দীর্ঘ চার দশক পরে রঘুনাথপুর ২ ব্লকের মঙ্গলদা-মৌতোড় পঞ্চায়েতের ক্ষমতা হারাল সিপিএম। বুধবার ওই পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছে তৃণমূল। ওই দিন পঞ্চায়েতের নতুন প্রধান হয়েছেন তৃণমূলের সুভাষ বাউরি। উপপ্রধান হয়েছেন শান্ত বাউরি।
রঘুনাথপুর ২ ব্লকে সিপিএমের বরাবরের শক্ত ঘাঁটি মঙ্গলদা-মৌতোড় পঞ্চায়েতে চলতি বিধানসভা নির্বাচনেও আশানুরূপ ফল হয়নি তৃণমূলের। কিন্তু, পাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী উমাপদ বাউরি বেশ ভাল ব্যবধানে ভোটে জিতে ফের বিধায়ক হওয়ার পরেই এই পঞ্চায়েতটির দখল নিতে তৎপরতা শুরু হয় শাসক-শিবিরে।
ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি কার্তিক বাউরির নেতৃত্বে পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনা হয় সিপিএমের প্রধান ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে। অনাস্থা আনার আগে কংগ্রেস এবং সিপিএম থেকে পঞ্চায়েত সদস্যদের নিজেদের দিকে টেনে পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা জোগাড় করে নিয়েছিল তৃণমূল। ১২ সদস্যের পঞ্চায়েতে বর্তমানে তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮। কার্তিকবাবু বলেন, ‘‘এলাকার উন্নয়ন তৃণমূলের পক্ষেই করা সম্ভব বুঝে বিরোধী দলগুলি থেকে সদস্যরা আমাদের দিকে এসেছেন। পঞ্চায়েতে সিপিএম সংখ্যালঘু হয়ে পড়ায় ওদের প্রধান, উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে নিয়ম মেনে পঞ্চায়েতে আমরা বোর্ড তৈরি করেছি।”
মৌতোড় দখলে এলেও ঝালদা ১ ব্লকের পুস্তি পঞ্চায়েতে কিছুটা ধাক্কা খেল তৃণমূল। এত দিন যৌথ ভাবে পঞ্চায়েত পরিচালনা করলেও তৃণমূলের উপপ্রধানের বিরুদ্ধে বামেদের সঙ্গে মিলে অনাস্থা এনেছে কংগ্রেস। সম্প্রতি উপপ্রধান শ্যামলী মানকির বিরুদ্ধে বিডিও-র কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন কংগ্রেস ও বামেদের ৬ জন সদস্য। বিডিও (ঝালদা ১) পূর্ণদেব মালাকার বলেন, ‘‘পুস্তি পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের বিরুদ্ধে পঞ্চায়েতের সদস্যদের একাংশ অনাস্থা জমা দিয়েছে। বিধি মেনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তলবি সভা ডাকা হবে।’’
২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুস্তিতে ১১টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছিল চারটি। তৃণমূলের ঝুলিতে যায় তিনটি। বাকি চারটি আসনে জিতেছিলেন বামফ্রন্টের প্রার্থীরা। তৃণমূলের সঙ্গে মিলে বোর্ড গড়েছিল কংগ্রেস। প্রধান হন কংগ্রেসের দূর্গাচরণ মাহাতো। উপপ্রধানের পদ পেয়েছিল তৃণমূল। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, এত দিন তৃণমূলকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্চায়েত পরিচালনা করলেও এ বার বিধানসভা নির্বাচনের আগে বামেদের সঙ্গে সঝোতা হয় কংগ্রেসের। ভোটের প্রচার-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে স্থানীয় স্তরেও বাম-কংগ্রেস সমঝোতা চোখে পড়েছে। পুস্তি এলাকাতেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। বিশেষ করে যে-ভাবে শাসকদল ঝালদা-সহ পুরুলিয়া জেলার অন্যত্র কংগ্রসেরে ঘর ভাঙছে, সেই প্রক্ষিতে বিরোধী দুই দলের সমঝোতা আরও জোর পাচ্ছে। পুস্তি পঞ্চায়েতে তৃণমূলের উপপ্রধানকে সরিয়ে দিতে তাই বামেদের সাহায্যই নিয়েছেন এলাকার কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে প্রকাশ্যে অন্তত অনাস্থা আনার পিছনে এই যুক্তি মানতে চায়নি কংগ্রেস। দলের পুস্তি অঞ্চলের সভাপতি নীলাম্বর কইরির দাবি, ‘‘তৃণমূলের উপপ্রধান পঞ্চায়েত পরিচালনার কাজে সর্বতো ভাবে সাহায্য করছেন না। এলাকার উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে বলেই তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy