Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

ট্রেন চলবে কবে থেকে, জানতে চায় লোহাপুর 

ছবিটা বদলে গিয়েছে। আর পাঁচটা দিনের সঙ্গে লোহাপুর স্টেশনের সোমবারের ছবি একেবারেই আলাদা। কর্মব্যস্ত সেই স্টেশনে এ দিন নেই কোনও যাত্রী।

রবিবারের তাণ্ডবের পরে সোমবারের লোহাপুর। নিজস্ব চিত্র

রবিবারের তাণ্ডবের পরে সোমবারের লোহাপুর। নিজস্ব চিত্র

তন্ময় দত্ত 
নলহাটি শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:০৫
Share: Save:

ছবিটা বদলে গিয়েছে। আর পাঁচটা দিনের সঙ্গে লোহাপুর স্টেশনের সোমবারের ছবি একেবারেই আলাদা। কর্মব্যস্ত সেই স্টেশনে এ দিন নেই কোনও যাত্রী। সারা স্টেশন দখল নিয়েছে রেল পুলিশ। কিছু উৎসাহী মানুষ ভয়ে ভয়ে স্টেশন চত্বরে এসে উঁকিঝুকি মারছেন।

নলহাটি-আজিমগঞ্জ রেলপথের এই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনটিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনের জেরে রবিবার যে তাণ্ডব চলেছে, তার পর থেকেই ওই রুটে ট্রেন বন্ধ করে দিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। অথচ এই স্টেশনের উপর দিয়ে কবিগুরু, গণদেবতার মতো গুরুত্বপূর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের পাশাপাশি অনেকগুলি প্যাসেঞ্জার ট্রেনও চলাচল করে। রবিবার উত্তেজিত জনতা টিকিট কাউন্টার ভেঙে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্টেশনের কন্ট্রোল রুম এবং প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের বসার জায়গাগুলিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ভাঙা পড়েছে লোহাপুরের রেলগেট। রবিবার ঘণ্টাখানেক ধরে চলা ওই তাণ্ডবের ফলে সুসজ্জিত স্টেশন এখন চেনাই দায়। সোমবার ওই স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, ক্ষয়ক্ষতি কী কী হয়েছে, তা সরেজমিন দেখতে এবং স্টেশনকে নতুন ভাবে তৈরির জন্য এসেছেন রেলের আধিকারিকেরা।

ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে এলাকার বাসিন্দারা। ভোগান্তি ওই রেলপথ ব্যবহার করা নিত্যযাত্রীদের। লোহাপুর স্টেশনে তাণ্ডবের ঘটনায় স্থানীয় মানুষের বড় অংশই ক্ষুব্ধ। তাঁদের প্রশ্ন, আন্দোলন হোক। কিন্তু, সব সময় রেলকে নিশানা করা হবে কেন? ভাঙচুরের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার করে অবিলম্বে ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক এবং স্টেশন ফের সাজিয়ে তোলার করার দাবি তুলেছেন ওই রেলপথের নিত্যযাত্রীরা। তাঁদের আরও দাবি, স্টেশনে তাণ্ডবের ঘটনায় এলাকার মানুষ জড়িত নন। নলহাটি আরপিএফ জানিয়েছে, স্টেশনে তাণ্ডবের জন্য অজ্ঞাতপরিচয়দের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।

এলাকাবাসীরা জানান, লোহাপুর থেকে নলহাটি পর্যন্ত ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক এমনিতেই বেহাল অবস্থায় রয়েছে। ট্রেনে স্কুল ও কলেজের ছাত্রছাত্রীরা, অফিস যাত্রীরা লোহাপুর স্টেশন থেকে নলহাটি ও রামপুরহাট যাতায়াত করেন প্রতিদিন। আবার ব্যবসার কাজে বহু মানুষ লোহাপুরেও রোজ আসেন। রবিবার থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ায় সোমবার তাঁদের বাসে করে যাতায়াত করতে হয়েছে জাতীয় সড়কের ধুলো মেখে, গর্তে ঝাঁকুনি খেতে খেতে। অন্য দিকে, জাতীয় সড়কেও নানা জায়গায় অবরোধের ফলে সরকারি ও বেসরকারি বাসের সংখ্যা ছিল কম। ফলে, এ দিন বাসগুলিতে ভিড়ও হয়েছিল বেশি।

স্থানীয় বারা গ্রামের বাসিন্দা সাজ্জাদ শেখ বলেন, ‘‘লোহাপুর স্টেশনে তাণ্ডবের ফলে এলাকার সমস্ত মানুষই হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আমরা ট্রেনে অল্প সময়ে নলহাটি পৌঁছে যেতাম। কিন্তু, সোমবার সড়ক পথে নলহাটি যেতে অনেক বেসি সময় লেগেছে।

রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের অনুরোধ, তাড়াতাড়ি স্টেশন মেরামতি করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হোক।’’ কলেজের ছাত্রছাত্রী ইজাজ আহমেদ, দোলা খাতুনরা বলেন, ‘‘আমরা রামপুরহাট কলেজে পড়াশোনা করি। ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ায় সব থেকে সমস্যায় পড়েছে এই এলাকার পড়ুয়ারা। কম্পিউটার ও পড়াশোনার জন্য সকালে ও বিকেলে ট্রেনে যাতায়াত করতাম। দু’দিন ধরে ট্রেন বন্ধ থাকায় আমরা যেতে পারছি না। পড়ুয়াদের পক্ষ থেকে সকলের কাছে আবেদন, রাস্তা বা রেল অবরোধের রাস্তা থেকে সরে এসে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হোক।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy