হতাশ: বাইরে থেকেই বিশ্বভারতী দেখতে হচ্ছে পর্যটকদের। নিজস্ব চিত্র
আক্ষেপ কেবল একটাই। বিশ্বভারতী খোলা নেই। সোনাঝুরির খোয়াই হাট, গোয়ালপাড়ার কোপাই নদী, রাস্তার ধারের খেজুর গুড়, মেলা আর জমাট শীতে বেড়ানোর মজার মাঝেও ভিড়ে ঠাসা শান্তিনিকেতনে ঘুরেফিরে আসছে সেই আক্ষেপ।
রবীন্দ্রভবন মিউজিয়াম, ছাতিমতলা, আম্রকুঞ্জ, সঙ্গীতভবন, কলাভবন সহ আশ্রম চত্বর বরাবরই শান্তিনিকেতনে আসা পর্যটকের বড় প্রিয়। কিন্তু, শেষ প্রায় দু’বছর কোভিড সংক্রমণের আশঙ্কায় এই এলাকায় পর্যটকদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ রয়েছে। ফলে পর্যটকরা বিশ্বভারতীর দ্রষ্টব্যগুলি না দেখতে পেয়েই ফিরে যাচ্ছেন। রিকশা আর টোটোয় চেপে বাইরে থেকে ক্যাম্পাসের যা কিছু স্থাপত্য, ভাষ্কর্য দেখে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাচ্ছেন পর্যটকরা। এমনকি পৌষ উৎসবের দিনে ক্যাম্পাসে প্রবেশের অনুমতি না থাকলেও ছাতিমতলা ও উপাসনা মন্দিরের বাইরে রাস্তার উপরে হাজারও পর্যটকের ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছিল। যদিও পারষ্পরিক দূরত্ববিধির বালাই ছিল না সেই ভিড়ে।
এ দিকে, টানা বন্ধ থাকায় বিশ্বভারতীকেও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। ২০১৯ সালের হিসেব অনুযায়ী এই ক্ষতির পরিমাণ দিনে প্রায় এক লক্ষ টাকা। যদিও বিশ্বভারতীর এক আধিকারিক জানান, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ রবীন্দ্রভবন মিউজিয়াম খুলে দিতে আগ্রহী। এই বিষয়ে শীতের ছুটি শেষ করার পরেই আগামী জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সম্ভবত সেখানে কোনও স্থির সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। তবে খোলার পরে ভিড়ে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনার দিকটিকেও ভাবতে হচ্ছে। কেননা রবীন্দ্রভবন মিউজিয়াম খুলে গেলে দিনে কয়েক হাজার পর্যটক আসবেন। টিকার শংসাপত্র পরীক্ষা করা থেকে জীবাণুনাশের বিষয়টিও থাকছে।
ক্যাম্পাস সহ দ্রষ্ট্রব্য স্থান ঘুরে দেখতে পর্যটকদের একাংশ কতটা মরিয়া তা বুঝিয়ে দিচ্ছে তাঁদের বক্তব্য। আসানসোল থেকে আসা পর্যটক দম্পতি সুশীল ঘোষ ও মিনতি ঘোষের কথায়, “রাজ্যে বা দেশে তো কোভিডের কারণে আর কিছুই বন্ধ নেই। শুধু বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস বন্ধ রাখার কোনও মানে থাকতে পারে না। বিশ্বভারতী প্রয়োজনীয় সতর্কতা নিয়েই মিউজিয়াম ও ক্যাম্পাস পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করুক।” কলকাতার বাসিন্দা সুশোভন দাসের আবার প্রস্তাব, “ভিড় সামলাতে চাইলে অনলাইনে টিকিটের ব্যবস্থা হোক। সেখানেই টিকার শংসাপত্র জমা নেওয়া হোক। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে টিকিট দেওয়া হলে তো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy