Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
বিচারক নিয়োগের পরীক্ষা

রাজ্যের শীর্ষে জেলার দু’জন

প্লাবনবাবুর বেড়ে ওঠা পুরুলিয়া শহরেই। পুরুলিয়া জেলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক। মানভূম ভিক্টোরিয়া ইন্সস্টিটিউশন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক। তার পরে জগন্নাথ কিশোর কলেজ থেকে বাণিজ্যে স্নাতক হয়ে ধানবাদ আইন কলেজে পড়তে চলে গিয়েছিলেন।

সফল: (বাঁ দিকে) প্লাবন মুখোপাধ্যায়। (ডান দিকে) লোকেশ পাঠক। নিজস্ব চিত্র

সফল: (বাঁ দিকে) প্লাবন মুখোপাধ্যায়। (ডান দিকে) লোকেশ পাঠক। নিজস্ব চিত্র

প্রশান্ত পাল  ও রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:২৫
Share: Save:

বিচারক নিয়োগের পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম দু’টি স্থান দখল করল পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া। চলতি বছরের ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুডিশিয়াল সার্ভিসেস’ পরীক্ষায় শীর্ষস্থান অধিকার করেছেন পুরুলিয়া শহরের গাড়িখানা এলাকার বাসিন্দা প্লাবন মুখোপাধ্যায়। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন খাতড়া আদালতের আইনজীবী লোকেশ পাঠক।

প্লাবনবাবুর বেড়ে ওঠা পুরুলিয়া শহরেই। পুরুলিয়া জেলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক। মানভূম ভিক্টোরিয়া ইন্সস্টিটিউশন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক। তার পরে জগন্নাথ কিশোর কলেজ থেকে বাণিজ্যে স্নাতক হয়ে ধানবাদ আইন কলেজে পড়তে চলে গিয়েছিলেন। পুরোদস্তুর আইনজীবী হয়ে প্র্যাক্টিস শুরু করেন পুরুলিয়া জেলা আদালতেই। সিভিল এবং ক্রিমিনাল— দুই ক্ষেত্রেই প্র্যাক্টিস করেন প্লাবনবাবু। পেশাগত কাজের বাইরে ডুবে থাকেন ফেলুদা, প্রফেসর শঙ্কু আর ব্যোমকেশের গল্পে। সেই সমস্ত কিছুর মধ্যে বছর তিনেক আগে থেকে জুডিশিয়াল সার্ভিসের পরীক্ষায় বসা শুরু করেন।

প্লাবনবাবু বলেন, ‘‘যে দিন থেকে এই পেশায় এসেছি, ইচ্ছে ছিল বিচারক হওয়ার। পুরুলিয়ার মতো জেলায় এত দিন কাজ করে বিচারপ্রার্থীদের খুব কাছ থেকে দেখেছি। একটু সহায়তা করলে তাঁরা সুবিচার পেতে পারেন। সেই ভাবনা থেকেই পরীক্ষায় বসেছিলাম।’’

এই পরীক্ষায় পাঁচটি পেপার রয়েছে। সেগুলিতে পাশ করলে ইন্টারভিউতে ডাক পান চাকরিপ্রার্থীরা। প্লাবনবাবু লিখিত পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউ— দু’টিতেই শীর্ষস্থান পেয়েছেন। তিনি জানান, পুরুলিয়ায় এই পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কোনও কোচিং সেন্টার নেই। সময় পেলেই কলকাতা গিয়ে বইপত্র নিয়ে আসতেন। প্লাবনবাবু বলেন, ‘‘গত বছরও পরীক্ষায় বসেছিলাম। কৃতকার্য হইনি। তার পরে আমাদের মেয়ে হল। রাজনন্দিনী। ও-ই যেন সুখবরটা নিয়ে এল।’’

রাজ্যে দ্বিতীয় স্থানটি খাতড়া আদালতের আইনজীবী লোকেশ পাঠকের। লোকেশবাবু খাতড়া শহরের এটিএম গ্রাউন্ড সংলগ্ন বিদ্যাসাগরপল্লির বাসিন্দা। ১৯৯৮ সালে বাঁকুড়া সম্মিলনী কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক। তার পরে জলপাইগুড়ি ল কলেজে আইন নিয়ে পড়াশোনা। ২০০৩ সাল থেকে খাতড়া আদালতে ওকালতি শুরু। লোকেশবাবু বলেন, “এই পরীক্ষায় পাশ করাটা আমার স্বপ্ন ছিল। গত বছর লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলাম। কিন্তু চুড়ান্ত তালিকায় আসতে পারিনি। এ বার স্বপ্ন পুরণ হল।’’ লোকেশবাবু একটি সাময়িক পত্রিকাও সম্পাদনা করেন। নিয়মিত লেখেন ছোটগল্প। নেশা ছায়াছবি দেখা আর ক্রিকেট খেলা।

বাবা ধরণীধর পাঠক ৩৭ বছর ধরে ওকালতি করছেন। লোকেশবাবু বলেন, “বাবাই আমার আদর্শ।” ছেলের সাফল্যে খুশির হাওয়া বইছে বাড়িতে। খুশি লোকেশবাবুর মা কল্যাণী পাঠক এবং স্ত্রী, ভূতশহর গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা রাণু পাঠক। ধরণীধরবাবু বলেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে প্রস্তুতিতে ডুবে ছিল লোকেশ। ওর সাফল্যে আমরা গর্বিত।”

অন্য বিষয়গুলি:

Judicial Services Topper
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy