দূরত্ব বিধি উড়িয়ে বাঁকুড়ার চকবাজারে। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
রাজ্যের ‘সার্বিক লকডাউন’-এর মধ্যেই এ বার বাঁকুড়া জেলার তিন পুরশহর বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর ও সোনামুখীতে তিন দিনের ‘লকডাউন’-এর সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন। শুক্রবার জেলা প্রশাসনের তরফে এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, আজ, শনিবার পূর্ণ ‘লকডাউন’ গোটা রাজ্যে। রবিবার বিকেল ৫টা থেকে শুরু হচ্ছে ওই তিন পুর-শহরের ‘লকডাউন’। চলবে সোম, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত। মাঝে বুধবার রাজ্য প্রশাসনের এক দিনের সার্বিক লকডাউন। ফলে, বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত টানা ‘লকডাউন’ চলবে তিন পুর-শহরে। তবে জেলা প্রশাসনের তরফে ঘোষিত ‘লকডাউন’-এর দিনগুলিতে সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত মুদির দোকান, আনাজের বাজার, মাছ, মাংস, ডিম ও দুধের দোকান খোলা থাকবে। ওষুধের দোকান অবশ্য ‘লকডাউন’-এর আওতায় পড়ছে না।
বাঁকুড়ার জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ শুক্রবার বিকেলে বলেন, “মুদির দোকান, আনাজের বাজার, মাছ, মাংস, ডিম, দুধের দোকান ‘লকডাউন’-এর দিনগুলিতে কয়েক ঘণ্টার জন্য খোলা থাকবে। ফলে, মানুষ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটার সুযোগ পাবেন।”
তবে আজ, শনিবার ‘সার্বিক লকডাউন’-এর পরে, তিন পুর-শহরের মানুষকে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় না দিয়ে রবিবার বিকেল থেকে ফের ‘লকডাউন’ করা নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করছেন। বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথা চিকিৎসক সুভাষ সরকার বলেন, “রবিবার ছুটির দিন হওয়ায় বহু দোকানপাট বন্ধ থাকে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন ‘লকডাউন’ করার আগে মানুষকে প্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটার জন্য এক দিন অন্তত সুযোগ দিলে সবার সুবিধা হত।” যদিও রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরা বলেন, “প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের কোনও রকম সমস্যা হওয়ার কথাই নয়। কেনাকাটা করার জন্য দোকান কয়েক ঘণ্টা খোলা থাকবে।”
মানুষজন অবশ্য শনিবার ‘লকডাউন’-র জন্য শুক্রবার সকাল থেকেই বাজারে ভিড় করেছিলেন। এ দিন সকাল থেকেই বাঁকুড়া শহরের চকবাজার এলাকার বিভিন্ন দোকান, মুদিখানা, সমবায় বিপণি, আনাজের বাজারে ভিড় দেখা যায়। তেল-সাবান থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ফর্দ তৈরি করে অনেকে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন। সমবায় বিপণিতে কেনাকাটা করতে আসা বধূ ববিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “লকডাউনের আগে কেনাকাটা সেরে ফেলাই ভাল। তাতে নিশ্চিত থাকতে পারব। যে সব জিনিস একেবারেই বাড়ন্ত, সে সব যেমন কিনছি, বাড়তি জিনিসও কিনে রাখছি। কে জানে, এমন ‘লকডাউন’ কত দিন চলবে।” চকবাজারের মাছ বিক্রেতা বিপত্তারণ ধীবর বলেন, “এ দিন বেশিরভাগ ক্রেতাই কয়েকদিনের মাছ এক সঙ্গে কিনেছেন।’’ এ দিকে, বৃহস্পতিবারের ‘লকডাউন’ এর জেরে মালপত্রের জোগানে সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বাঁকুড়া শহরের ব্যবসায়ীদের একাংশ। চকবাজারের মুদি ব্যবসায়ী তারাপদ দত্ত বলেন, “বৃহস্পতিবার ‘লকডাউন’ গিয়েছে। তার আগে বুধবার প্রচুর পরিমাণে কেনাকাটা করেছেন ক্রেতারা। স্বাভাবিক ভাবেই মালপত্রের জোগান কিছুটা কম। ‘লকডাউন’-এর পরে বাজার খুলতেই সেই একই ভিড়। ফলে, নতুন মালপত্র না আসায় জোগানে টান পড়েছে।’’ একই ছবি ছিল বিষ্ণুপুর ও
খাতড়া বাজারেও।
তিন পুর-শহরে ‘লকডাউন’ করায় প্রশ্ন জেলার অন্যত্র পরিবহণ সচল থাকবে তো? প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। জেলাশাসক বলেন, “আমরা চাই ‘লকডাউন’ চলাকালীন যাত্রিবাহী বাসগুলি শহরের বাইরে দিয়ে যাওয়া-আসা করুক। বিশেষ বা জরুরি কারণ ছাড়া, জেলার তিনটি পুর-শহরে গাড়ি চলাচল বা যাতায়াত বন্ধ থাকবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy