বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শোভাযাত্রা। নিজস্ব চিত্র
বিজেপি-র পর এ বার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কর্মসূচি পালন করল তৃণমূল। রবিবার রাখিবন্ধন উপলক্ষে রতনপল্লি থেকে শুরু হয়ে তৃণমূলের শোভাযাত্রা উপাসনা গৃহ হয়ে পৌঁছয় শ্যামবাটিতে। তার শুরুতেই ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এবং বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহার ছবি সম্বলিত ব্যানার। এই শোভাযাত্রা ঘিরেই নতুন করে বিতর্ক। প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীদের একাংশ। তবে তাঁরা বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীরও কড়া সমালোচনা করেছেন।
রাখিবন্ধন উপলক্ষে রবিবার বিশ্বভারতী শোভাযাত্রা করে তৃণমূল। তাতে যোগ দেন পড়ুয়ারা, তৃণমূলের নেতা-নেত্রী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। আর এই শোভাযাত্রা ঘিরেই উঠছে প্রশ্ন।
আক্ষেপের সুরেই প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, ‘‘এখানে রাজনীতি ছিল না। এখন সকলে আসছে। আগে বিজেপি ঘুরে গিয়েছে। এখন তৃণমূল আসছে। এর পর অন্য কোনও দল আসবে। এ নিয়ে আর কী করা যাবে! এটাই আজকালকার নিয়ম হয়ে গিয়েছে।’’ আর এক প্রাক্তনী নুরুল হকের কথায়, ‘‘বিশ্বভারতী চিরকাল রাজনীতিমুক্ত। কিন্তু বর্তমান উপাচার্যের আমলে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। উপাচার্য বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন। এটা থেকে ওঁর শিক্ষা নেওয়া উচিত।’’ একই সুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী অপর্ণা দাস মহাপাত্রের গলাতেও। তাঁর মতে, ‘‘রবীন্দ্রনাথ বিশ্বভারতীকে রাজনীতির আখড়া হতে দেননি। ওঁর কাছে রাজনীতির বড় বড় পুরুষ দেখা করতে এসেছেন। এখন একটা ক্রিয়া হলে প্রতিক্রিয়া হবেই। উপাচার্য যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক সভা করেন তা হলে তার প্রতিক্রিয়া হবে।’’
এই শোভাযাত্রার অন্যতম আয়োজক তথা তৃণমূল নেতা চন্দন মণ্ডলের ব্যাখ্যা ‘‘আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডল এবং চন্দ্রনাথ সিংহের মুখকে সামনে রেখে কোভিড বিধি মেনে মানবতার বার্তা দিয়েছি। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজনীতির আখড়া বানিয়ে দিয়েছেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রাজনৈতিক পতাকা নিয়ে কোনও আন্দোলন করিনি। গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ২১৩টি আসন পেয়েছে। এখনও কতগুলি আসনে উপনির্বাচন হবে। এই ফল দেখেই বোঝা যায়, তৃণমূল মানেই মানবতার বাঁধন।’’
গত ১৮ অগাস্ট বিশ্বভারতীতে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের অনুষ্ঠান নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। বিশ্বভারতীর কাজকর্মে বিজেপি-কে জড়ানোর অভিযোগ ওঠে উপাচার্যের বিরুদ্ধে। তার প্রেক্ষিতে অনুব্রত পাল্টা হুঙ্কার দেন, বিশ্বভারতীতে ঢুকে দলীয় কর্মসূচি করার। ঘটনাচক্রে তার কয়েক দিনের মাথায় রাখিবন্ধন উপলক্ষে রবিবার বিশ্বভারতী চত্বরে শোভাযাত্রা করল তৃণমূল। এ নিয়ে অনুব্রতর বক্তব্য, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখিবন্ধন উৎসবের সৃষ্টি করেছিলেন। আমাদের কর্মীরা তাঁকে সন্মান জানাচ্ছে। তাঁর পথ অনুসরণ করছে। বিজেপি-র মতো অহেতুক বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশ করেছে না। কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের মতো ‘রবীন্দ্রনাথকে কালো’ বলছে না। ঠাকুরের পরিবারের বিরুদ্ধেও ভুল অভিযোগ করেছে না। আমরা বাংলার লোক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে জানি। ওঁকে পুজো করি। বিজেপি-র মতো উড়ে এসে জুড়ে বসিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy