গণরোষ: বিক্ষোভকারীদের সামলাচ্ছে পুলিশ। শনিবার বোলপুরের সাবিরগঞ্জে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার পথে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। শনিবার বোলপুরের সাবিরগঞ্জ গ্রামে শিল্পের জন্য জমি দেওয়া কৃষকেরা কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখান বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, ২০০০ সালে বামফ্রন্ট সরকার ৩০০ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল শিল্পের জন্য। কিন্তু শিল্প আসেনি। সেই জমিতে এখন ‘গীতবিতান আবাসন’ ও ‘বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়’ গড়ার প্রস্তুতি নিয়েছে বর্তমান সরকার। কৃষকদের দাবি, শিল্পের জন্য নেওয়া জমিতে শিল্পই চাই। বাস্তুহারা হয়ে অন্যদের বাসস্থান করতে দিতে নারাজ তাঁরা। বিক্ষোভের জেরে কর্মসূচিতে পৌঁছতে অনেক দেরি হয় মন্ত্রীর। সেখানেও গ্রামবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁকে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, এ দিন ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে সাবিরগঞ্জে রাত্রিবাস করারও পরিকল্পনা ছিল মন্ত্রী-সহ তৃণমূল নেতাদের। কিন্তু সেই পরিকল্পনা কৃষক বিক্ষোভের পরে বাতিল করা হয়। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে। এ দিন মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত ঘোষ। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে মন্ত্রীর যাওয়ার কথা জানতে পেরে স্থানীয় শিবপুর মৌজার অনিচ্ছুক জমিহারা কৃষকেরা গ্রামে ঢোকার মুখেই মন্ত্রীর কনভয়ের পথ আটকান। কৃষকদের বিক্ষোভের কারণে দীর্ঘক্ষণ গ্রামে ঢোকার মুখে গাড়িতে বসেছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশে কালো পতাকা দেখিয়ে ‘দূর হটো’ বলে স্লোগান দেওয়া শুরু হয়। মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে বিক্ষোভকারীরা গাড়ির কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশ মৎস্যমন্ত্রীর গাড়ির সামনে থেকে বিক্ষোভকারীদের সরাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের বচসা বেধে যায়, ধস্তাধস্তিও হয়। বোলপুর থানায় ১০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়।
শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ের বেশ খানিকক্ষণ পরে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছোন মৎস্যমন্ত্রী। সেখানে শেখ সোহেল নামে এক গ্রামবাসী মন্ত্রীকে বলেন, ‘‘গত ন’বছর ধরে সাবিরগঞ্জ এলাকার রাস্তাঘাট থেকে নিকাশি ব্যবস্থা— কোনও পরিষেবা মেলেনি। আমরা উন্নয়ন চাই।’’ অনুষ্ঠান শেষে ফিরে যাওয়ার সময় মন্ত্রী বলেন, ‘‘উন্নয়নের যে দাবি ওঁরা করছেন তা সঠিক। সেই দাবি মতো আমরা পাঁচ-ছ’বছর আগে উন্নয়নের কাজ শুরু করেছিলাম। যাঁরা দিকভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছিলেন, তাঁরা নানা কারণে সেই সময়ে কাজ করতে দেয়নি। কিছু গ্রামবাসী তাঁদের ভুল বুঝতে পেরে আবার মূলস্রোতে ফিরে এসেছেন। এ বার দাবিগুলি পূরণ করা হবে।’’ এ দিন তৃণমূল থেকে চলে যাওয়া গ্রামের ৫৪ টি পরিবারকে ফের তৃণমূলে যোগ দেওয়ানো হয়।
এ দিকে শিবপুর জমিহারা কৃষক সংগ্রাম মঞ্চের আহ্বায়ক শৈলেন মিশ্র, তপন সাহা বলেন, ‘‘জমি হারানো কৃষকেরা মন্ত্রীর সঙ্গে একবার কথা বলতে চেয়েছিলেন। পুলিশ তাঁদের মন্ত্রী সঙ্গে কথা বলতে দেয়নি। অন্যায়
ভাবে ১০ জন কৃষককে গ্রেফতার করেছে। অবিলম্বে গ্রেফতার হওয়া ওই কৃষকদের মুক্তি দিতে হবে, না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে এগোতে বাধ্য হবো।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy