সেই পোস্ট। নিজস্ব চিত্র
দুয়ারে সরকারের শিবিরে পরিষেবা পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে কেউ টাকা চাইলে সরাসরি পুলিশে অভিযোগ জানানোর নিদান দিচ্ছে তৃণমূল। দলীয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় তৃণমূলের বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার ছবি সম্বলিত ওই ‘পোস্ট’ করা হয়েছে।
দলীয় প্রতীক সম্বলিত ওই ‘পোস্ট’-এ উল্লেখ রয়েছে, ‘দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে বহিরাগত কেউ সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা-পয়সা চাইলে সরাসরি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করুন। দুয়ারে সরকারে সরকারি প্রকল্পের জন্য কোনও টাকা-পয়সা লাগে না।’ এ দিকে, পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার আগে ওই ‘পোস্ট’ ঘিরে বেঁধেছে রাজনৈতিক বিতর্ক। শাসক দল কাদের রুখতে চাইছে, সেই প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। পাশাপাশি, পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিরোধীদের ফাঁসানো হতে পারে, এমন অভিযোগওউঠেছে। অভিযোগ মানতে চাননি তৃণমূল নেতৃত্ব।
এর আগে জেলায় দুয়ারে সরকার কর্মসূচি চলাকালীন কিছু প্রকল্পের আবেদনপত্র নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায়। বিভিন্ন জায়গায় সরকারি প্রকল্পের আবেদনপত্রের প্রতিলিপি বিক্রির ঘটনা সামনে আসার পরে, জেলা প্রশাসনের তরফে মাইকে তা নিয়ে প্রচারও করা হয়। ঘোষণা করা হয়, কেবলমাত্র শিবির থেকে সংগ্রহ করা আবেদনপত্রের মাধ্যমেই প্রকল্পের সুবিধা পেতে আবেদন করা যাবে। প্রকল্পের আবেদনপত্রের প্রতিলিপি বিক্রি করা যাবে না বলেও সতর্ক করা হয়। তবে এ বারে গত পয়লা নভেম্বর থেকে তৃতীয় পর্বের দুয়ারে সরকারের শিবির শুরুর পরে কোথাও টাকা-পয়সার বিনিময়ে কাউকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ আসেনি বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। জেলাশাসক রজত নন্দাও বলেন, “এমন কোনও খবর আমাদেরকাছে নেই।”
তবে ওই ‘পোস্ট’ নিয়ে প্রশ্ন ওঠা থামছে না। বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গার কথায়, “বহিরাগত বলতে কাদের দিকে আঙুল তোলা হচ্ছে, বুঝছি না। দুয়ারে সরকারের শিবিরে তো স্থানীয় লোকজনই থাকেন। বহিরাগত মানে কি ভিন্ জেলা না কি ভিন্ রাজ্যের লোকজনের কথা বলা হচ্ছে!” তাঁর আরও দাবি, “সরকারি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মানুষজনের কাছ থেকে কোন দলের নেতারা টাকা-পয়সা নিয়েছেন, তা আট থেকে আশি সকলেই জানেন। আর গত পঞ্চায়েত, লোকসভা বা বিধানসভা ভোটে মানুষ কী রায় দিয়েছেন, তা-ও তাঁরা জানেন। এই পোস্ট দেখে তো অনেকেই হাসি চাপতে পারছেন না।” তাঁর অভিযোগ, “এক দিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আটকানো, অন্য দিকে বিরোধীদের কারও বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগ তুলে ফাঁসানোর চক্রান্তও হতে পারে।“ পোস্ট নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে জেলা সিপিএম সম্পাদক প্রদীপ রায়ও বলেন, “এ তো সেই ঠাকুর ঘরে কে, আমি তো কলা খাইনির মতো অবস্থা!”
জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর কথায়, “আগের শিবিরগুলিতে আবেদনের পরেও অনেকে পরিষেবা না পাওয়ায় দুয়ারে সরকার কর্মসূচিই প্রশ্নের মুখে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই ধরনের পোস্ট দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। বিরোধীদের ফাঁসানোর চেষ্টাও হতে পারে। আর এই পোস্ট কাদের আড়াল করতে, সেটা সবাই বুঝতে পারছেন।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেনের তবে দাবি, অন্য জেলা থেকে এই ধরনের খবর এসেছে। সেখানে প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। তাঁর কথায়, “এই কর্মসূচির মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মানুষের দুয়ারে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কোনও ব্যক্তি তার সুযোগ নিয়ে যাতে টাকাপয়সা দাবি না করতে পারে, তা মাথায় রেখে মানুষজনকে সতর্ক করা হয়েছে।” বিরোধীদের অভিযোগ নিয়ে সৌমেন বলেন, “জেলায় গত পুর-ভোট নিশ্চয়ই বিরোধীরা দেখেছেন। কতটা অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। তার পরে এ সব বলার মানে হয় না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy