক, প্রভোস্ট এবং কর্মসচিবের সঙ্গে ওই বৈঠকে ছিলেন রাষ্ট্রপ্রতি তথা বিশ্বভারতীর পরিদর্শকের প্রতিনিধি সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বৈঠকের পর সুশোভনবাবু সাংবাদিকদের জানান, সব শিক্ষকদের সতর্ক থেকে এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধের পরামর্শ দিয়েছেন উপাচার্য।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এ দিন সাংবাদিকদের জানান, তাঁরা কলাভবনের ছাত্রী নির্যাতনের বিষয়ে ডেপুটেশন দিলেও, উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত তাঁদের কথাকে গুরুত্ব দেননি। বিষয়টি নিয়ে তিনি মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির সঙ্গে দেখা করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy