অনুব্রত মণ্ডল (ডান দিকে) ১৮ মাস পর জেল থেকে বাড়ি ফিরতেই তৃণমূল কর্মীদের উচ্ছ্বাস (বাঁ দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
১৮ মাস পরে বাড়ি ফিরেছেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট)। উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছেন ‘কেষ্টদার অনুগামীরা’। মঙ্গলবার সুদূর কলকাতা থেকে বীরভূমের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে আনন্দ উপভোগ করতে ছুটে এসেছেন অরুণ দত্ত। নিজেকে ‘কেষ্টদার ভক্ত’ বলে দাবি করা অরুণ তৃণমূল নেতার কারামুক্তির আনন্দে বিলি করলেন নকুলদানা এবং বাতাসা। জানালেন, কর্মীরা যাতে মাথা ঠান্ডা রাখেন, তাই নিজে এই সব বয়ে এনেছেন। অনুব্রতের ঘরে ফেরার পরে তাঁর বাড়ির সামনে এল বাজনার দলও। শোনা গেল ‘চড়াম চড়াম’ আওয়াজ।
ভোটের আগে প্রায়শই বিরোধীদের খোঁচা দিয়ে বেশ কিছু শব্দবন্ধ ব্যবহার করতেন বীরভূমের তৎকালীন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত। বলতেন নকুলদানা, গুড়-বাতাসা খাওয়ানোর কথা। জানাতেন ভোটের বাদ্যির কথা। যদিও ‘গুড়-বাতাসা’, ‘নকুলদানা’, ‘চড়াম চড়াম’ শব্দের নেপথ্যে ভোটের সময় বা ভোট পরবর্তী হিংসার প্রছন্ন হুমকি রয়েছে বলে দাবি করে এসেছেন বিরোধীরা। তবে সোমবার কেষ্ট তাঁর ‘গড়ে’ ফিরতে বাস্তবিক ভাবে নকুলদানা এবং গুড়-বাতাসা বিলি হয়েছে। বেজেছে ঢাক-খোল ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্রও।
কলকাতার নাকতলা এলাকা থেকে সকাল-সকাল নিচুপট্টির সামনে পৌঁছে গিয়েছিলেন জনৈক অরুণ। যে পুজোর সঙ্গে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ জড়িয়ে ছিলেন, সেই নাকতলা উদয়ন সংঘের সদস্য বলে দাবি করা অরুণ জানিয়েছেন অনুব্রতের জন্যই এত দূর ছুটে এসেছেন তিনি। তাঁর দাবি, গরু পাচার মামলায় অনুব্রতের গ্রেফতারির নেপথ্যে যেমন ষড়যন্ত্র রয়েছে, তেমনই রাজনীতি রয়েছে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থের জেলযাত্রাতেও। তবে অনুব্রত যেমন জামিনে ছাড়া পেয়েছেন, কয়েকটা দিন পর পার্থও ছাড়া পাবেন বলে আশাবাদী ওই যুবক। অরুণ বলেন, ‘‘আমার বাড়ি কলকাতার নাকতলায়। দাদার (অনুব্রত) সঙ্গে দেখা করব বলে ভোর ৪টেয় ঘুম থেকে উঠে বেরিয়ে এসেছি। ট্রেনে-বাসে করে সোজা দাদার বাড়ির সামনে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার কপালটা এত ভাল! আমি বাস থেকে নেমেছি, তখনই দাদা বাড়িতে ঢুকছেন। আমি দাদাকে প্রচণ্ড ভালবাসি। আমাদের দাদা বীরভূমের বাঘ। আমাদের মন্ত্রী, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম যেমন বলেছিলেন, ‘বাঘ যে দিন বেরিয়ে আসবে সে দিন সবাই লেজ গুটিয়ে পালাবে।’ আজ দাদা বেরিয়েছেন। সবাই লেজ গুটিয়ে চলে গিয়েছে।’’ অরুণ জানান, অনুব্রতের কারামুক্তিতে তাঁর মতো অনেক তৃণমূল কর্মীই আনন্দিত এবং আবেগবিহ্বল। তবে এই আবেগে কেউ যেন ‘ভুল’ কিছু না করে বসেন। সকলের মাথা ঠান্ডা রাখতে তিনি নকুলদানা, গুড়-বাতাসা এনেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘দাদা বেরিয়ে এসেছে। আশা করছি, আগামী ২৭ তারিখ আমাদের পার্থদাও বেরিয়ে আসবেন (জেল থেকে)।’’
অনুব্রত তিহাড় জেল থেকে মুক্তি পেয়ে বীরভূমে পা দেওয়ার পর থেকে জেলায় উৎসবের আবহ। একের পর এক নেতা, কর্মী এবং অনুগামী অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাড়িতে যাচ্ছেন। ‘কেষ্টভক্ত’ অরুণ জানাচ্ছেন, তাঁর সঙ্গে এক বার তৃণমূল নেতার দেখা হয়েছে। তবে আবার এক বার দেখা না করে তিনি নিচুপট্টি থেকে নড়বেন না। যত রাতই হোক, অনুব্রতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তবেই পার্থের নাকতলায় ফিরবেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy