বিজেপি থেকে শাসকদল তৃণমূলে যোগ দেওয়া জয়প্রকাশকে ঘিরে বাঁকুড়ার জিরাবাইদ গ্রামে বিক্ষোভ দেখান দলীয় কর্মীদের একাংশ। নিজস্ব ছবি।
‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে গিয়ে এ বার বিক্ষোভের মুখে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। বিজেপি থেকে শাসকদল তৃণমূলে যোগ দেওয়া জয়প্রকাশকে ঘিরে বাঁকুড়ার জিরাবাইদ গ্রামে বিক্ষোভ দেখান দলীয় কর্মীদের একাংশ। তাঁদের হুঁশিয়ারি, স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশের গা-জোয়ারি বন্ধ না হলে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলকে হারিয়ে দেবেন তাঁরা!
দলীয় কর্মীদের একাংশের ক্ষোভের কথা স্বীকার করেছেন জয়প্রকাশ। তিনি জানিয়েছেন, ওই কর্মীদের ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করা হবে। এই ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না গেরুয়া শিবির। অন্য দিকে, ‘দিদির দূত’ হিসাবে নিজের এলাকায় গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়ও।
দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে পঞ্চায়েত ভোটের আগে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি নিয়ে গ্রামেগঞ্জে যাচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। সেখানে দলীয় নেতৃত্বের একটা বড় অংশকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। বুধবার সেই পরিস্থিতির মুখেই পড়তে হয় জয়প্রকাশকে। স্থানীয় সূত্রে খবর, কর্মসূচি সেরে ফিরে যাওয়ার সময় বেশ কয়েক জন তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরেন স্থানীয় দলীয় কর্মীদের একাংশ। নিজেদের পুরনো তৃণমূলকর্মী বলে পরিচয় দিয়ে তাঁদের দাবি, কয়েক জন স্থানীয় নেতার জন্যই গ্রামের মানুষ কোনও পরিষেবা পাচ্ছেন না। অভিযোগ, ব্লক ও জেলা নেতৃত্বকে বার বার জানিয়েও সুরাহা হয়নি। নেতৃত্ব যদি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ না করেন, তা হলে পঞ্চায়েত ভোটে দলকে হারিয়ে দিতেও পিছপা হবেন না বলে হুঁশিয়ারিও দেন তাঁরা। এক কর্মীর কথায়, ‘‘আমরা ক্ষমতা হাতে তুলে দেব, আর এঁরা (স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশ) বসে বসে খাবে, এটা চলতে পারে না। আগে দলকে জিতিয়ে দেখিয়েছি, দলীয় নেতৃত্ব ব্যবস্থা না নিলে এ বার হারিয়ে দেখাব।’’
নিজেকে তৃণমূল কর্মী পরিচয় দিয়ে বিকাশ সামন্ত বলেন, ‘‘নেত্রীর বিরুদ্ধে আমাদের কোনও ক্ষোভ নেই। কিন্তু স্থানীয় নেতৃত্ব দলকে এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন যে, রাজ্যের পাঠানো পরিষেবাই পাচ্ছেন না কেউ।’’ করুণা সিংহ নামে এক কর্মী বলেন, ‘‘দল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আমরা তৃণমূল করে আসছি। কিন্তু দলের কিছু মাতব্বর আমাদের গুরুত্ব দিচ্ছে না। জয়প্রকাশ মজুমদারকে সেই ক্ষোভের কথা জানিয়েছি।’’
দলীয় কর্মীদের হুঁশিয়ারিতে স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে পড়েন জয়প্রকাশ। তিনি বলেন, ‘‘দু-এক জন তাঁদের কথা জানিয়েছেন। আসলে দল বড় হয়েছে। তাই, ক্ষোভ থাকতেই পারে। কিন্তু দল বা নেত্রীর উপর তাঁদের কোনও ক্ষোভ নেই। স্থানীয় দু-এক জন নেতার আচরণে তাঁরা আঘাত পেয়েছেন। জেলা ও ব্লক নেতৃত্ব এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।’’
এই ঘটনায় জয়প্রকাশকে খোঁচা দেন বিজেপির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘যে দলের কাছে উনি লাথি খেয়েছিলেন, সেই দলেই যোগ দিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে সম্মান পাবেন না উনি।’’
বুধবারই ধূপগুড়ি ব্লকের বারোঘরিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্য বোরাগাড়ি এলাকায় গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন খগেশ্বর। বিধায়ককে গ্রামবাসীরা ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সুযোগসুবিধা থেকে তাঁরা বঞ্চিত। অনেকেই আবাস যোজনার বাড়ি পাননি। এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকাও পাননি অনেকে। বিক্ষোভ প্রসঙ্গে খগেশ্বর বলেন, ‘‘এখানে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি বলে শুনলাম।। আমি সঙ্গে সঙ্গেই বিদ্যুৎ দফতরের ডিভিশন ম্যানেজারকে ফোন করে বিষয়টি জানালাম। উনি শীঘ্রই এখানকার প্রধানের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করবেন।’’ পাশাপাশি বিধায়কের দাবি, ‘‘কিছু লোক মিথ্যা কথা বলছেন। আমাদের সন্দেহ, তাঁরা বিজেপি করেন। রাস্তাঘাট আর পানীয় জলের সমস্যার বিষয়টি প্রধানকে লিখিত আকারে জানাতে বলেছি। আমি দিদির দূত হিসেবে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy