কাছাকাছি দুই প্রজন্ম। পাশাপাশি সন্ধ্যা, শান্তিরাম ও সৌমেন। নিজস্ব চিত্র।
জেলায় রাজ্য সরকারের কল্যাণমূলক কর্মসূচিগুলির ফসল তুলতে পারছে না দল— এমনই ব্যর্থতার কথা উঠে এল মঙ্গলবার পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের পর্যালোচনা বৈঠকে।
সম্প্রতি কালীঘাটের বৈঠকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া বার্তা ব্লকের কর্মীদের মধ্যে পৌঁছে দিতে এ দিন পুরুলিয়ার জেলা নেতৃত্ব আলোচনায় বসেন। বেলগুমায় দলের জেলা কার্যালয়ের ওই বৈঠকে ছিলেন তিন বিধায়ক, জেলা নেতৃত্ব, ব্লক সভাপতি থেকে শাখা সংগঠনের জেলা সভাপতিরা। জেলা পরিষদ সদস্য ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদেরও ডাকা হয়।
দল সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে রাজ্য সরকারের কাজে প্রচারের ব্যর্থতার বিষয়টির সঙ্গে সমন্বয়ের অভাবের কথা বিভিন্ন বক্তার কথায় উঠে এসেছে। যার প্রভাব দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে পড়েছে বলে স্বীকার করেছেন অনেকেই। ঘটনা হল, কালীঘাটের বৈঠকে মমতা দলের বর্ষীয়ান নেতা শান্তিরাম মাহাতো ও জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়াকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন।
আত্মসমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে নেতাদের অনেকের কথায়। সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে দলের জেলা চেয়ারম্যান হংসেশ্বর মাহাতো দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে গতির দিক থেকে ২৩টি জেলার মধ্যে পুরুলিয়া কেন ২২ নম্বরে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি যেন যাতে এ বার না হয়, তা নিয়ে সতর্ক করেন তিনি। বাঘমুণ্ডির বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো প্রশ্ন তোলেন, বিরোধীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কি দলের কর্মীদের মনোবলে কোথাও চিড় ধরছে?
বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সরেনের পর্যবেক্ষণ, রাজ্য সরকারের কল্যাণমূলক কাজগুলির প্রচার দলের তরফে যে ভাবে করা দরকার, তেমনটা হচ্ছে না। গ্রামের আড্ডায় লোকজনের মধ্যে মিশে গিয়ে অপপ্রচারের মোকাবিলা করতে হবে। এই কাজ মহিলা কর্মীরা ভাল করতে পারেন। কিন্তু তা হচ্ছে না। দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে অনেকেই মানুষের দরজায় দরজায় যাচ্ছেন না বলেও তাঁর অভিযোগ।
সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেন, যে কর্মীরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে কর্মসূচি সফল করছেন, সাধারণ মানুষের পাশাপাশি তাঁদের কথাও নেতৃত্বকে শুনতে হবে। তাঁদের দুঃখের কথা জানতে হবে। কারণ তাঁরাই দলের সম্পদ। দলের রাজ্য সম্পাদক স্বপন বেলথরিয়া ছাত্র-যুব নেতৃত্বকে আরও দায়িত্ব নিতে হবে বলে জানান।
তবে দলের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধের বিষয়টি উঠে এসেছে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক শান্তিরাম মাহাতোর বক্তব্যে। সূত্রের দাবি, বিরোধী দলগুলি যদি তৃণমূলকে হারাতে এক হতে পারে, তাহলে তৃণমূলের সবাই কেন এক হয়ে কাজ করতে পারবেন না, সে প্রশ্ন শান্তিরাম বৈঠকে তোলেন। তাঁর কথায়, ‘দলনেত্রী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পুরুলিয়ার জন্য অনেক কাজ করেছেন। গ্রামের মানুষ তার সুফলও পাচ্ছেন। কিন্তু আমরা কি সেই কাজের সুফল তুলতে পারছি? কোথাও সমন্বয়ের অভাব থেকে যাচ্ছে?’’
উল্লেখ্য, কলকাতার বৈঠকে নেত্রী রাজ্য সরকারের ভাল কাজগুলি মানুষের কাছে তুলে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন। শান্তিরাম বলেন, ‘অপপ্রচারে ভাল কাজগুলি ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। রাজ্যে পালাবদলের পরে কী কী সুবিধা মিলছে, তা নিরন্তর মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। প্রয়োজনে তা নিয়ে ভাল করে জানতে হবে, হোমওয়ার্ক করতে হবে।’
পরে দলের জেলা সভাপতি সৌমেন বলেন, ‘‘সাংগঠনিক নানা বিষয়ে এ দিন আলোচনা হয়েছে। নেত্রীর বার্তা জেলার নেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি কোনও কোনও জায়গায় ধীরে চললেও দ্রুত তা গতি পাবে।’’ বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, জেলা পরিষদের কো-মেন্টর জয় বন্দ্যোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy